পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পরও দেশটির পূর্বাঞ্চলে বোমা হামলা জোরদার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে এ হামলা চালানো হচ্ছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা ও মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্টারসেপ্ট-এর যৌথ অনুসন্ধান থেকে এ কথা জানা গেছে। স্থানীয় সূত্রের বক্তব্য ও ছবি বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন তৈরি করেছে সংবাদমাধ্যমগুলো। ২০১৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর সিরিয়া থেকে মার্কিন বাহিনীকে পুরোপুরি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। টুইটার পোস্টে তিনি বলেন,‘আমরা সিরিয়ায় আইএস-কে পরাজিত করেছি। ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সিতে শুধু আইএস-কে হটানোর জন্যই তাদের সেখানে (সিরিয়া) রাখা হয়েছিল।’ তবে আল জাজিরা ও দ্য ইন্টারসেপ্টের অনুসন্ধান বলছে, সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে মার্কিন বাহিনীর হামলা জোরদার হয়েছে। সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় তিন সূত্রকে উদ্ধৃত করে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাটি হয়েছে ইরাক সীমান্ত সংলগ্ন ইউফ্রেটিস নদীর নিকটবর্তী আল কাশমাহ গ্রামে। মার্কিন বিমান হামলা ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) এর গোলা হামলায় বেসামরিক নাগরিক ও আইএস যোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যরা দক্ষিণাঞ্চলীয় গ্রামে পালিয়েছে। ইউফ্রেটিস নদী সংলগ্ন গ্রামগুলোতে জড়ো হয়েছে আইএস সদস্যরা। দের আজ জোর এলাকার এক মানবাধিকারকর্মীর তথ্য অনুযায়ী, এসব এলাকায় এখন ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার মানুষ অবস্থান করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এসব এলাকার নিরস্ত্র মানুষদের মার্কিন বোমা হামলা থেকে বাঁচার কিংবা নিজেদের লুকিয়ে রাখার কোনও জায়গা নেই।’ যুক্তরাষ্ট্র ও আইএস-এর পাশাপাশি সিরীয় সরকারের হামলার কবলেও পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের। অপারেশন রাউন্ডআপ নামের অভিযানের অংশ হিসেবে গত নভেম্বর থেকে ইউফ্রেটিসের আশেপাশে আইএস নিয়ন্ত্রিত গ্রামগুলোতে হামলা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। অপারেশন রাউন্ডআপ পরিচালনা করতে গিয়ে বেসামরিক এলাকায়ও হামলা হচ্ছে। একটি হাসপাতালও হামলার শিকার হয়েছে। প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন অনেকে। সবচেয়ে আলোচিত নাম পদত্যাগী প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস। আফগানিস্তান ও সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের মতো কিছু সিদ্ধান্তের বিরোধিতার সূত্রে তিনি পদত্যাগ করেন। ট্রাম্প তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের হাতে সিরিয়ায় থাকা ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের নির্মূল করার দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সমস্যা হয়ে দেখা দেয়, কুর্দিরা। ইসলামিক স্টেটের জঙ্গি দমনে কুর্দিদের সংস্থা ওয়াইপিজি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সহায়। অন্যদিকে কুর্দিদের বিদ্রোহী গোষ্ঠী পিকেকের মদতপুষ্ট হিসেবে দেখে তুরস্ক। কুর্দি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত পিকেকে তুরস্ক, ইরান, ইরাক ও সিরিয়ার অংশবিশেষ নিয়ে কুর্দিস্তান নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী। যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যে যেমন কুর্দিরা রুশ সমর্থিত সিরিয়ার আসাদ বাহিনীর ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেছে, তেমনি তাদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। একদিকে সিরীয় বাহিনী কুর্দি নিয়ন্ত্রিত এলাকা মানবিজে উপস্থিত হয়েছে। আল-জাজিরা, ইন্টারাসেপ্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।