পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে খেলাপি ঋণ কমানোসহ কমপ্লায়েন্স প্রতিষ্ঠা করতে বলেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ‘বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি’র অগ্রগতি বিষয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
বৈঠকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শামস-উল ইসলাম বলেন, এটা বার্ষিক পারফর্মেন্স মিটিং। বৈঠকে খেলাপি ঋণসহ সব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। খেলপি ঋণ কমানোসহ আর্থিক খাতে কামপ্লায়েন্স প্রতিষ্ঠা করতে বলা হয়ছে।
আর্থিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল ব্যাংককে খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে তিন হাজার ৮০ কোটি টাকা। আর অবলোপনকৃত ঋণ থেকে আদায় করতে হবে আরও ৫৫৫ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংককে মোট খেলাপি ঋণ থেকে আদায় করতে হবে তিন হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। কিন্ত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে ব্যাংকগুলো আদায় করেছে মাত্র ৪৩৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
চলতি অর্থবছরে ৯০০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রথম তিন মাসে সোনালী ব্যাংক আদায় করেছে ২০৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা (২৩ দশমিক ১ শতাংশ); বার্ষিক ৪৫০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে জনতা ব্যাংক আদায় করেছে ৫৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা (১২ দশমিক ৭৫ শতাংশ); বার্ষিক ৫০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অগ্রণী ব্যাংক আদায় করেছে ৬৫ কোটি ১ লাখ টাকা (১৩ শতাংশ); বার্ষিক ১০০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রূপালী ব্যাংক আদায় করেছে ৪৭ কোটি ১১ লাখ টাকা (৪ দশমিক ৭১ শতাংশ); বার্ষিক ১৪০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বেসিক ব্যাংক আদায় করেছে ২২ কোটি ৮১ লাখ টাকা (১৬ দশমিক ২ শতাংশ) এবং বার্ষিক ৯০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিডিবিএল ব্যাংক আদায় করেছে ৩৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা (৩৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ)।
অন্যদিকে অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রেও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক এগিয়ে আছে বিডিবিএল ব্যাংক। বার্ষিক ৩০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিডিবিএল ব্যাংক চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে এ খাতে আদায় করেছে ১৬ কোটি টাকা। এটি মোট লক্ষ্যমাত্রার ৫৩ দশমিক ৩ শতাংশ। আর এ খাতে ১০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আলোচ্য সময়ে কোনো অর্থই আদায় করতে পারেনি বেসিক ব্যাংক। অন্যান্য ব্যাংকের মধ্যে ২০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে সোনালী ব্যাংক ৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা (৪ দশমিক ২২ শতাংশ); ১৩০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে জনতা ব্যাংক ৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা (৪ দশমিক ৪ শতাংশ); ১৫০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে অগ্রণী ব্যাংক ২৫ কোটি ১২ লাখ টাকা (১৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ) এবং ৩৫ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রূপালী ব্যাংক মাত্র ৯ লাখ টাকা (দশমিক ২৫ শতাংশ) আদায় করেছে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক (সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল) ব্যাংকগুলোর এক লাখ ৫৩ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকার মধ্যে ৪৮ হাজার ৮০ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে গেছে, যা মোট ঋণের ৩১ শতাংশের বেশি। জুন শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ৪২ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২৮ দশমিক ২৪ শতাংশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।