Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফুঁসে উঠেছে আসাম, ত্রিপুরায় গুলিবিদ্ধ ৭

হিন্দুদের নাগরিকত্ব শুধু ধর্মের ভিত্তিতে, ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে নয় : হিমান্ত বিশ্বাস

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

ভারতের লোকসভায় বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিল পাস হওয়ার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিলটি পাস হওয়ার পরপরই আসামে বিক্ষোভ শুরু হয়। বন্ধ হয়ে যায় সব ধরনের যান চলাচল। বিক্ষোভ হয়েছে পাশের রাজ্য ত্রিপুরাতেও। সেখানকার জিরানিয়ায় নর্থ-ইস্ট স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশনের বিক্ষোভে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। কাঁদানে গ্যাস, পানিকামান ব্যবহারের পাশাপাশি গুলি চালায় পুলিশ। এতে অন্তত ৭ জন গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়া আটক করা হয় বেশ কয়েকজনকে। লোকসভায় মঙ্গলবার পাস হয় নাগরিকত্ব বিল ২০১৬। যা শুধু আসাম নয়, পুরো ভারতের জন্যই কার্যকর হবে বলে জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। বিলটিতে বলা হয়, প্রতিবেশি তিনটি দেশ থেকে সংখ্যালঘুরা যদি নির্যাতন এড়াতে ভারতে আসেন, তবে তাদের নাগরিকত্ব দেয়া হবে। তবে মুসলমানরা নাগরিকত্ব পাবেন না। এ নিয়ে আসাম ও ত্রিপুরার বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল বলছে, বিলটির কারণে হিন্দু জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ আসামসহ গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতে আশ্রয় পাবে। অথচ যুগ যুগ ধরে বসবাস করে আসা মুসলিমরা বঞ্চনার শিকার হবেন। অপর এক খবরে বলা হয়, হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেয়ার বিষয়টি সমাধান করা যাবে শুধু ধর্মের ভিত্তিতে, ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে নয়। মঙ্গলবার নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ভারতের লোকসভায় পাস হওয়ার পর এমন মন্তব্য করেছেন আসামের অর্থমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্বাস শর্মা। তবে ওই বিলটিকে অনেকেই দেখছেন ভারতীয় সংবিধানের মৌলিক বিষয়গুলোর বিরোধী হিসেবে। বিলটিকে ঘিরে মঙ্গলবার ত্রিপুরা ছিল উত্তাল। সেখানকার জিরানিয়াতে ডাকা হয় বন্্ধ। এ সময় মারমুখি হয়ে ওঠেন আন্দোলনকারীরা। তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। ব্যবহার করে পানি কামান। এতেও আন্দোলনকারীরা না দমলে তাদের দিকে গুলি চালায় পুলিশ। এতে কমপক্ষে চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। যখন লোকসভায় তোলা হয় বিলটি তখন তা আরেকটি পার্লামেন্টারি কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানায় বিরোধী দল কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস। তবে সরকার তাদের এ দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে। ফলে তারা লোকসভা থেকে ওয়াকআউট করেন। এরপর লোকসভায় বিতর্ক চলতে থাকে। এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সব ব্যবস্থাই নেয়া হচ্ছে আসাম ও পুরো দেশের স্বার্থের জন্য। এক্ষেত্রে আসাম চুক্তি ৬ নম্বর ধারা অনুসরণ করছে সরকার। তিনি বলেন, এই দায় বহন করতে হবে পুরো দেশকে। এ সময় তিনি বলতে চেষ্টা করেন যে, প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে এভাবে শরণার্থী যাওয়অর কারণ হলো ধর্মভিত্তিক ভারতভাগ। আসামের অর্থমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্বাস শর্মা বলেন, হিন্দু শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার বিষয়টি সামনে আনার ক্ষেত্রে বিজেপিই প্রথম নয়। তার ভাষায়, আমাদেরকে ধর্মভিত্তিক একটি অবস্থান নিতে হয়েছে। কারণ, প্রতিবেশী দেশগুলোতে হিন্দুরা ধর্মের ভিত্তিতে নির্যাতিত হচ্ছেন। পন্ডিত জওয়াহারলাল নেহরু এবং মহাত্মা গান্ধীর সময় থেকেই হিন্দুদের অধিকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে ভারত। আমাদের জাতির প্রতিষ্ঠাতাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নাগরিকত্ব দেয়ার জন্য ১২ বছরকে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু আমরা সেই সময়কে কমিয়ে ৬ বছর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ বিলটি অসাংবিধানিক বলে সমালোচনা করছেন অনেকে। অনেক অধিকারকর্মী বিশ্বাস করছেন, এভাবে নাগরিকত্ব দেয়া হলে তা আসাম চুক্তি-১৯৮৫ কে হালকা করে ফেলবে। ওই চুক্তিতে পরিষ্কার বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের পরে যেসব অভিবাসী অবৈধভাবে আসামে প্রবেশ করেছেন তাদের ধর্ম যাই হোক না কেন দেশ থেকে বের করে দিতে হবে। এনডিটিভি, দ্য ইকোনমিক টাইমস, এবিপি।



 

Show all comments
  • asb ১৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ৮:৪১ এএম says : 0
    BANGLADESH E ODHIKANGSHO BORO BORO POST E HINDUDER BOSHANO HOY, AMON KONO DEPT NAI JEKHANE HIGH POST E HINDU DER BOSHANO HOY NAI !! POLICE, BGB, EVEN ARMY TEO AKHON PROCHUR HINDU !! MONE HOCHE BANGLADESHER 80/90% HIGH POSTER JONNY HINDUDER E KOTHA KORE RAKHA HOESE
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ