পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দক্ষিণাঞ্চলের পরীক্ষিত ও বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের মন্ত্রিসভায় স্থান না হবার পাশাপাশি দীর্ঘদিন পরে বরিশাল বিভাগীয় সদর থেকে একজন প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ করায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে এ অঞ্চলের জনমনে। একাদশ সংসদের প্রথম মন্ত্রিসভায় বরিশাল সদর আসনের এমপি কর্নেল (অবঃ) জাহিদ ফারুখ শামিম পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও পিরোজপুর সদর আসনের অ্যাডভোকেট শ. ম. রেজাউল করিম গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেছেন। আমীর হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমদ ছাড়াও আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর মতো নেতার নামও মন্ত্রী পরিষদে না থাকায় বিস্মিত হয়েছেন দলীয় অনেক নেতাকর্মী। তবে খুশিও হয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষ। বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মতে, ‘দক্ষিণাঞ্চলে এবারের সংসদ নির্বাচনকে কলঙ্কিত করার অন্যতম কারিগরদের কোথাও স্থান পাওয়া উচিত নয়।
যদিও তোফায়েল আহমদ ও আমীর হোসেন আমুর মতো প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ দীর্ঘদিন মন্ত্রিসভায় থেকেও নিজ নির্বাচনী এলাকাসহ দক্ষিণাঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে আম জনতার প্রত্যাশা পূরন করতে পারেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। তার পরেও মন্ত্রী পরিষদে তাদের উপস্থিতি এ অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।
তবে এ নিয়ে ভিন্ন মতও আছে খোদ দলের মধ্যেই। ‘বারবারই কেন তারা মন্ত্রী থাকবেন’, সে বিষেয়েও প্রশ্ন রয়েছে দলের মধ্যে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দক্ষিণাঞ্চলের মাঠ পর্যায়ের একাধিক নেতার মতে, ‘এ অঞ্চলে আরো অনেক পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতা রয়েছেন মন্ত্রিসভায় স্থান পাবার মত’। এমনকি মহাজোটে থেকেও রাশেদ খান মেননের মতো অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ এবার মন্ত্রিসভায় ঠাঁই না পাওয়ায়ও সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বিগত সরকারে যে দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন, সব সময়ই বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের জন্য সম্ভব সব কিছু করার চেষ্টা করেছেন। তার ঘরের দরজা সব সময়ই দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য খোলা ছিল। এ বাম রাজনীতিবিদ আজীবনই সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেছেন।
বিদায়ী সংসদের চীফ হুইপ আসম ফিরোজ তার পূর্ব অবস্থানে ফিরতে পারবেন কিনা সে ব্যাপারেও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলে। নিজ নির্বাচনী এলাকাতেই আসম ফিরোজ এখনো যথেষ্ট বিতর্কিত। এমনকি ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার দিন বরিশাল শহরে আসম ফিরোজের ভূমিকাকে নিজ দলের মনুষই এখনো ‘ন্যাক্ক্যারজনক’ বলে অভিহিত করছেন।
পাশাপাশি মন্ত্রিসভায় ঠাঁই না পাওয়া সাবেক চীফ হুইপ আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ পূর্বের কোন অবস্থান লাভ করবেন কিনা তাও এখনো পরিষ্কার নয়। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত সংসদে আবুল হাসনাত চীফ হুইপ ছিলেন। বিগত সরকার আমলে তিনি স্থানীয় সরকার বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি ছাড়াও মন্ত্রীর পদ মর্যাদায় পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান ছিলেন।
তবে নতুন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাওয়া বরিশাল সদর আসনের জাহিদ ফারুখ শামিম এলাকার মানুষসহ দক্ষিণাঞ্চলের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কতটুকু প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন, তা এখনো পরিষ্কার নয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলে। বিগত দিনে মাঠের রাজনীতির সাথে তার সম্পর্ক ততটা নিবিড় ছিল না। তিনি ২০০৮ দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচন করে হেরে যাবার পরে আর বরিশালের মানুষের সাথে কোন যোগাযোগ রাখেননি। দীর্ঘ দশ বছরেরও বেশি সময় পর বিগত ৩০ জুলাই সিটি নির্বাচনের আগে বরিশাল মহানগরীতে তার কিছু তৎপরতা লক্ষ্য করা গেলেও মনোনয়ন পাননি। তবে গত ৩০ ডিসেম্বর বিজয়ী হরে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেলেও জনগণের প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ করতে পারবেন তা নিয়ে পরিষ্কার ধারণা দিতে পারেননি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।
যদিও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে কর্নেল ফারুখের অনেক কিছু করার আছে নিজ নির্বাচনী এলাকাসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে। তিনিও শপথ নেয়ার আগে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে সে ধরনের ইচ্ছার কথাই ব্যাক্ত করেছেন। অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল তাকে ‘জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে জনকল্যাণে পরিপূর্ণ নিয়োজিত’ করার তাগিদ দিয়েছেন। নদ-নদী বহুল দক্ষিণাঞ্চলে ভাঙা-গড়ার খেলা চীরন্তন। নদী ভাঙনে এ অঞ্চলের অনেক আমীর ফকির হয়ে গেছেন সময়ের বিবর্তনে। নদীভাঙন সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে এ অঞ্চলের জনপদের বহু মানুষকে। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবে তার অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে। সে সুযোগ তিনি কতটা আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করবেন তা দেখার অপেক্ষায় বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের আমজনতা।
দায়িত্ব গ্রহণের পরে পানিস¤পদ প্রতিমন্ত্রী আগামীকালই সচিবালয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিণাঞ্চল জোনের প্রধান প্রকৌশলীসহ মাঠ পর্যায়ের অন্যান্য কর্মকর্তাদের বৈঠকে ডেকেছেন বলে জানা গেছে। তিনি দক্ষিণাঞ্চলে নদীভাঙন রোধসহ চলমান ও প্রস্তাবিত সব প্রকল্প নিয়ে তাদের সাথে কথা বলবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
অপরদিকে শ. ম. রেজাউল করিম জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্ব বহন করলেও বিগত দিনে পিরোজপুরে তার নির্বাচনী এলাকার সাথে যোগাযোগ ততটা নিবিড় ছিল না। তিনি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় লাভ করায় নিজ নির্বাচনী এলাকাসহ দক্ষিণাঞ্চলের জন্য তারও অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। সময়ই সব কিছু বলতে পারবে বলে মনে করছে মহলটি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।