Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শবরিমালা মন্দিরে ঐতিহাসিক প্রবেশ দুই নারীর!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

ভারতের কেরালা রাজ্যের শবরিমালা মন্দিরে ৫৩ বছর পর প্রাচীন প্রথা ভেঙে প্রবেশ করে নতুন ইতিহাস গড়লেন দেশটির দুই নারী। মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছরের অর্থাৎ ঋতুকালীন বয়সের মহিলারা প্রবেশ করতে পারতেন না। বহু প্রাচীন কাল থেকে এই প্রথাই চলে আসছিল। এমনকি, মন্দিরে ঢোকার সময় বয়সের প্রমাণপত্রও দেখাতে হত মন্দির কর্তৃপক্ষকে। এই প্রথার বিরুদ্ধেই ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়ে জানায়, ধর্মাচরণে নারী-পুরুষ ভেদাভেদ করা যায় না। সব বয়সের মহিলাদের প্রবেশাধিকার দিতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট আদেশ দিয়েছিল ২৮ সেপ্টেম্বর। তার পর থেকে বহু মহিলা মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু আয়াপ্পার দর্শন হয়নি। মন্দিরে প্রবেশে বাধা দিয়েছে আয়াপ্পার ‘ভক্ত’রা। প্রতিবাদ-বিক্ষোভে আটকে দিয়েছেন মন্দিরে প্রবেশের রাস্তা। এত দিন পুলিশ-প্রশাসনও সেখানে ছিল কার্যত অসহায়। চার মাস পর অবশেষে বুধবার শবরিমালা মন্দিরে ঢুকে ইতিহাস তৈরি করলেন বছর চল্লিশের দুই মহিলা।
পুলিশের দাবি, সাত সকালেই মন্দিরে ঢুকে আয়াপ্পা স্বামীর মন্দিরে প্রার্থনা করে নির্বিঘ্নে ফিরেও এসেছেন তারা। সেই সঙ্গেই অবসান হল ১০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে বয়সের মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার। শুরু হল এক নতুন অধ্যায়ের।
জানা যায়, মঙ্গলবার মধ্যরাতে মন্দিরে ঢোকার জন্য শবরিমালা পাহাড়ের পেম্বা বেস থেকে যাত্রা শুরু করেন বিন্দু এবং কনকদুর্গা নামে ওই দুই মহিলা। তাদের দু’জনেরই বয়স ৪০-এর আশেপাশে বলে জানা গিয়েছে। তাদের কর্ডন করে নিয়ে যায় ছোট্ট একটি পুলিশের দল। ওই দলে ইউনিফর্ম পরা এবং সাদা পোশাকের পুলিশ ছিল। ভোর পৌনে ৪টা তারা পৌঁছে যান মন্দিরে। কালো কাপড় পরে তারা মন্দিরে ঢুকে আয়াপ্পা স্বামীর কাছে প্রার্থনা সেরে বিনা বাধায় নীচে নেমে আসেন। তাদের প্রবেশের পরপরই ‘শুদ্ধিকরণের’ জন্য মন্দির বন্ধ করে দেওয়া হয়।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, নারীরা মন্দিরে প্রবেশ করেছেন, এটা সত্য। যারা সেখানে যেতে চান তাদের সুরক্ষা দেওয়া পুলিশের দায়িত্ব।
হোয়াটস অ্যাপে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, কালো পোশাক পরে মন্দিরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন দুই নারী। তাদের সঙ্গে রয়েছে পুলিশ।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরও মন্দিরে প্রবেশে বাধা দিচ্ছিল একাধিক সংগঠন। মন্দিরের প্রায় এক কিলোমিটার আগে থেকেই কার্যত এই সংগঠনগুলি দেওয়াল তুলে দিয়েছিল। কেউ মন্দিরে প্রবেশের জন্য পাহাড়ে উঠতে গেলেই তাদের বাধা দিচ্ছিল। তেমনই একটি সংগঠন ‘আয়াপ্পা ধর্ম সেনা’র এক সদস্য রাহুল ঈশ্বর বলেন, ‘পুরো ব্যাপারটাই খুব সন্তর্পণে হয়েছে। জানা থাকলে আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতাম।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বর মাসেও একবার শবরিমালা মন্দিরে প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন সেই দুই নারী। তবে সে সময় তারা সেখান থেকে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন। সূত্র: এনডিটিভি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ