Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকারি বিএম কলেজ প্রিন্সিপাল গঠন করলেন শিক্ষক পরিষদের কমিটি

ক্ষুদ্ধ সাধারণ শিক্ষকরা

বরিশাল ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

সহকর্মীদের সাথে কোন ধরনের আলোচনা ও ভোট ছাড়াই বরিশাল বিএম কলেজের প্রিন্সিপাল তার নির্বাহী ক্ষমতাবলে কলেজের শিক্ষক পরিষদের কমিটি গঠন করায় সাধারণ শিক্ষকদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষুব্ধ শিক্ষকদের অভিযোগ, বিএম কলেজের ইতিহাসে নির্বাচন কিংবা কণ্ঠ ভোট ছাড়াই এই প্রথম শিক্ষক সমিতির নেতৃত্ব নির্ধারণ করা হল। যা নজিরবিহীন।
দক্ষিণাঞ্চলের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকগণ জানান, শিক্ষক সমিতির নেতৃত্ব নির্বাচন করতে গত বৃহস্পতিবার কলেজের শিক্ষক পরিষদ মিলনায়তনে জরুরি সভা আহŸান করেন প্রিন্সিপাল প্রফেসর মো. শফিকুর রহমান সিকদার। বেলা ২টায় ওই সভা ডাকা হলেও তা শুরু হয় বিকাল সাড়ে ৩টায়। অর্ধশতাধিক শিক্ষকদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ওই সভা শুরুর পর পরই পিসন্সপাল শিক্ষক সমিতির গঠনতন্ত্রের সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করেন। ওই প্রস্তাবে প্রিন্সিপাল বলেন, অধ্যাপক এবং সহযোগী অধ্যাপক ছাড়াও সাধারণ সম্পাদক পদে সহকারী অধ্যাপকও নির্বাচিত হতে পারবেন। সভায় অংশ নেওয়া সিনিয়র শিক্ষকরা এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন না হলেও এক পর্যায়ে সমাজকল্যাণ বিভাগের অধ্যাপক আবদুস সবুর হাওলাদার সাধারণ সম্পাদক পদে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আলÑআমিন সরোয়ারের নাম প্রস্তাব করেন। এতে সভায় আবারো হট্টগোল বাঁধে। ওই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আসমা উল হুসনা নিজেই নিজেকে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ঘোষণা করেন। অপর এক শিক্ষক ওই পদে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামানের নামও প্রস্তাব করেন।
সাধারণ সম্পাদক পদে শিক্ষক নির্বাচন নিয়ে সভায় উপস্থিত শিক্ষকরা ত্রিধা বিভক্ত হয়ে পড়লে অধিকাংশ শিক্ষক গোপন ভোটের আহŸান জানান। কিন্তু পদাধিকারবলে শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রিন্সিপাল প্রফেসর মো. শফিকুর রহমান তার নির্বাহী ক্ষমতা বলে সাধারণ সম্পাদক পদে আলÑআমিন সরোয়ারের নাম ঘোষণা করেন এবং আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করবেন বলেও সভায় ঘোষণা দেন। এ নিয়ে সভায় ক্ষোভ দেখা দিলে প্রিন্সিপাল সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
বৃহস্পতিবার রাতেই তিনি সমিতির অন্যান্য পদগুলোতে শিক্ষকদের নাম চ‚ড়ান্ত করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। সূত্র জানায় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে সহযোগী অধ্যাপক আবদুর রহমান সরদার ও প্রভাষক বিকাশ কুসুম দাসকে। এছাড়া কোষাধ্যক্ষ পদে প্রভাষক শিশির চন্দ্র পাইক, ক্রীড়া সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক বিলাশ মল্লিক এবং অধ্যাপক আবদুস সবুর হাওলাদার, সহযোগী অধ্যাপক তপুন কুমার সাহা, সহকারী অধ্যাপক কামরুজ্জামান কামাল এবং প্রভাষক তানভির আহম্মেদ সিদ্দিকীকে নির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়েছে।
এদিকে নির্বাচন ছাড়াই বিএম কলেজ শিক্ষক পরিষদের কমিটি গঠন করা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সহকারী অধ্যাপক আসমা উল হুসনা বলেছেন, গণতান্ত্রিক উপায়ে শিক্ষক পরিষদ গঠনের প্রত্যাশা ছিল অধিকাংশ শিক্ষকের। কিন্তু তা না হওয়ায় সিনিয়র শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। প্রিন্সিপাল নির্বাহী ক্ষমতাবলে শিক্ষক পরিষদ গঠন করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সিনিয়ন শিক্ষক জানিয়েছেন, বিএম কলেজের উচ্চতাকে বিবেচনায় নিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে অধ্যাপক বা সহযোগী অধ্যাপক পদে কাউকে নির্বাচিত করা উচিত ছিল। গঠিত কমিটিতে সকল শিক্ষকদের মতামতের প্রতিফলন ঘটেনি।
এ ব্যাপারে কলেজ পিন্সিপাল প্রফেসর মো. শফিকুর রহমান সিকদার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তিনি নির্বাহী ক্ষমতা বলে সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য পদে প্রতিনিধি নির্বাচিত করেছেন। যাদের নির্বাচিত করা হয়েছে তারা অত্যন্ত যোগ্য এবং শিক্ষকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কলেজ

২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ