Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিটিজেনশিপ বিল নিয়ে আসামে অনিশ্চয়তা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

সিটিজেনপিশ বিল নিয়ে বিরোধিতার জেরে আসামের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার থেকে অসম গণ পরিষদ (এজিপি) নিজেদের প্রত্যাখ্যান করে নেয়ার পর সেখানে নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে এবং নতুন রাজনৈতিক হিসাব নিকাশের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
সিটিজেনশিপ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিলের ব্যাপারে বিপুল বিরোধিতার প্রেক্ষিতে কংগ্রেস বলেছে যে, আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল যদি বিজেপি থেকে বেরিয়ে আলাদা সরকার গঠন করতে চান, তাহলে তাকে সমর্থন দেবে কংগ্রেস। কিন্তু রোববার এই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে বিজেপি। কংগ্রেস বর্তমান রাজনৈতিক উত্তাল অবস্থাকে ফিরে আসার সুযোগ হিসেবে দেখছে। তারা সনোয়ালের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যাতে তিনি তার অনুগত এমএলএ-দের নিয়ে গেরুয়া দল থেকে বেরিয়ে আসেন। সিনিয়র কংগ্রেস নেতা দেবব্রত সাইকিয়া বলেছেন, “এটা পুরনো প্রস্তাব। সনোয়াল নিজে এবং বিজেপির বহু এমএলএ আগে অনেকবার বলেছেন যে, আসাম বা আসামের জনগণের স্বার্থের বিপরীতে কোন প্রচেষ্টাকে তারা সমর্থন করবেন না। যেহেতু আসামের বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠি সিটিজেনশিপ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিলের বিরুদ্ধে, তাই তার সমর্থকদের উচিত বিজেপি ছেড়ে বেরিয়ে আসা”। তিনি আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আমাদের প্রস্তাব গ্রহণ করলে আমরা তাদের ভেতর ও বাইরে থেকে সনোয়ালের নেতৃত্বাধীন সরকার গঠনের ব্যাপারে সহায়তা করবো”। অ্যাসেম্বলি বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্বে আছেন দেবব্রত। ১২৬ সদস্যের অ্যাসেম্বলিতে ৬২টি আসন রয়েছে বিজেপির আর তাদের জোটভুক্ত দল বোরো পিপলস ফ্রন্টের রয়েছে ১২টি। এজিপির রয়েছে ১৪টি, কংগ্রেসের ২৪টি এবং অল ইন্ডিয়া ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের (এআইইউডিএফ) রয়েছে ১৩টি আসন। ক্ষমতাসীন দল বলেছে যে সনোয়ালের বিজেপি ছেড়ে যাওয়াটা অচিন্ত্যনীয়। বিজেপির আসাম ইউনিটের প্রধান রঞ্জিত দাস বলেছেন, “সাইকিয়ার প্রস্তাব পুরোপুরি হাইপোথেটিক্যাল। সনোয়াল গণমানুষের নেতা যিনি জানেন যে এই বিল দীর্ঘমেয়াদে আসামের জনগণকে উপকৃত করবে। তিনি ক্ষমতার জন্য লালায়িত নন এবং বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসের সাথে হাত মেলানোর প্রশ্নই ওঠে না”।
আলোচিত এই বিলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা হিন্দু, পার্সি, শিখ, খ্রিস্টান, জৈন এবং বৌদ্ধদের ভারতের নাগরিকত্ব দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। গত সপ্তাহে লোকসভায় বিলটি পাস হয়েছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি রাজ্যসভার পরবর্তী অধিবেশনে এটি উপস্থাপন করা হবে।
বাংলাদেশ থেকে আগত অভিবাসীদের কারণে স্থানীয় আদিবাসিদের মধ্যে বিলটি নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে এবং এ অঞ্চলের সাতটি রাজ্যেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিজেপির কিছু মিত্র দল হুমকি দিয়েছে যে, রাজ্যসভায় বিলটি পাস হলে তারা এজিপি’র পথ ধরবে।
এই উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে এজিপি শনিবার ইঙ্গিত দিয়েছে যে, বিজেপি যদি আসামের স্বার্থের কথা ভেবে বিলটি প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে আবার তারা বিজেপির সাথে জোট বাঁধবে।
এজিপি প্রেসিডেন্ট অতুল বোরা বলেছেন, “এই সম্ভাবনা খুবই কম যে বিজেপি এখন বিলটি থেকে পিছিয়ে আসবে। কিন্তু তারা যদি পিছিয়ে আসে, তাহলে আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবো। তা না হলে, তাদের সমর্থন দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না”। সূত্র : এসএএম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ