Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নাগরিকত্ব বিলের সব সংশোধনী খারিজ, আসামের ৩০ লাখের নাগরিকত্বের প্রমাণ জমা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ জানুয়ারি, ২০১৯, ৮:১২ পিএম

ভারতে প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব বিলে সব সংশোধনী খারিজ করে দিয়েছে যুগ্ম সংসদীয় সিলেক্ট কমিটি। এদিকে, আসামের ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেন্স (এনআরসি) বা নাগরিকপঞ্জির প্রথম প্রকাশিত খসড়া থেকে বাদ পড়া প্রায় ৪০.০৭ লাখের মধ্যে সোমবার শেষ হওয়া সময়সীমার মধ্যে নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন জানিয়েছেন ৩০ লাখ নাগরিক।
প্রতিবেশী মুসলিম দেশগুলোর সংখ্যালঘুদের জন্য ভারতে প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব বিলে বিরোধীদের আনা সব সংশোধনী খারিজ করে দিল যুগ্ম সংসদীয় সিলেক্ট কমিটি। সোমবার কমিটির বৈঠকে যাবতীয় সংশোধনী খারিজ করার পর জানানো হয়, আগামী ৪ জানুয়ারি কমিটির পরবর্তী বৈঠকে পেশ করা হবে নতুন নাগরিকত্ব বিলের খসড়া। ওই বৈঠকে তা অনুমোদনের পর ৭ জানুয়ারি সংসদে বিলের আকারে পেশ করা হবে।
উল্লেখ্য, লোকসভার গত নির্বাচনে এটাই ছিল বিজেপির প্রতিশ্রুতি। প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী নির্বাচনী প্রচারে বলেছিলেন, তিন প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের ‘অত্যাচারিত সংখ্যালঘুরা’ যদি ভারতে আশ্রয়প্রার্থী হন, তা হলে তাদের শরণার্থী হিসেবে গণ্য করা হবে। তারা ভারতের নাগরিক হওয়ার উপযুক্ত বলে গণ্য হবেন। প্রতিশ্রুতি রক্ষায় বিজেপি নাগরিকত্ব বিলে সংশোধন এনে তা পাস করাতে আগ্রহী। সে ক্ষেত্রে ওই তিন দেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি ও খ্রিষ্টান নাগরিকেরা চাইলে একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। ওই সময়ের মধ্যে তাদের ভোটদানের অধিকার ছাড়া অন্যান্য নাগরিক সুযোগ–সুবিধাও দেওয়া হবে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই কয়েকটি রাজ্যকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে, বিরোধীদের সঙ্গে এই বিলের বিরোধিতা করছে বিজেপির আসাম শাখাও। রাজ্যে বিজেপির শরিক দল অসম গণপরিষদও (অগপ) এই বিলের বিরোধিতা করছে দৃঢ়ভাবে। বিলটি পাস হলে তারা বিজেপির সঙ্গ ত্যাগেরও হুমকি দিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বে¡ও বিজেপি সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে বিলটি পেশ করতে আগ্রহী। তাদের কাছে এটি শুধু নির্বাচনী প্রতিশ্রতি রক্ষাই নয়, লোকসভা ভোটের আগে এই বিল ধর্মীয় মেরুকরণে সহায়ক হবে বলেও বিজেপি মনে করছে। যদিও ভোটের আগে এই বিল পাস হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এদিকে, পাঁচ মাস আগে প্রকাশিত আপডেটেড ন্যাশনাল রিজার্ভেশন অফ সিটিজেনস (এনআরসি) এর চূড়ান্ত খসড়া থেকে বাদ পড়াদের জন্য দেশটির সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী দাবি ও আপত্তি জানানোর বর্ধিত সময়সীমা ছিল সোমবার পর্যন্ত। এর মধ্যে আসামের বাদ পড়া প্রায় ৪০.০৭ লাখের মধ্যে নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন জানিয়েছেন ৩০ লাখ নাগরিক। খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত নাগরিকদের নাগরিকত্ব সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করে ৬০০ জন আপত্তিও জমা পড়েছে।
এনআরসি’র বিরুদ্ধে করা আপিলের পর্যবেক্ষণ করে দাবি ও আপত্তি দাখিলের সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর নির্ধারণ করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। দ্বিতীয় রাউন্ডে আবেদনপত্র যাচাইয়ের প্রক্রিয়া ১৫ ফেব্রয়ারি থেকে শুরু হবে।
আবেদন না করা ১০ লাখ লোকের সম্পর্কে জানতে চাইলে সরকারী সূত্র জানায়, ‘তারা আসল নাগরিক নয়। তারা বুঝতে পেরেছ আবার চেষ্টা করে লাভ হবে না।’
সম্পূর্ণ খসড়া থেকে বাদ দেওয়া ৩ কোটি ২৯ লাখ আবেদনকারীর মধ্যে ৪০.০৭ লাখ আবেদনকারীর জন্য নাগরিকত্ব প্রমাণের সময়সীমা ছিল ২৫ শে সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এই পরে সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করে।
এনআরসি কর্মকর্তারা জানান, গত পনেরো দিনের মধ্যে প্রমাণ জমা দেওয়ার গতি বেড়েছে। বাদ পড়াদের মধ্যে ৭৫% লোক প্রমাণ জমা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, নাগরিকপঞ্জিতে নাম ঢোকানোর জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১৫-র মে মাসে। এখনও পর্যন্ত ৬৮ লক্ষ ২৭ হাজার পরিবারের কাছ থেকে মোট সাড়ে ৬ কোটি নথিপত্র জমা পড়েছে। সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, দ্য হিন্দু।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ