মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মাত্র মিনিট পাঁচেক। তাতেই দিব্যি ‘ফ্রস্টবিটেন’ হয়ে যেতে পারেন আপনি। তীব্র ঠান্ডায় এমনটাই অবস্থা শিকাগোসহ আমেরিকার তামাম মধ্যপশ্চিম এলাকার। শীতল হাওয়ার এমনই জোর যে ডাকোতা এবং নর্দান মিনেসোটার মতো এলাকাতে তা মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁইছুঁই। নর্দান গ্রেট লেক এলাকাতে তো আবার অবস্থা মাইনাস ৬৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো। এ হেন শৈত্য ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে মিনিয়াপোলিস, মিলওয়াউকি, শিকাগো ও ডেট্রয়টেও। প্রশাসন জানিয়েছে, প্রতিকূল আবহাওয়ার জেরে ইতিমধ্যেই মার্কিন মুলুকে মৃতের সংখ্যা ২১ ছাড়িয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যতই গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ে রসিকতা করুন না কেন, একটু উষ্ণতার জন্য আক্ষরিক অর্থেই হা-পিত্যেস করে বসে রয়েছে মিডওয়েস্ট এলাকা। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সুমেরু এলাকা থেকে আগত পোলার ভর্টেক্সের জেরেই তাপমাত্রা এ রকম নিম্নগামী। শুধু মিডওয়েস্ট নয়, এর জেরে বরফ পড়তে পারে দক্ষিণে আলাবামা এবং জর্জিয়াতেও। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মধ্যপশ্চিম এলাকা। ইলিনয়ের গভর্নর জে বি প্রিটজকের বলেছেন, ‘এই আসন্ন ঝড়ের জেরে প্রদেশের বাসিন্দাদের ভালো থাকা প্রশ্নের মুখে, তবে আমরা সব রকম চেষ্টা করব আমাদের বাসিন্দাদের নিরাপদ রাখতে।’
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলের অঙ্গরাজ্য শিকাগোতে তাপমাত্রা এখন মাইনাস ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। যা বর্তমানে বরফের মহাদেশখ্যাত অ্যান্টার্কটিকাকেও ছাড়িয়ে গেছে। এ ছাড়াও ব্যাপকভাবে বরফ পড়াসহ তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। তুষারঝড় পোলার ভার্টেক্স এতো ভয়াবহ আঘাত হেনেছে যে, ফুটন্ত গরম পানিও বরফ হয়ে যাচ্ছে। ঘরের ভেতরে দেয়াল, দরজা বা বিভিন্ন আসবাবপত্রেও বরফ জমে পড়ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অধিবাসীদের পোস্ট করা বেশ কয়েকটি ভিডিওতে এমনই দেখা যাচ্ছে। আর তাছাড়া মানুষের চলাফেরায়তো কঠিন বিপর্যয় নেমেছেই। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, শিকাগোর তাপমাত্রা এখন মাইনাস ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। যা বর্তমানে বরফের মহাদেশ অ্যান্টার্কটিকাকেও ছাড়িয়ে গেছে। বরফের দিক দিয়েও অনেকটা এগিয়ে যাচ্ছে মিডওয়েস্ট। শিকাগোর অধিবাসীরা
ঘরে আবদ্ধ হয়ে পড়েছেন। তারা বাইরে বের হওয়ার সাহসই করতে পারছেন না। এমনকি ওই অঞ্চলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে ৭০০০ হাজারেরও বেশি ফ্লাইট।
ছবিতে দেখা গেছে, শিকাগো নদী এবং মিশিগান লেকের পানিতেও বরফের আবরণ পড়ে গেছে। তাতে নৌযানগুলো বরফ ঠেলে ঠেলে এগোচ্ছে। তাছাড়া অন্যান্য জায়গায়তো বরফের প্রায় পহাড়াই হয়ে গেছে। প্রশাসনের তরফে বাসিন্দাদের বার বার বলা হচ্ছে, বাড়ি থেকে না বেরোতে। বহু স্কুল, কলেজ ছুটি দিয়ে দেয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ১০টি প্রদেশের পোস্টাল পরিষেবাও। কিছু প্রশাসনিক পরিষেবাও বন্ধ থাকছে। হাজার হাজার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হয়েছে শিকাগোগামী বহু ট্রেনও। দেখেশুনে অনেকেরই ‘দ্য ডে আফটার টুমরো’ ছবিটির কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। সেখানেও উত্তর গোলার্ধ জুড়ে এরকমই একটি সুপারস্টর্ম তৈরি হয়েছিল যা তিনটি আলাদা আলাদা ঝড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়ে বরফে মুড়ে ফেলে পৃথিবীকে। সে রকমটা এখনও না হলেও যা হচ্ছে তাতে কাঁপন ধরে যাচ্ছে মার্কিন বাসিন্দাদের। রাস্তার ধারে ধারে গৃহহীনদের জন্য শেল্টার হোম, উষ্ণ জামাকাপড়ের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে প্রশাসনকে। তার মাঝেই অবশ্য জীবনযাত্রা যতটা সম্ভব স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছেন মানুষজন। এখন কী হয়, তার জন্য সময়ের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া উপায় নেই। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।