Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সড়কবিহীন নিঃসঙ্গ সেতু

আবুল কালাম আজাদ, বালগঞ্জ (সিলেট) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:১০ এএম

সিলেটের ওসমানীনগরের সাদিপুর ইউনিয়নের কালনী নদীর উপর প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু থাকলেও বাঁশের সাঁকোই হাজার হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা। সেতুর কাজে অনিয়ম, সেতুর দুই পাশের রাস্তার মাটি ভরাট না করার কারণে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করা হলেও জনগণ কোনো সুবিধা ভোগ করতে পারছেনা। চোঁখের সামনে হাতির মতো দাঁড়িয়ে থাকা সেতু জনসাধারণ দেখতে থাকলেও ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতে হয় সাঁকোর উপর দিয়ে।

জানা যায়, ২০০১ সালে সিলেট-২ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলী উপজেলার সাদীপুর ইউপির ইসলামপুর এলাকায় কালনী নদীর উপর প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছিলেন এই সেতুটি। সেতুটির নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেছিল তৎকালীন বালাগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি। কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে সেতু নির্মাণের এক বছরের মাথায় সেতুর পশ্চিম পাশ দেবে যায়। সেতু দেবে যাওয়া আর সেতুর দু’পাশের রাস্তায় মাটি না থাকায় গত দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে জনসাধারনের অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত হয়ে রয়েছে।
সেতুতে উঠার দুই পাশের সড়কের মাটি নেই নদীর মধ্য খানে একটি অব্যবহৃত সেতু দাঁড়িয়ে আছে। সেতু ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যবহার উপযোগী না থাকায় সেতুর পাশ ঘেসে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ এলাকার হাজার হাজার মানুষ প্রতিনিয়িত পারাপার হচ্ছেন।

ইসলামপুরের কালনী নদী পার হয়ে বেগমপুর-ওসমানী সড়ক কালনীচর বাবুল মার্কেট হয়ে শেরপুর হয়ে ঢাকা এবং সিলেট জেলা সদরে যাতায়াত করে সেতু সংশ্লিষ্ট সাদপিুর ইউপির দক্ষিণ কালনিচর, ইসলামপুর, সুরিকোনা, চর তাজপুর, গালিমপুর, মাধবপুর, পূর্ব কালনিচর, উত্তর কালনিচর, নোয়াগাঁও, সম্মানপুর, গুচ্ছ গ্রাম ও পাশর্^বর্তী নবীগঞ্জ উপজেলার আটঘর গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। কালনী নদীর উপর বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন এ এলাকার চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গালিমপুর দাখিল মাদরাসা, রহমতপুর উচ্চ বিদ্যালয়, দক্ষিণ কালনিচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সুরিকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালের শিক্ষার্থীরা পারাপার হতে হয়।
গালিমপুর গ্রামের প্রবীন ব্যক্তি লাল মিয়া (৬০) জানান, লাখ লাখ টাকা দিয়ে কালনী নদির উপর সেতু নির্মাণ করা হলে এলাকার মানুষের কোনো উপকারে আসেনি। গত দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে সেতুটি জনগনের পারাপারের অনুপযোগী হয়ে আছে। এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাগবে সেতুটি ভেঙে নতুন একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানান তিনি।

সাদিপুর ইউপি সদস্য সোনাই গাজি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি অকেজো। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে এখানে নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছি।

সাদিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রব বলেন, সেতুটি নির্মাণের পর পর এক পাশ ধেবে যাওয়ায় তৎকালীন সময় থেকে মানুষ ব্যবহার করতে পারছেনা। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এত বড় একটি সেতু নির্মাণ করা সম্ভব নয়। সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি এলাকার মানুষের কষ্ট লাগবে বর্তমান অকেজো সেতুটি ভেঙে নতুন একটি সেতু নির্মাণ করা হউক।
ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বলেন, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে যদি আমাকে একটি লিখিত আবেদন দেয়া হয় তাহলে এর ভিত্তিতে পিআইও অফিসের মাধ্যমে এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থ গ্রহণ করব।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সেতু

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ