Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাদা চাদরে সঙ্গম করিয়ে নববধূর কুমারীত্বের পরীক্ষা আর নয়

প্রাচীন প্রথা বন্ধের নির্দেশ ভারতের মহারাষ্ট্র সরকারের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

চাদরটা সাদা হতেই পারে, প্রথাটা কিন্তু নিকষ কালো! সাদা চাদরে কুমারীত্বের চিহ্ন দেখাতে না পারলে বৈধই হবে না বিয়ে। অবশেষে নক্ক্যরজনক এই প্রথায় রাশ টানল ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার ৷ 

মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনও মহিলা কুমারী কিনা জানতে চাওয়া এবং তার জন্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা তাঁকে যৌন হেনস্থা করার সামিল । এমনই মনে করে মহারাষ্ট্র সরকার। আর এখন থেকে এ রাজ্য বিষয়টিকে অপরাধ বলেই ধরা হবে। হবু স্ত্রীয়ের পাশাপাশি সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীয়ের ক্ষেত্রে এই নতুন নিয়ম একই ভাবে কার্যকর হবে।
রাজ্যের বেশ কয়েকটি জনজাতির মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে এ ধরনের প্রথা চলে আসছে । সেগুলি বন্ধ করতেই পদক্ষেপ করল দেবেন্দ্র ফড়নবিশ সরকার। মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী রঞ্জিত পাতিল বুধবার কয়েকটি সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে মন্ত্রী জানান, কোনও মহিলা কুমারী কিনা জানতে কোনও রকম পরীক্ষা করা যাবে না। পরীক্ষা করলে তা অপরাধ বলেই চিহ্নিত হবে। খুব তাড়াতাড়ি এই মর্মে নির্দেশিকাও জারি করা হবে ৷
মহারাষ্ট্রে কঞ্জরভাট নামে একটি জনজাতি রয়েছে ৷ আর সেই সমাজে প্রায় ৪০০ বছর ধরে চলে আসছে মহিলাদের কুমারীত্ব প্রমাণ করার রীতি। স্বামী-স্ত্রী না চাইলেও পরীক্ষা হবেই। পঞ্চায়েত মাতব্বরদের নিদান অগ্রাহ্য করার উপায় কারওর নেই। গত বছর এই রীতির বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন কঞ্জরভাট জনজাতিরই এক দম্পতি বিবেক-ঐশ্বর্যা। ছাই চাপা আগুনের মতোই সমাজের তরুণ প্রজন্ম প্রতিবাদ চালিয়েছিল অলক্ষ্যে।
সেই প্রতিবাদই এবার মান্যতা পেল। শতাব্দী প্রাচীন অভিশাপ থেকে মুক্তি পেল কঞ্জরভাট নারীরা। তবে এই কুমারীত্বের প্রথা আসলে কী ? বিয়ের রাতে বধূকে প্রমাণ দিতে হবে যে তাঁর যোনি অক্ষত। এই প্রথা যেমন নিন্দনীয় তেমনিই নিন্দনীয় এই প্রথার নিয়মখানিও ৷ কী সেই নিয়ম ?
কী ভাবে দিতে হবে প্রমাণ? সাদা চাদরের উপরে স্বামীর সঙ্গে যৌন সঙ্গম করে। কাদের কাছে এবং কী ভাবে প্রমাণ দিতে হবে? সঙ্গমের আগে সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় মুখোমুখি হতে হবে সম্প্রদায়ের কোনও মহিলার। আর সঙ্গমের পরের সকালে দাগ লাগা সাদা চাদর দেখাতে হবে রাতভর দরজার বাইরে অপেক্ষায় থাকা মোড়ল-মাতব্বরদের।
বিয়ের আগে অন্য কারও সঙ্গে যৌন সঙ্গম করেননি নারী— সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতেই সতীত্ব পরীক্ষার এই প্রথা। পরীক্ষায় পাশ না করলে বিয়ে অবৈধ। অর্থাত্ সঙ্গমের পরের সকালে চাদর দেখে যদি মোড়ল-মাতব্বরদের মনে হয় যে, নববধূর সতীচ্ছদ আগেই কখনও ছিন্ন হয়েছিল, তা হলে বিয়ে তো মান্যতা পেলই না, সর্বসমক্ষে নববধূর জন্য অপেক্ষায় রইল চরম লাঞ্ছনা।



 

Show all comments
  • অজয় বসু ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:২৩ এএম says : 2
    আনকোরা র কিছু উপকারিতা আছে পরবর্তী সুখ শান্তিময় জীবন যাপনের জন্য। মানুষের ইতিহাস লক্ষ লক্ষ বছরের আর আমাদের পূর্ব পুরুষেরা অনেক বিবেচনা করে এসব সামাজিক প্রথআ প্রচলন করেছিলেন। আমরা গত কয়েক দশকে এত সেয়ানা হয়ে গিয়েছি বিদেশের অন্ধ অণুকরণ করতে গিয়ে যে.... অন্যের ব্যবহৃত under wear use এ আমাদের কোনো আপত্তি নেই। দোকানদার তো চালাবার চেষ্টা করবেই।
    Total Reply(0) Reply
  • Pranay Kansabanik ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:২৩ এএম says : 1
    কারন এখন ফুলশয্যার রাতে 99.99% চাদর পরিস্কার থাকে
    Total Reply(0) Reply
  • Tania Sen ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:২৪ এএম says : 1
    Somosto nongra niyom. Ekta meyer sotityo porikhha korte gele tar swamir o porikhha nite hobe. Biyer age kono meye tar virginity nosto korle seta ekta cheler sathei korbe, r tar mane sei cheletir virginity o nosto hochhe. Tai sotityer porikhha dite hole dujon kei dite hobe, sudhu meyeti keno debe?? Egulo r kichui na sob oshikhhito borbor gramyo Matobbor der bikrito kaamer fol. Sob osobhyo Bhonder dol.
    Total Reply(0) Reply
  • Priya ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:২৪ এএম says : 0
    এই সব নোংরামি বন্ধ হোক
    Total Reply(0) Reply
  • শান্তনু ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:২৫ এএম says : 0
    এসব আবার কোথায় হয়??যত সব মধ্যযুগিও বর্বর কাজ কর্ম.
    Total Reply(0) Reply
  • তাফাজ্জুল হোসাইন ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:২৫ এএম says : 0
    চমৎকার।এভাবে পুরুষেরও কুমারিত পরীক্ষা করা নিয়ম চালু হোক। তাহলে ধর্ষন বদমাশি জেনা ব্যাভিচার ইত্যাদি কমে যাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Hira Manik ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:২৬ এএম says : 0
    নিলে মেয়ে এবং ছেলে দু জনেরই পরিক্ষা নেওয়া উচিৎ।
    Total Reply(0) Reply
  • Anisur Rahaman ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:২৭ এএম says : 0
    মহারাষ্ট্র সরকারকে ধন্যবাদ। বিয়ের আগে কুমারিত্ব পরীক্ষা শুধু যৌন হয়রানি নয় এটা যৌন নির্যাতন। এসমস্ত কুসংস্কার যেখানেই হোক, ধর্মীয় বিধানে না থাকলে সেটা প্রতিরোধ করতে হবে। আর ধর্মীয় বিধানে যদি কোন বিষয় সেনসেটিভ হয় সেটা ধর্মীয় বিশেষজ্ঞগণ সঠিক সমাধান করে মানুষের কাছে উপস্থাপন করবেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Ismam Ahmed ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:২৭ এএম says : 0
    অবাক হবার কিছু নাই এসব ভারতের জন্য নতুন কিছু নহে।
    Total Reply(0) Reply
  • Ara Akram ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:২৭ এএম says : 0
    এই রকম ভাবে পরীক্ষা করা উচিত না, তবে বিয়ের পর প্রমান করতে পারলে সেটা ডিভোর্সের গ্রাউন্ড দেওয়া উচিত.
    Total Reply(0) Reply
  • Sojan Ahamed Bsl ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:২৭ এএম says : 0
    মহারাষ্ট্রের পাগলের সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে, বাঙালি সাবধান।
    Total Reply(0) Reply
  • Kawsar Shah ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:২৮ এএম says : 0
    বিরাট গর্হিত কাজ! এটা কোনমতেই শরিয়ত অনুমদিত নয়!! জেনা ব্যভিচার বৃদ্ধির সহজ তরিকা এটা!! সমাজ বিধ্বংসী এই কাজ কঠোর হস্তে দমন করা হোক!!!
    Total Reply(0) Reply
  • Amil Uddin Ahmed ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:২৮ এএম says : 0
    সবচেয়ে উত্তম হলো কুমারীত্ব হারানো নারী যেন কুমারত্ব না হারানো পুরুষের কাছে বিয়ের বায়না না ধরে
    Total Reply(0) Reply
  • Mamun Farhan ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:২৯ এএম says : 0
    আর মেয়েরা যদি বিয়ের আগে ইচ্ছে করে যৌনমিলন করে তাহলে তা হবে কি?
    Total Reply(0) Reply
  • GM Halim ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১১:১৭ পিএম says : 1
    আইনটি যথাযথ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ