পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেছেন, হিন্দু নেত্রী প্রিয়া সাহা বাংলাদেশের ৩ কোটি ৭০ লক্ষ ধর্মীয় সংখ্যালঘু নিখোঁজ থাকার যে অভিযোগ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে করেছেন তা সঠিক। সরকারের বিভিন্ন হিসেব অনুযায়ী, ১৯৭১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩ কোটি ৭০ লক্ষ হিন্দু রয়েছেন, যাদের মধ্যে একটি বড় অংশ ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন।
গতকাল সোমবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম “দৈনিক যুগশঙ্খ” নামক এক পত্রিকার সাক্ষাৎকারে গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক এ কথা বলেন। তিনি জানান, আজ সারা বাংলাদেশে প্রিয়া সাহার বক্তব্য নিয়ে ঝড় উঠেছে। কিন্তু সরকারের ‘ক’ ও ‘খ’ তফশিলের তালিকা দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন, প্রিয়া সাহার দেওয়া তথ্যে ভুল নেই।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতি গোবিন্দ বলেন, অসমে প্রকাশিত নাগরিক তালিকায় বাদ পড়া প্রায় ৪০ লক্ষ নাগরিক তো বাংলাদেশ থেকে নিখোঁজ হওয়া মানুষই। তারা বিভিন্ন সময়ে আশ্রয় নিয়েছেন। এখন আমরা স্বীকার করছি, এন আর সি থেকে বাদ পড়া ৪০ লক্ষ নাগরিক বাংলাদেশি ছিলেন। শুধু অসমেই নয়, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্ব ভারত সহ পুরো ভারতেই বাংলাদেশ থেকে নিখোঁজ ৩ কোটি ৭০ লক্ষ নাগরিকদের অধিকাংশই রয়েছেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু সহ অনেক নেতা-মন্ত্রী, বর্তমান ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার সহ অনেক কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী সহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক ব্যক্তিই বাংলাদেশের ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে তারা ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। তারা সবাই ৩ কোটি ৭০ লক্ষ নিখোঁজদের মধ্যে পড়েন।
গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, নিখোঁজ হিন্দুদের তালিকা তো সরকারই অর্পিত সম্পত্তি ‘ক’ এবং ‘খ’ তালিকায় গ্যাজেট আকারে প্রকাশ করেছে, তো প্রিয়া সাহার সত্য উচ্চারণে সবার গায়ে আগুন জ্বলছে কেন? অর্পিত সম্পত্তির তালিকায় উল্লিখিত ব্যক্তিদের কেউ কি দেখাতে পারবেন? তারা কি মিসিং নন? বাংলাদেশ সরকারের পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসেব কী বলছে?
তিনি বলেন, ১৯০১ সালে বাংলা ভূখণ্ডে মুসলিম ছিল ১ কোটি ৯১ লক্ষ ১৩ হাজার। আর হিন্দু ছিল ৯৫ লক্ষ ৪৫ হাজার। অর্থাৎ মুসলমান জনসংখ্যার অর্ধেক হিন্দু। ২০০১ সালে মুসলমান জনসংখ্যা ১১ কোটি ১০ লক্ষ ৭৯ হাজার এবং হিন্দু জনসংখ্যা ১ কোটি ১৩ লক্ষ ৭৯ হাজার। সম্প্রীতির হিসেব অনুসারে হওয়া উচিত ছিল সাড়ে ৫ কোটি। সরকারি হিসেব মতে, ৪ কোটি হিন্দু নিখোঁজ।
হিন্দু মহাজোটের নেতা বলেন, বর্তমান সরকার অর্পিত সম্পত্তির ‘ক’ আর ‘খ’ তফশিলে গ্যাজেট আকারে যে সব নাম প্রকাশ করেছে তারা কোথায়? অর্পিত সম্পত্তির তালিকায় প্রকাশিত মানুষদের প্রথমে ফিরিয়ে এনে তাদের সম্পত্তি ফেরতের ব্যবসা করেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা ওয়াশিংটনে আয়োজিত এক সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে গত ১৭ই জুলাই হোয়াইট হাউসে যান তিনি। সেখানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা মৌলবাদীদের নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। প্রায় ৩ কোটি ৭০ লক্ষ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নিখোঁজ হয়েছেন।
প্রিয়া সাহা সেখানে বলেন, “প্লিজ আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই। এখনও সেখানে ১ কোটি ৮০ লক্ষ সংখ্যালঘু মানুষ রয়েছেন। আমার অনুরোধ, আমাদের সাহায্য করুন। আমরা দেশ ছাড়তে চাই না। তারা আমার বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে, আমার জমি কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু বিচার হয়নি।”
তাঁর ওই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় বিভিন্ন মহলে। হাসিনা সরকারের তরফ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণের উদ্দেশ্যেই প্রিয়া সাহা এ ধরণের ‘বনাওট ও কল্পিত অভিযোগ’ করেছেন। বাংলাদেশে ফিরলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও ঘোষণা দেন একজন মন্ত্রী। ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শনিবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ওই বক্তব্য দিয়ে প্রিয়া সাহা ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ’ করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।