Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

যথাযোগ্য মর্যাদায় বড়দিন উদযাপিত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

যথাযোগ্য মর্যাদায় সারাদেশে খ্রিস্টান স¤প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড়দিন’ উদযাপিত হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে এ উৎসব পালিত হয়। করোনা বিধি-নিষেধ মেনেই এই অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেয়া হয়।
বড়দিন উপলক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের গীর্জায় সমবেতভাবে দেশ ও জাতির কল্যাণে প্রার্থনা, আলোক প্রজ্জ্বালন, কেক কাটা ও ধর্মীয় সঙ্গীত পরিবেশনসহ নানা আয়োজনের মাধ্যমে এ উৎসব উদযাপন করা হয়। ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে গির্জার ভেতরে বর্ণাঢ্য সাজসজ্জায় প্রতীকী গোশালা বসানো হয়েছিল। বেথলহেমের গরিব কাঠুরের গোয়ালঘরে যিশুর জন্মের কথা স্মরণ করে ধর্মীয় আবহ সৃষ্টি করতে এই গোশালা বসায় খ্রিস্টান স¤প্রদায়ের মানুষ। ঐতিহ্যবাহী ও জাঁকজমকপূর্ণ এ সাজসজ্জায় রঙিন কাগজ, ফুল ও আলোর বিন্দু দিয়ে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দনভাবে। বিশেষ প্রার্থনা ও খাবারের আয়োজন রাখা হয়েছে।
বড়দিন উপলক্ষে গির্জাগুলোতে শোভা পেয়েছে বর্ণাঢ্য আলোকসজ্জা। তবে এবার বড়দিন উপলক্ষে মেলার আয়োজন করা হয়নি। গির্জার প্রবেশমুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও পানি দিয়ে হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। গির্জায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক ছিল।
ঢাকা মহাধর্ম প্রদেশের আর্চ বিশপ বিজয় এন ডি ক্রুজ জানিয়েছেন, করোনা মহামারির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। বড়দিন উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এন ডি ক্রুজ বলেন, বিশ্বের কোটি কোটি খ্রিস্টান ২৫ ডিসেম্বর বিশ্বাসভরা অন্তরে গভীর আশা ও আনন্দ নিয়ে ক্রিসমাস অর্থাৎ বড়দিন উদযাপন করে। প্রভু যিশু শিক্ষা দেন, ঈশ্বর আমাদের সবাইকে ভালোবাসেন। সূর্যের আলো ও বৃষ্টির ধারা যেমন সবার ওপর ঝরে পড়ে, ঠিক তেমনি ঈশ্বরের ভালোবাসা সবার জন্য উন্মুক্ত ও অবারিত। আমরা যেন একে অন্যকে ভালোবাসি এবং অন্যের সেবা করি। প্রতিবেশী ভাই বোনদের, বিশেষ করে অন্নহীন, বস্ত্রহীন, অসায় ও গরিব দুঃখী মানুষের যখন আমরা সেবা করি, তখন তিনি (ঈশ্বর) সেবা গ্রহণ করেন। তিনি শিক্ষা দেন, আমরা যাতে পাপকে ঘৃণা করি, পাপীকে নয়। তিনি বাণী প্রচারের মধ্য দিয়ে এ জগতে যে ঐশরাজ্যের সূচনা করেছিলেন, তার প্রধান মূল্যবোধগুলো হলো ন্যায্যতা, শান্তি ও পবিত্রাত্মায় নির্মল আনন্দ।
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, খ্রিস্ট ধর্মের প্রবর্তক প্রভু যিশু ঈশ্বরের পুত্র। পৃথিবীতে শান্তির বাণী ছড়িয়ে দিতে, মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালনা করতে এবং সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচারের লক্ষ্যে প্রভু যিশুর পৃথিবীতে আগমন ঘটেছিল। দুই হাজার ২১ বছর আগে তিনি আশ্চর্যজনকভাবে ঐশী শক্তিতে মেরির কোলে জন্মগ্রহণ করেন। মানবজাতির প্রতীক্ষিত মুক্তিদাতা প্রভু যিশু ৩০ বছর বয়সে প্রকাশ্যে প্রচার শুরু করেন।
বড়দিন উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ। এসব বাণীতে তাঁরা খ্রিস্টান স¤প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানিয়ে সুখী সমৃদ্ধ ও অসা¤প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহŸান জানিয়েছেন। সরকারি বেসরকারি রেডিও, টিভি ও সংবাদপত্রগুলো এ দিবস উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান ও প্রকাশনার মাধ্যমে দিনটির তাৎপর্য তুলে ধরেছে।
বড় দিন উপলক্ষে রাজধানীর অভিজাত প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল, ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল, র‌্যাডিসন হোটেল, লা মেরিডিয়েন হোটেল, ওয়েস্টিন হোটেল, ওয়েসিস হোটেল, ঢাকা রিজেন্সি হোটেলসহ অন্যান্য হোটেলে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল। হোটেলগুলো রঙিন বাতি, ক্রিসমাস ট্রি ও রং বেরঙের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। সীমিত পরিসরে ছিল সান্তা ক্লজের চমকপ্রদ উপস্থাপনা এবং শিশু-কিশোরদের জন্য নানা উপহার। কোথাও কোথাও বড়দিনের কেক কাটা হবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছে। বড়দিনের উৎসব ঘিরে দেশের সব গির্জার পাশাপাশি অনুষ্ঠানস্থলে ছিল কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। মোতায়েন করা হয় পুলিশ, র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য। রাজধানীর ৬৫টি গির্জা ও আশপাশের এলাকা সিসিটিভির আওতায় নেয়া হয়েছে। যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে চার্চগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর পাশাপাশি নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী সতর্ক ছিল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বড়দিন উদযাপিত
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ