Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেশি শ্রমে আদায়, কম শ্রমে পাওয়ায় দামে নেই মহাজোটের নেতাকর্মীরা

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ৭:৩০ পিএম | আপডেট : ৭:৫৮ পিএম, ৩ জানুয়ারি, ২০১৯

মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, স্বাধীনতার চেতনা সব কিছুর মুলেই ভোট আর ভোটাধিকারের বঞ্চনা। সেই বঞ্চনা থেকে জন্ম নিয়েছে গৌরবময় একাধিক ইতিহাস। চরম ত্যাগ তীতিক্ষার সিঁড়ি বেয়ে রাজপথে লড়াইয়ের ধারাবাহিকতায় বাংগালী বা বাংলাদেশী পরিচয়ে আজ আমরা তেজদৃীপ্ত। সেই ইতিহাস গঠনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ভূমিকা মূখ্য তথা অনস্বীকার্য। এমনকি আ‘লীগকে বাদ দিয়ে সেই ইতিহাস লেখাই যাবে না। একই সাথে দেশ শাসনে ভোট আর ভোটাধিকারের বাস্তবতাও সংবিধানে মৌলিক অধিকারে স্বীকৃত। সেই ভোট আর ভোটাধিকার আদায়ে শ্রম ও সংগ্রাম অশেষ। সেই শ্রম ও সংগ্রামের অন্যতম বাতিঘর বাংলাদেশ আ‘লীগ। দলের নেতাকর্মীরা হচ্ছে নিবেদিত অস্ত্র। দেশ স্বাধীন পরবর্তীতেও শাসক গোষ্টির বিরুদ্ধে লড়াই হয়েছে ভোটাধিকার নিয়ে। অবাধ, সুষ্ট, নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্য গর্জে উঠা আন্দোলন সংগ্রামের সাথে জড়িয়ে রয়েছে রাজনীতিক দল ও নেতাকর্মীদের প্রধান ভূমিকা। ‘গনতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরতন্ত্র নিপাত যাক‘ শ্লোগানের শহীদ নূর হোসেন আজও প্রেরণার উৎস । স্বৈরশাসনের পতন ঘটেছে, তারপর থেকেই চলছে গনতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ হয়নি ভোট আর ভোটাধিকার নিয়ে বঞ্চনা আজও। বঞ্চনা উত্তরণে রাজনীতিক দল ও নেতাকর্মীদের অগ্নিঝরা শ্রমও একেকটি ইতিহাস। সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভূমিধ্বস বিজয় লাভ করেছে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। কিন্তু নির্বাচনে ভোট আর ভোটাধিকারের নিয়ে জনমনে বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন আজ মুখে মুখে। একই প্রশ্ন বিজয় মহাজোট নেতাকর্মীদেরও। নির্বাচনে বিজয় ্ও সেই বিজয় অর্জনে নেতাকর্মীদের শ্রম মূল্যায়িত হয় দল ও বিজিত প্রার্থীর নিকট। ভোটারের উপস্থিতি সহ তাদের সমর্থন আদায়ে নেতা-কর্মীদের ঘাম ঝরানো শ্রম থাকতে হয় নিরংকুশ। কিন্ত এবারের বিজয়ে নেতাকর্মীদের শ্রম ছিল যেন নাটকীয় কর্মকান্ডের বৃত্তে আবদ্ধ। ছকে বাধা কর্মে দায়সারা ব্যস্ততা ছিল তাদের মধ্যে। চেতনার কোন রূপ-রসের উপস্থিত ঘটেনি নেতাকর্মীদের মাঝে। দেখা গেছে ভোটের আগেই বিজয়ের গন্ধ। প্রার্থী ও দলের কাছে তাদের মূল্যায়ন ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। অথচ পূর্বেকার সকল ভোট যুদ্ধে সেই নেতাকর্মীরাই মূল্যায়িত হয়েছে, চড়া দামে মান-অভিমান দুর করে প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয় অবস্থানে নিজকে সপে দিয়েছে। এবার সেই মূল্যায়ন বা মান- অভিমান আমলে নেয়নি প্রার্থী বা দল। তাই একান্ত মানিয়ে বা মেনে নিয়ে মাঠে প্রতীকের কদরেই কাজ করছেন দলের নেতাকর্মীরা বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্তভাবে। সে-কারনে তৃণমুলে দলের নেতাকর্মীরা দলের প্রার্থীদের বিজয় নিয়ে ছিলেন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে। নির্বাচনের দিন সেই দ্বিধা-দ্বন্দ্ব উবে যেয়ে কল্পনাতীত ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে মহাজোট প্রার্থীদের। কম শ্রমে অপ্রত্যাশিত এহেন ফলাফলে তাদের মধ্যেও দহনের শেষ নেই। কিভাবে ঘটলো, কি করে হলো, মাঠ বাস্তবতা বিপরীতে এমন ফলাফল, তা নিয়েও স্বস্তিতে নেই তারা। কম শ্রমে এই ফলাফল পাওয়ায় দলের নেতাকর্মীরাও বিব্রত। প্রার্থী বা দলের বিজয়ে তাদের কোন অবদান ছিল বা আছে সেই বিয়ষটিও বিবেচনায় নিতে পারছে না দলের নেতাকর্মীরা। তৃণমুলের অনেক নেতাকর্মীর সাথে আলাপে জানা গেছে, এই বিজয়ে আনন্দের মধ্যে আত্ম-তৃপ্তি নিয়ে কঠিন পরীক্ষায় তারা। তারা নিজেরাই উপলব্ধি করছে, নেতাকর্মীদের দাম যেন পড়ে গেছে এ নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের মধ্যে দিয়ে। প্রার্থী বা দলের বিজয়ে তাদের কৃতিত্বের অংক কোন হিসেবে করবে তারা। তাই মহাজোট নেতাকর্মীদের কোন পারদে মুল্যায়ন করবে প্রার্থী বা দল সেই প্রশ্ন এখন তাদের মধ্যে। নির্বাচনে নেতাকর্মীদের অনস্বীকার্য কার্যকর ভূমিকার বদলে, অকার্যকর করে বিপুল বিজয়ের এই বাস্তবতায়, দামহীন এ অবস্থার শেষ কোথায় গিয়ে দাড়াবে, সেই ভাবনা খুঁড়ে খুঁড়ে খাচ্ছে আ“লীগ নেতাকর্মীদের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মহাজোট

৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮
২০ ডিসেম্বর, ২০১৮

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ