মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের রাজনৈতিক আবহাওয়ার পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। ২০১৪ সালে হিন্দুত্বের ধোয়া তুলে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়লাভ করেছিল। কিন্তু সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পার্লামেন্টারি ও রাজ্য নির্বাচনে উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ইত্যাদিতে বিজেপির প্রার্থীরা শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছেন। হিন্দুত্বের আওয়াজ এসব জায়গায় কোনো প্রভাব বিস্তার আর করতে পারেনি। অর্থ পাচার, রাফাল বিমান ক্রয় সহ একের পর এক দুর্নীতি প্রকাশ পেতে থাকলে সেগুলো ধামাচাপা দেয়ার জন্য গো-হত্যা, রাম-মন্দির নির্মাণ নিয়ে বিতর্ক তুলে মানুষের মন ভোলানোর প্রচেষ্টা এখন আর কাজে লাগছে না।
গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়েই নরেন্দ্র মোদি আম্বানি, টাটা ইত্যাদি পুঁজিপতিদের বিশেষ সুবিধা দেয়া শুরু করেন। মোটর কারখানার জন্য টাটাকে তিনি নামমাত্র মূল্যে শত শত একর জমি দেন, এর জন্য তিনি কৃষকদের তাদের জমি থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করেছিলেন। এ নিয়ে তখন আন্দোলনও হয়েছিল। কিন্তু হিন্দুত্বের ধোয়ায় সেটি ঢাকা পড়ে যায়। ২০১৪ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনের সময়েই এ বড় পুঁজিই নরেন্দ্র মোদির নির্বাচন তহবিলে হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় সাহায্য করেছিল। নির্বাচনে জয়লাভ করে নরেন্দ্র মোদি কোনো নেমক হারামি করেননি। তিনি তার পাঁচ বছরের পুরো মেয়াদেই ভারতের বড় পুঁজির খেদমতগারি করেছেন। তার এ খেদমতগারির মূল্য দিতে হয়েছে ভারতের কৃষকদেরকে এবং অন্য শ্রমজীবীদেরকে। মধ্যশ্রেণীর একটা বড় অংশও তার আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন।
হিন্দুত্বের সঙ্গে কৃষক, দলিত, নিম্নশ্রেণীর মানুষের কোনো সম্পর্ক না থাকলেও তাদেরকে শোষণ করে পুঁজিপতিদের সুবিধা দিতে তিনি ধোয়া তুলেছিলেন হিন্দুত্বের। এতে গরিবরা নিজেদের স্বার্থের কথা ভুলে এবং নরেন্দ্র মোদির ধোঁকাবাজি ধরতে না পেরে বিজেপিকে ব্যাপক আকারে ভোট দিয়েছিল। উত্তর প্রদেশে এটা যেভাবে দেখা দিয়েছিল, তাতে সেখানকার প্রধান দল মায়াবতীর নেতৃত্বাধীন বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) এবং মোলায়েম সিং যাদবের সমাজবাদী পার্টি ধরাশায়ী হয়েছিল। কংগ্রেসের অবস্থাও হয়েছিল একইরকম।
রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশের নির্বাচনের আগে বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ তাদের এক সাংগঠনিক সভায় বলেছিলেন যে, এর পরবর্তী নির্বাচনে বিজেপি প্রতিটি আসনেই জয়লাভ করবে। কিন্তু দেখা গেল প্রতিটি আসনে জয়লাভ তো দূরের কথা, বিজেপি শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছে। এ ফলাফল সামনে রেখেই এখন দিশেহারা বিজেপিকে তাদের নির্বাচনী চিন্তাভাবনা করতে হচ্ছে। কারণ, এবার হিন্দুত্ব দিয়ে ভোটারকে আর প্রতারিত করা যাচ্ছেনা।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিজেপি যেভাবে তাদের কৃষকবিরোধী নীতি কার্যকর করে এসেছে সেটাই এখন তাদের জন্য ডেকে এনেছে সব থেকে বড় বিপদ। উত্তর ভারতের সর্বত্র, এমনকি দক্ষিণ ভারতেও, কৃষকরা বিপুল সংখ্যায় সংগ্রাম করছেন। দূর-দূরান্ত থেকেও মিছিল করে এসে তারা মুম্বাই, দিল্লি, কলকাতা এবং অন্যান্য শহরে জমায়েত হচ্ছেন এবং সভা করছেন। তাদের জমি দখল, ঋণের বোঝা, ফসলের মূল্য, সার-বীজ ইত্যাদির দাবিতে তারা এখন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যেভাবে নেমেছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে যে, কৃষকদের ভোটেই বিজেপির অবস্থা কাহিল হবে। হিন্দুত্বের ভেল্কি দেখিয়ে কৃষক ও দলিতদের মধ্যে আর কোনো কাজ হবে না।
এ পরিস্থিতিতে ভারতের বিরোধী দলগুলোর মধ্যে নির্বাচনে জয়ের আশার সঞ্চার হয়েছে এবং তারা বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে। বিজেপি ইতিমধ্যেই তামিলনাড়ু, অন্ধ্র, তেলেঙ্গানায় তাদের জোট শরিকদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। তবে, ভারতে এমন কোনো একক পার্টি নেই যারা বিজেপিকে পরাজিত করে সরকার গঠন করতে পারে। কাজেই আগামী নির্বাচনে বিজেপি যদি পরাজিত হয়, তাহলে ভারতে কোয়ালিশন সরকার গঠিত হবে। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশ ইত্যাদিতে দেখা গেছে যে, কংগ্রেসসহ বিজেপিবিরোধী দলগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ হয়, তাহলে বিজেপি নিশ্চিতভাবেই পরাজিত হবে। সূত্র: ইন্টারনেট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।