মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট, একমাত্র বাঙালি প্রেসিডেন্ট ও কংগ্রেস দলের বিশিষ্ট নেতা প্রণব মুখোপাধ্যায় ভারতরত্ম সম্মান লাভ করেছেন। ভারতে জল্পনা চলছে যে, ভোটের মুখে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মন জয়ের চেষ্টায় প্রণব মুখার্জিকে ভারতরত্ম সম্মান দেয়া হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে ফোনে এ সুসংবাদ পান তিনি। তার সাথে আরও দু’জন মরণোত্তর এ সম্মান পেয়েছেন। তারা হলেন জনসঙ্ঘের নেতা নানাজি দেশমুখ আর অসমের ভ‚মিপুত্র, গায়ক ভ‚পেন হাজরিকা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘ভারতরত্ম’ প্রণব মুখোপাধ্যায়কে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সম্মান ঘোষণার পরে প্রণববাবু তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এটা গোটা জীবনে কাজের স্বীকৃতি তো বটেই, বাঙালি হিসেবেও গর্বিত।’
আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, ‘ভারতরত্ম’ সম্মানের পেছনে ইদানীং যে বহু অঙ্ক জড়িয়ে থাকে, তা একান্তে কবুল করেন দিল্লিতে ক্ষমতার অলিন্দে ঘোরাফেরা করা অনেকেই। তাদের মতে, ২০১৪ সালে সচিন টেন্ডুলকারকে ‘ভারতরত্ম’ দেওয়ার পেছনে ছিল তরুণ-ভোট টানতে মনমোহন সিংহ সরকারের মরিয়া চেষ্টা। বিজেপি ক্ষমতায় এসেই ‘ভারতরত্ম’ ঘোষণা করেছিল অটলবিহারী বাজপেয়ী এবং মদনমোহন মালব্যকে। তখনও জল্পনা কিছু কম হয়নি। জল্পনা চলছে এবারও। অনেকের মতে, হিন্দি বলয়ে জমিক্ষয় হতে শুরু হওয়ার পর আসন্ন লোকসভা ভোটে পূর্ব ভারতই বিজেপির পাখির চোখ। তাই প্রণববাবুকে ‘ভারতরত্ম’ দিয়ে বাংলার মন জয়ের চেষ্টা করলেন মোদী। কংগ্রেস এবং তৃণম‚লকেও চাপে ফেলার চেষ্টা করলেন।
অন্যদিকে, নাগরিকত্ব বিল নিয়ে অসমিয়াদের মধ্যে যে ক্ষোভ ছডাচ্ছে, ভ‚পেন হাজরিকাকে ‘ভারতরত্ম’ দিয়ে তাকে প্রশমিত করার চেষ্টা করা হল বলে মনে করা হচ্ছে। তাছাড়া, বাংলাতেও হাজরিকার প্রভাব যথেষ্ট। সে সাথে সঙ্ঘের মন রাখতে সম্মান দেওয়া হল নানাজি দেশমুখকে। একদা সাংসদ এবং পরবর্তীকালে রামচন্দ্রের ‘কর্মভ‚মি’ চিত্রক‚টে গরিবদের মানোন্নয়নে কাজ করা নানাজি সঙ্ঘমহলে খুবই শ্রদ্ধেয়।
এদিন ‘ভারতরত্ম’ ঘোষণার পর মোদী টুইট করেন, ‘‘প্রণবদা আমাদের সময়ে অসাধারণ রাষ্ট্রনায়ক। নিঃস্বার্থ ও অক্লান্তভাবে দশকের পর দশক ধরে দেশের সেবা করেছেন। তাঁর প্রজ্ঞা ও মেধার তুলনা হয় না।’’
প্রণববাবুকে অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেন রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, ‘আমাদেরই এক জনের অপরিসীম অবদান যে স্বীকৃতি পেল, তা কংগ্রেসের কাছে অত্যন্ত গর্বের।’
দলের নেতারাও বলছেন, ‘যে সর্দার প্যটেলের সব থেকে উঁচু মূর্তি বানাচ্ছেন মোদী, তিনি কংগ্রেসের দিকপাল। যে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে ভারতরত্ম দেওয়া হচ্ছে, তিনিও কংগ্রেসেরই কিংবদন্তী।’ তবে প্রকাশ্যে এ কথা বললেও আরএসএসের আমন্ত্রণে নাগপুরে গিয়ে মোহন ভাগবতের সঙ্গে প্রণববাবুর এক মঞ্চে দাঁড়ানোর স্মৃতি এখনও মুছে যায়নি কংগ্রেস নেতাদের মন থেকে। দিল্লির আপ নেতাও সেই প্রসঙ্গ উস্কে দিয়ে টুইট করেছেন, ‘সঙ্ঘের শাখায় এক বার যাও, আর রত্ম হয়ে যাও। ‘ভারতরত্ম’-র তালিকা প্রকাশের পরে খানিক উষ্মা ছড়িয়েছে বিজেপি শিবিরেও। প্রশ্ন উঠেছে কেন লালকৃষ্ণ আদবাণীকে এই সম্মান দেয়া হল না। দলের অনেক নেতাই একান্তে বলছেন, ভোটের মুখেও আদবাণীকে ব্রাত্যই করে রাখলেন মোদী।
পদ্মশ্রী ফিরিয়ে দিলেন গীতা মেহতা
ভারত সরকারের দেওয়া পদ্মশ্রী খেতাব ফিরিয়ে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ভারতীয় লেখক গীতা মেহতা। তিনি ওড়িশ্যার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের বড় বোন। গতকাল শনিবার সকালে এক খবরে এনডিটিভি জানিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘোষণা দেওয়া পদ্মশ্রী খেতাব গতকাল সকালে গ্রহণ না করার কথা বলেন তিনি।
এক বিবৃতিতে গীতা মেহতা বলেন, ‘আমাকে পদ্মশ্রীর উপযুক্ত মনে করায় আমি অত্যন্ত গর্বিত। কিন্তু আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, সাধারণ নির্বাচনের সময় এই পুরস্কার প্রদানের বিষয়টি ভুল অর্থ বহন করতে পারে, যা সরকার এবং আমাকে বিব্রত করবে।’
এনডিটিভি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পদ্মশ্রী পুরস্কারের ঘোষণার কয়েক মাস আগেই গীতা মেহতা ও তার স্বামী বিখ্যাত প্রকাশক সোনি মেহতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাদের সঙ্গে দেড় ঘণ্টার এক বৈঠক করেন তিনি। গীতা ও তার স্বামী অবশ্য তখন ভেবেছিলেন প্রধানমন্ত্রী হয়তো নিজের লেখা বই প্রকাশের চিন্তা করছেন।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে পদ্মশ্রী খেতাব দেওয়া আসলে রাজনৈতিক কৌশলেরই একটি অংশ। নবীন পট্টনায়েক ও তার বিজু জনতা দলের বিরুদ্ধে বিজেপির চরম আক্রমণাত্মক মনোভাব মোটেও বন্ধ হয়নি। সোনি মেহতা বারাক ওবামা, টনি ব্লেয়ারসহ ছয়জন নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর লেখা প্রকাশ করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।