বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পুণ্যভূমি সিলেটের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির বেশ পুরনো। রাজনৈতিক সৌহার্দ আর সম্প্রীতির দেখা মিলে সিলেটের নানা আয়োজনে। মঙ্গলবার আবারও এমন দৃষ্টান্ত দেখালেন সিলেটের প্রধান দুই দলের রাজনীতিবিদরা। দেশের অন্যপ্রান্তে যখন আওয়ামী লীগ-বিএনপি নেতাদের মধ্যে চলছে দূরত্ব, সিলেটে তখন একসাথেই বড়দিনের কেক কাটলেন দুই দলের নেতারা।
মঙ্গলবার সকালে খ্রিস্টানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উপলক্ষ্যে নগরীর নয়াসড়কস্থ গির্জায় সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির একসাথে বড়দিনের কেক কাটলেন। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সাথে তারা ভাগাভাগি করে নিলেন বড়দিনের আনন্দ।
উৎসবে অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ প্রমুখ।
বড়দিনের আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন গির্জার ফাদারসহ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিশিষ্টজন, জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
এমন শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বাম দলগুলোর নেতারা জানান, গণভোটে বাংলাদেশে যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিকভাবেই সিলেটের মানুষ শান্তি ও সম্প্রীতির ঐতিহ্য ধারণ এবং চর্চা করে আসছে। বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রতিদ্বন্দ্বী দলের নেতাকর্মীরা একে-অন্যের সঙ্গে নানা বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে। তবে দলগুলোর মধ্যে কয়েক দশক আগে যতটা আন্তরিকতা ও সৌহার্দ্য ছিল, এখন তা হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু নির্বাচনে সহিংসতা, হানাহানিতে জড়ানোর মতো সম্পর্কের অবনতি এখনো হয়নি।
সিলেটে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই বড় দলের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের এই নজির অন্য জেলার নেতাকর্মীরা অনুসরণ করলে নির্বাচনী সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনা এড়ানো যাবে, এমনটা মনে করছেন দেশের বিশিষ্টজনরা।
সিলেটে দেয়ালজুড়ে অর্থমন্ত্রী-শিক্ষামন্ত্রীকে
নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক পোস্টার
সিলেট ব্যুরো
দেখলে মনে হবে কোন বিপনি-বিতান কিংবা পণ্যের বিজ্ঞাপন। কিংবা বড় কোন কর্পোরেট কোম্পানির নতুন প্রণোদনার (অফার) প্রচারণা পোস্টার। একটু সময় নিয়ে মনোযোগ দিয়ে পড়লে পরিষ্কার হয়ে আসবে এটি সরকার বিরোধী বিভ্রান্তিমূলক পোস্টার।
যাই হোক পোস্টারের বিশ্লেষণ করলে এটি অন্তত পরিষ্কার হওয়া গেছে এটি আওয়ামী লীগ বিরোধীদের কাজ। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখেই অপপ্রচারের কৌশল হিসেবেই এ কাজটি করা হয়েছে।
রবিবার দিনগত রাত থেকে সিলেট নগরীর ব্যস্ততম জিন্দাবাজার থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের দেয়ালে পোস্টারটি শোভা পাচ্ছে। বৈদ্যুতিক খুঁটিতেও শোভা পাচ্ছে পোস্টার। এখানে যে দু’টি পোস্টারের ছবি দেয়া হয়েছে দু’টিই জিন্দাবাজার থেকে নেয়া।
চাররঙ্গা পোস্টারে বর্তমান সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে বিদ্রুপ করা হয়েছে। কুইজ প্রতিযোগিতার শিরোনামে পোস্টারে প্রশ্নের মাধ্যমে কাউকে, আবার কাউকে উত্তরের মাধ্যমে করা হয়েছে ব্যঙ্গবিদ্রূপ। পোস্টারটির শুরু এভাবে ‘কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ নিন’। আর শেষটা ‘জিতে নিন বাংলাদেশ’ দিয়ে।
৬টি কুইজের মধ্যে ২ নম্বরটি হচ্ছে সিলেটের প্রবীণ ব্যক্তিত্ব ও বর্তমান সরকারের টানা দুইবারের অর্থমন্ত্রী ও মর্যাদার আসনখ্যাত সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল মাল আবদুল মুহিতকে ইঙ্গিত করে। প্রশ্নটিতে অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কৌশলে অপপ্রচার চালানো হয়েছে।
পরের প্রশ্নটি করা হয়েছে সাবেক প্রধান বিচারপতি সিলেটের সন্তান সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে নিয়ে। এটির মাধ্যমে সিনহাকে ইস্যু করে সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও এটর্নি জেনারেল মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হয়েছে।
৪ নম্বর প্রশ্নটি টানা দুই মেয়াদের শিক্ষামন্ত্রী ও সিলেট-৬ আসনের সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদকে নিয়ে। বিগত মেয়াদে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের ঘুষ কেলেঙ্কারির বিষয়ে নাহিদের করা একটি বিতর্কিত মন্তব্যকে কেন্দ্র করে প্রশ্নটি পোস্টারে তুলে ধরা হয়েছে।
রাতের আঁধারে কে বা কারা পোস্টারটি দেয়ালে দেয়ালে সাঁটিয়েছে সে ব্যাপারে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। পোস্টারের নিচেও কারোর নাম নেই।
অন্যান্য পোস্টারে ছাপাখানার নাম থাকলেও এটিতে কোন নাম নেই। তাই নগরজুড়ে সাঁটানো পোস্টারটি থেকে বুঝা যাচ্ছে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতেই এরকম পোস্টার সাঁটিয়েছে সরকার বিরোধী কোন পক্ষ বা গোষ্টি।
বিভ্রান্তিমূলক পোস্টার সাঁটানো নিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া এন্ড কমিউনিটি) জেদান আল মূসা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমরা পোস্টার সম্পর্কে অবগত হয়েছি। এগুলোর ব্যাপারে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। আশাকরি এর নেপথ্যে যারা আছে তাদেরকে দ্রুত চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।