Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

এবারো রূপালী ব্যাংককে বন্ড সুবিধা দিচ্ছে না অর্থ মন্ত্রণালয়

প্রকাশের সময় : ২৪ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সোহাগ খান : বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী রূপালী ব্যাংকের চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত মূলধন ঘাটতি ছিল এক হাজার ৫২ কোটি টাকা। আর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৩৬০ কোটি টাকা, যা গত ডিসেম্বরে ছিল ১৫৪৯ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে মূলধন ঘাটতি ১৬০০ কোটি ছাড়ালেও মাত্র ৫০০ কোটি টাকা সুদবিহীন সাব-অর্ডিনেট বন্ড সহায়তা চেয়ে অর্থ-মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ব্যাংকটি উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেবাশীষ চক্রবর্তী। সেই আবেদন গৃহীত হচ্ছে না বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক উপ-সচিব।
রাষ্ট্রায়ত্ত এই ব্যাংকটির প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা মূলধন ঘাটতি থাকলেও ২০১৫ সালের মতো এবারও মূলধন ঘাটতি পূরণে মাত্র ৫০০ কোটি টাকা বন্ড সুবিধা চেয়েছেন অর্থ-মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কাছে। যা হাস্যকর বলে মন্তব্য করছেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক অতিরিক্ত সচিব। এর আগেও তারা দুই বার সাব-অর্ডিন্ডেট বন্ড চেয়েছিল। তাদের আবেদন নাকচ করেছিল সংশ্লিষ্ট বিভাগ। এবারও তারা কোনো সহায়তা পাবেন না।
ব্যাংকের পক্ষ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের কাছে চিঠি লিখে বলা হয়েছে, এর আগে তারা দুইবার ৫০০ কোটি টাকা বন্ড চেয়েছিল, কিন্তু তা দেয়া হয়নি। এখন আন্তর্জাতিক মূলধন মান ব্যাসেল-৩ মেটানোর জন্য অবিলম্বে এই ৫০০ কোটি টাকার বন্ড দেয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এ কর্মকর্তা বলেন, এবারও রূপালী ব্যাংককে কোনো সহায়তা দেয়া হবে না। কারণ ব্যাংকটির নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইতিমধ্যেই ব্যাংকটির বিনিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানে মন্ত্রণালয়। তাহলে মন্ত্রণালয় কেন মূলধন ঘাটতি পূরণে বন্ড দিবে। তারা খেলাপি ঋণ তুলে মূলধন ঘাটতি পূরণ করুক। বন্ডের টাকা জনগণের উপকারে না আসলে কেন দেয়া হবে? তারপরেও সামনে মিটিং-এ আলোচনা হবে। যদি এমডি বিনিয়োগ সচল রাখতে চায় তবেই অর্থ পার হতে পারে।
ব্যাংকিং বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সচিবের কাছে পাঠানো আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘২০১৫ সালের ২ জুন খলিলুর রহমান চৌধুরী এফসিএ, এবং ২০১৬ সালের ১৫ মার্চেও তৎকালীন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক খলিলুর রহমান ৫০০ কোটি টাকা বন্ড চেয়ে দুটি চিঠি পাঠান। এতে উল্লেখ করা হয়, ব্যাসেল-৩ গাইডলাইন অনুসারে রূপালী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে টায়ার-২ তে ৫০০ কোটি টাকার ‘রূপালী ব্যাংক লিমিটেড সাব-অর্ডিনেটেড বন্ড’ ইস্যু অনুমোদন প্রদানের জন্য আবেদন করা হয়। সে লক্ষ্যে আপনার নির্দেশনায় অতিরিক্ত সচিবের সভাপতিত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু তাতে ব্যাংকটির আবেদনে সাড়া দেয়নি গোকুল চাদ দাসের কমিটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার উল্লেখ করে চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মূলধন সংরক্ষণে মার্চ ২০১৫ থেকে ব্যাসেল-৩ কার্যকর করেছে। মার্চ ২০১৫ সাল থেকে শুরু হয়েছে ডিসেম্বর ২০১৯ সালে ব্যাসেল-৩ গাইডলাইনের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হবে। ব্যাসেল-৩ অনুযায়ী ন্যূনতম মূলধন ১০ শতাংশের স্থলে পর্যায়ক্রমে বাড়িয়ে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং লেভেরাজ রেশিও ৩ শতাংশ সংরক্ষণের নির্দেশনা প্রদান করেছে। উল্লেখ্য, মার্চ ২০১৬ ভিত্তিতে মূলধন সংরক্ষণের হার ১০ দশমিক ৬২৫ শতাংশের বিপরীতে রূপালী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ছিল ৫৪৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। ’
রূপালী ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে এই বন্ড ইস্যু বিষয়ে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে ২০১৫ সালের ২৭ মে অনুষ্ঠিত ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকার ৭ বছর মেয়াদি ফোটিং রেইট (সুদের হার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার আলোকে নির্ধারিত হবে) এ রূপালী ব্যাংক লিমিটেড সাব-অর্ডিনেটেড বন্ড ইস্যুর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এমতাবস্থায় ব্যাসেল-৩ গাইডলাইন অনুসারে রূপালী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে টায়ার-২তে ৫০০ কোটি টাকার রূপালী ব্যাংক লিমিটেড সাব-অর্ডিনেটেড বন্ড ইস্যু করার জন্য আপনাদের সবিনয় অনুরোধ করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এবারো রূপালী ব্যাংককে বন্ড সুবিধা দিচ্ছে না অর্থ মন্ত্রণালয়
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ