বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
রাজধানীর গেন্ডারিয়ায় দুই বছরের এক কন্যা শিশুকে ধর্ষণ শেষে ভবন থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। হত্যাকান্ডের শিকার শিশুটির নাম আয়েশা আক্তার। এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রতিবেশী নাহিদকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত শনিবার বিকেলে গেন্ডারিয়ার দীননাথ সেন রোডের পাশের এক বস্তিতে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে, শিশুটিকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে গতকাল দিনভর বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। তারা গেন্ডারিয়া থানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং নাহিদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
স্থানীয়রা বলেন, গেন্ডারিয়ার ৫৩/১/ছ দীননাথ সেন রোডের চারতলা বাড়ির মালিক নাহিদ। সে বাড়ির তৃতীয় তলায় থাকে। স্থানীয়দের দাবি, নাহিদ এক সময় পুরান ঢাকা এলাকায় ব্যবসা করলেও এখন উচ্ছৃঙ্খল জীবন-যাপন করে। তার দুই স্ত্রীর মধ্যে একজন মারা গেছে ও অন্যজন তাকে ছেড়ে চলে গেছে। আর নিহত আয়েশার বাবা মো. ইদ্রিস আলী ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করেন এবং মা রাজিয়া সুলতানা বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন। তিন বোনের মধ্যে আয়েশা দ্বিতীয়। ঘটনার সময় শিশুটির বাবা-মা বাইরে কাজে ছিলেন।
নিহত শিশুটির মামা মোহাম্মদ আলী অভিযোগে বলেন, শনিবার বিকেলে গেন্ডারিয়ার সাধনা ঔষধালয়ের সামনের গলিতে খেলা করছিল শিশুটি। এ সময় খিচুড়ি খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে শিশুটিকে তিন তলার নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে যায় নাহিদ। সেখানেই তাকে ধর্ষণ করা হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে ফ্ল্যাটের খোলা বারান্দা থেকে শিশুটিকে নিচে ফেলে দেয়। এ সময় আশপাশের লোকজন শিশুটির চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে তার নাক মুখ দিয়ে রক্ত ঝড়তে দেখে। এছাড়া শিশুটির শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। সেখান থেকে শিশুটির লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে নিয়ে ময়নাতদন্ত করা হয়। পরবর্তীতে রোববার দুপুরে জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয় শিশুটিকে।
স্থানীয়রা বলেন, ঘটনার পরপরই নাহিদকে আটক করে এলাকাবাসী। এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন। পরে তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়। তবে গত রোববার নাহিদের মেয়ে (১৩) তার বাবার অপকর্মের কথা এলাকাবাসীকে জানিয়েছে বলে স্থানীয়রা সাংবাদিকদের জানায়।
এদিকে, গতকাল শিশু আয়েশাকে ধর্ষণ ও হত্যার বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। তারা অভিযুক্ত নাহিদের বিচার চেয়ে এলাকায় মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেন। দুপুরের পরে এলাকাবাসী গেন্ডারিয়া থানার সামনে অবস্থান নিয়ে আয়েশা হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত নাহিদকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
আন্দোলনকারী কয়েকজন গৃহবধূসহ স্থানীয়রা বলেন, অভিযুক্ত নাহিদ এক সময় পুরান ঢাকার ইসলামপুরে ব্যবসা করতেন। তবে বর্তমানে ব্যবসা করেন না। দীননাথ সেন রোডে নিজের চারতলা বাড়ির ভাড়ার টাকায় তাঁর সংসার চলে। এলাকাবাসীর ভাষ্য, নাহিদ উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির লোক। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর সে আবারও বিয়ে করে। কিন্তু দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে নাহিদের বনিবনা ভালো না হওয়ায় তিনিও সংসার ছেড়ে চলে গেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গেন্ডারিয়া থানার এসআই হারুনুর রশিদ বলেন, মৃত্যুর ঘটনায় নাহিদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে গতকাল সকালে গেন্ডারিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন শিশুটির বাবা। ওই মামলায় নাহিদকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। পুলিশ জানায়, গ্রেফতার নাহিদের কথা-বার্তা অসংলগ্ন। তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে মনে হচ্ছে।
পুলিশের ওয়ারী জোনের সহকারী কমিশনার শামসুজ্জামান বাবু বলেন, প্রাথমিকভাবে আয়েশার শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি। তবে তার লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে সেই অনুযায়ী পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।