Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চীন-পাকিস্তান-সউদী আরব নয়া কৌশলগত অক্ষশক্তি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম | আপডেট : ১২:০৭ এএম, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯

সউদী আরব পাকিস্তানের গভীর সমুদ্র বন্দর গোয়াদরে একটি তেল শোধনাগার প্রতিষ্ঠায় ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে নিশ্চিত করেছে। এটি এক বিরাট কৌশলগত অগ্রগতি। তা যে শুধু চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) প্রকল্পকে জোরদার করছে তাই নয়, উপরন্তু তা সউদী আরব, পাকিস্তান ও চীনের সমন্বয়ে এক নয়া কৌশলগত অক্ষশক্তিকে প্রদর্শন করছে। সিপিইসির লক্ষ্য হচ্ছে পাকিস্তানের মধ্যদিয়ে সড়ক, রেলপথ ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক বিশাল নেটওয়ার্ক নির্মাণ করা। সউদী এ বিনিয়োগ সিপিইসিরই অঙ্ক।
চীনা অর্থায়নকৃত সিপিইসিতে চীন ৬০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সিপিইসি হচ্ছে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর স্বপ্নের আন্তদেশীয় বিশাল কানেক্টিভিটি উদ্যোগ ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড (ওবর)-এর অঙ্ক। সম্প্রতি উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে যে, চীনের ওবর প্রকল্পগুলো গ্রহিতা দেশগুলোকে ঋণজালে আবদ্ধ করেছে। কার্যত, দেশ দেউলিয়া হয়ে পড়বে এ আশঙ্কায় মালয়েশিয়া গত বছর দুটি বৃহৎ ওবর প্রকল্প বাতিল করে। এ ঘটনায় চীন গ্রহিতা দেশগুলোকে ঋণে বেঁধে ফেলছে ধারণা জোরদার হচ্ছে।
এ প্রেক্ষাপটে গোয়াদরে একটি তেল শোধনাগার প্রতিষ্ঠার সউদী সিদ্ধান্ত সিপিইসি ও ওবরের জন্য এক জোর উৎসাহ হিসেবে এসেছে। এটা চীনা প্রকল্পসমূহের ব্যাপারে আস্থা বৃদ্ধি করেছে ও সেগুলোকে অর্থনৈতিকভাবে টিকে থাকার উপযোগী করেছে। যেমন দেখা যায় যে, ওবরকে বাস্তব রূপ দেয়ার দৃঢ়তা ও সম্পদ চীনের আছে। কিন্তু তার এখনো বিভিন্ন দেশকে এটা বোঝানো প্রয়োজন যে, এ প্রকল্গগুলো পারস্পরিক লাভজনক। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্যিক ও কৌশলগত শক্তির লড়াইয়ে লিপ্ত চীনকে এখন এ বোঝানোর জন্য অতিরিক্ত কঠোর পরিশ্রম করতে হচ্ছে। এদিকে শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটার মতো ঘটনা বেইজিংয়ের স্বার্থের সহায়তা করবে না। এক্ষেত্রে গোয়াদরে সউদী বিনিয়োগ যা সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান সফরকালে স্বাক্ষরিত হবে, চীনের পরিকল্পনার জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসবে।
কিন্তু এখানে যা কৌত‚হলোদ্দীপক বিষয় তা হ’ল সিপিইসিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য রিয়াদকে উদ্বুদ্ধ করা। আমার বিশ্বাস এটা গত বছর সউদী আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েনের সাথে সম্পর্কিত। যদিও দু’দেশ তাদের দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্ব পুনরায় জোরদার করা অব্যাহত রেখেছে, আমেরিকার দুটি পদক্ষেপ রিয়াদকে ভুল ধারণা দিয়েছে। প্রথম, মার্কিন প্রেসিডেন্ট গত বছর প্রকাশ্যে বলেন যে, মার্কিন সমর্থন ছাড়া সউদী বাদশাহ দু’সপ্তাহও টিকতে পারবেন না। এটা এমন সময় বলা হয়, যখন যুক্তরাষ্ট্র তেলের দাম কমানো এবং এ অঞ্চলে আমেরিকার সামরিক উপস্থিতির জন্য আরো বেশি অর্থ দেয়ার জন্য সউদী আরবকে চাপ দিচ্ছিল। বলা নিষ্প্রয়োজন যে, প্রকাশ্য অবমাননাকে রিয়াদ ভালোভাবে নেয়নি।
তারপর তুরস্কের ইস্তান্বুলে সউদী কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার জন্য মার্কিন সিনেট ডিসেম্বরে সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে দায়ী করে একটি প্রস্তাব পাশ করে। একই সময়ে ইয়েমেনে সউদী নেতৃত্বাধীন যুদ্ধে মার্কিন সাহায্য বন্ধের আহবান জানিয়ে পৃথক একটি প্রস্তাব পাশ করে মার্কিন সিনেট। এ কর্তনগুলো সউদী আরবকে বিপাকে ফেলে এবং তারপর আমার ধারণা যে, রিয়াদ তার কৌশলগত সম্পর্ক বহুমুখী করার সিদ্ধান্ত নেয়। পাকিস্তানে চীনা প্রকল্পে বিনিয়োগ ছাড়া আমেরিকানদের চিন্তা করার জন্য তারা ভালো আর কী দিতে পারত। সন্ত্রাসবাদ ও আফগানিস্তান নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই মার্কিন-পাকিস্তান সম্পর্কে টানাটানি চলছিল। সে শক্তিগুলোকে দেখা সহজ যেগুলো রিয়াদ, ইসলামাবাদ ও বেইজিংকে নিকটে এনে ত্রয়ীতে পরিণত করেছে।
এ ত্রয়ী জোট পুরনো মার্কিন-পাকিস্তান-সউদী আরব ত্রিভুজের স্থলাভিষিক্ত হবে। সর্বোপরি, চীন এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের স্থলাভিষিক্ত হতে চায় বলে মনে হয়। সে এখনো এই প্রক্রিয়া শেষ করেনি, কেউ জানে না আদৌ তা শেষ হবে কিনা। কিন্তু ট্রাম্প মিত্রদের প্রতি তার কঠোর পন্থা ও তাদের সাথে দাম্ভিক আচরণের মধ্যে দিয়ে চীনের জন্য তা সহজ করে দিচ্ছেন।
*রুদ্রনীল ঘোষের এ অভিমত ১৭ জানুয়ারি দি টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত হয়।



 

Show all comments
  • S A Amin ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৯ এএম says : 0
    why Not Bangladesh..........!!
    Total Reply(0) Reply
  • Nirmal Mandal ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১০ এএম says : 0
    " যে যা বলিস ভাই অামার সোনার হরিন চাই! " সুদূর প্রসারি পরিকল্পনা। একটা কথা সব সময় মনে রাখতে হবে," গরিবের সুন্দরী বউ সবার ভাবী,সবাই সব ধরনেরসাহায্য করে! শেষ মেষ দেনার দ্বায় মূল্যবান সম্পদ হারাতে হয়! সর্তক থাকুন ঋৃন / সাহায্য গ্রহনকারীর থেকে! পরিকল্পনার অাওতা কিন্তু চার পাশ! বিশ্ব জয়ের.....
    Total Reply(0) Reply
  • Md Sumon ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১২ এএম says : 0
    যখন ছোট ছিলাম তখন কোনো একটা বইয়ে পড়েছিলাম "ভারত বাংলাদেশের বন্ধু" । এখন কেন জানি বারবার সেই লেখককে জুতার মালা সন্মাননা দিতে মন চায় ।।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Rahul ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১২ এএম says : 1
    আমরা এক আজব মুসলিম রহিঙ্গা ইসুতে চীন রাশিয়া মিলে বাংলাদেশকে বাঁশ দিলো তাতে সমস্যা নেই । রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে পাকিস্তানকে সাপোর্ট করলো এতে আমাদের ঈদ উৎসব শুরু হয়ে গেলো।
    Total Reply(0) Reply
  • Nour Alam ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১৪ এএম says : 0
    American as long as with Indian all Muslims against u.usa don't have rights to tell freedom fighters terrorist.usa coming from far to others country to attract,then usa is the biggest terrorist.
    Total Reply(0) Reply
  • J M Azad ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১৪ এএম says : 0
    অনেকদিন পরে একটা ভাল সংবাদ চোখে পড়ল। এটা যদি হয় তাহলে পৃথিবীব্যাপী মুসলমানদের উপর কিছু কায়েমি শক্তির নির্যাতন বন্ধ হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Rashed Ronju ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১৫ এএম says : 0
    ভারত সমগ্র জম্মু ও কাশ্মীরকে তার অধীনে চায়, পাকিস্তানও তাই চায়। কাশ্মীর নিয়ে এখন পর্যন্ত ১৯৪৭, ১৯৬৫, ১৯৯৯ সালে তিনটি যুদ্ধ করেছে ভারত-পাকিস্তান। খণ্ড যুদ্ধ হয়েছে অসংখ্য। কাশ্মীর সমস্যার সামান্যতমও সমাধান হয়নি, আরও জটিল হয়েছে। এখন আরেকটি যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • M rahman ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ৯:১৫ পিএম says : 0
    I don,t like your abenormal com....
    Total Reply(0) Reply
  • M rahman ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১১:১৯ পিএম says : 0
    I want one more war india & pakistan Who win i will support him
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সউদী আরব


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ