মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলীয় নেতা এবং স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট জুয়ান গুয়াইদোকে দেশত্যাগের ওপর পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটির সুপ্রিম ট্রাইব্যুনাল অব জাস্টিস। একইসঙ্গে তার ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়েছে। মঙ্গলবার দেশটির সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া এক আদেশের বরাতে করা প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে লন্ডন ভিত্তিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনপুষ্ট ৩৫ বছরের জুয়ান গুইদো’র বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক স্থিতিশীলতায় গুরুতর আঘাত হানার অভিযোগ আনা হয়েছে। হাই কোর্টের প্রেসিডেন্ট মাইকেল মোরেনো বলেন, জুয়ান গুইদো’র রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠার কারণ সম্পর্কে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার দেশত্যাগ নিষিদ্ধ করা হলো।
এর আগে সোমবার ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পিডিভিএসএ’র বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এবং তার মিত্ররা এখন থেকে আর দেশটির জনগণের সম্পদ হরণ করতে পারবে না।’
নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কাজে সহযোগিতার জন্য দেশটির সেনাবাহিনীর প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
ভেনেজুয়েলার বৈদেশিক আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত্ব তেল কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞাকে এ যাবতকালের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন নিষেধাজ্ঞা বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, তেল খাতে ভেনেজুয়েলার আয় করা অর্থের অপচয় রোধকল্পে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পিডিভিএসএ’র বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরদিনই জুয়ান গুইদো’র দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো।
এদিকে যে কোনও পরিস্থিতিতে ভেনেজুয়েলার সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক বিরোধী নেতাকে দেশটির প্রেসিডেন্টের স্বীকৃতির পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেনাদের এ নির্দেশ দেন তিনি। নিজের শক্তি প্রদর্শনে রবিবার বেশ কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি পরিদর্শন করেন ৫৬ বছরের এই বাম রাজনীতিক। এ সময় তিনি আসন্ন সামরিক মহড়ার প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করেন। মাদুরো বলেন, নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক মহড়ার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।
বিভিন্ন ঘাঁটি পরিদর্শনকালে তিনি সামরিক বাহিনীর ব্যবহৃত রুশ হার্ডওয়্যার, অ্যান্টি এয়ারক্রাফট ফ্ল্যাক, পার্বত্য এলাকায় ট্যাংকের মহড়ার মতো নানা সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষণ করেন।
অন্যদিকে নিজেকে ‘অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট’ দাবি করা ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা জুয়ান গুইদো সামরিক বাহিনীর সদস্যদের তার সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মাদুরো সরকারের পক্ষত্যাগ করলে তাদের ক্ষমা করে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন মদতপুষ্ট জুয়ান গুইদো।
সরকারবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভের ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি নিজেকে ভেনেজুয়েলার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন দেশটির বিরোধী নেতা জুয়ান গুইদো। কয়েক মিনিটের মাথায় তাকে ‘স্বীকৃতি’ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘ভেনেজুয়েলার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্ট জুয়ান গুইদোকে আমি দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসাবে স্বীকৃতি দিচ্ছি।’ কিন্তু রবিবার বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি পরিদর্শন করে নিজের প্রতি সামরিক বাহিনীর আনুগত্যের জানান দিলেন নিকোলাস মাদুরো। বিশ্লেষকরা মনে করেন, দেশটির সামরিক বাহিনী যেদিকে দাঁড়াবে, ক্ষমতার পাল্লা সেদিকেই হেলে পড়বে। ফলে এদিক থেকে এগিয়ে আছেন মাদুরো।
এখন পর্যন্ত সামরিক বাহিনীর সমর্থন না পেলেও যুক্তরাষ্ট্র এবং দেশটির বলয়ে থাকা একাধিক প্রভাবশালী রাষ্ট্রের সমর্থন পেয়েছেন ভেনেজুয়েলার স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট জুয়ান গুইদো। যুক্তরাষ্ট্রের দুই মিত্র ইসরায়েল ও অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে তার প্রতি সমর্থন জানানো হয়েছে। তবে আমেরিকার বাইরে রাশিয়া, তুরস্ক ও চীনের মতো দেশগুলো মাদুরোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। জুয়ান গুইদোর জন্য এটা স্পষ্টতই অস্বস্তিকর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।