Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আইএস পরাজিত দাবি ট্রাম্পের

সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) পরাজিত করা হয়েছে বলে দাবি করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বৃহষ্পতিবার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। সিরিয়াতে মার্কিন বাহিনীর অবস্থানের পেছনে এই জয়ই একমাত্র কারণ ছিল বলে তিনি জানান। এর পরেই সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে টুইটারে পোস্ট করা এক সংক্ষিপ্ত ভিডিওতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আইএসের বিরুদ্ধে আমরা জয়ী হয়েছি। আমরা তাদের পরাজিত করেছি। আমরা তাদের বাজেভাবে পরাজিত করেছি। আইএসের অধিকৃত ভূমি আমরা ফেরত নিয়েছি। আমার প্রেসিডেন্সির সময়কালে সিরিয়াতে অবস্থানের এটাই ছিল একমাত্র কারণ। এখন আমাদের সেনাদের বাড়ি ফেরার পালা।’ তবে কবে বা কত দ্রুত তাদের ফেরত আনা হবে, ট্রাম্প সে কথা জানাননি। পরে হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানায়, সিরিয়া থেকে সেনা ফেরত আনা শুরু হয়েছে।
এদিকে, হঠাৎ করেই ট্রাম্পের এমন ঘোষণায় হতভম্ব মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন। তাদের হিসাব অনুযায়ী, সিরিয়ায় এখনো প্রায় ১৭ হাজার আইএস যোদ্ধা তৎপর আছে। সাম্প্রতিক সময়ে আইএস নতুন করে শক্তি সঞ্চয় করছে। তাদের নেতা আবু বকর বাগদাদিও সেখানেই অবস্থান করছেন বলে সবার ধারণা। এর আগে বুধবার সিরিয়ায় অবৈধভাবে মার্কিন সেনা উপস্থিতি শান্তির পথে বিপজ্জনক বাধা বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া। একইসঙ্গে সিরিয়া থেকে আমেরিকার সেনা সরানোর দাবি জানিয়েছিল মস্কো। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা মস্কোয় এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বলেছেন, যেহেতু সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী লড়াইয়ের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র একটি পক্ষ, সে কারণে সিরিয়ায় আমেরিকার সেনাদের অবৈধ উপস্থিতি শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মারাত্মক বাধা সৃষ্টি করছে।
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত অস্বাভাবিক রকমের ভূরাজনৈতিক বিভক্তি সৃষ্টি করবে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই করা মার্কিন বাহিনীর সমর্থনপুষ্ট কুর্দি যোদ্ধাদের ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তবে এসবের কিছুই বিবেচনায় নেননি ট্রাম্প। মার্কিন এক কর্মকর্তা বলেন, ট্রাম্প গত মঙ্গলবার সিরিয়া বিষয়ে তার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেন। পুরো সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উপস্থিত কর্মকর্তাদের তখন বলেন, ‘পুরোপুরি প্রত্যাহার। সবাই মানে সবাই।’
তবে, আইএস যে সম্পূর্ণরূপে পরাজিত হয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার ট্রাম্পের কাছে এমন নিশ্চয়তা চেয়েছে। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দফতর থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এখনো অনেক কাজ বাকি আছে। তাদের হুমকি থেকে এখনো আমরা দৃষ্টি সরাতে পারি না।
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ইসরাইল বলেছে, এই অঞ্চলে প্রভাব ধরে রাখতে যুক্তরাষ্ট্রকে অন্য পন্থা খুঁজতে হবে। তবে সিরিয়া অবশ্য সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে খুশি। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখরোভা বলেছেন, সিরিয়ার রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে এ সিদ্ধান্ত যথার্থ হয়েছে।
সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে সবচেয়ে খুশি হওয়ার কথা তুরস্কের। মার্কিন সহায়তায় সিরিয়ায় যুদ্ধরত কুর্দিদের সাথে তুরস্কের বিরোধ অনেক আগে থেকেই। তুরস্ক তাদেরকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে মনে করে। এই সিদ্ধান্ত সে হিসেবে তুরস্কের জন্য একটি বড় জয়। গত শুক্রবার ট্রাম্প ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান টেলিফোনে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন।
উল্লেখ্য, সিরিয়ায় আইএসবিরোধী যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য দামেস্কের অনুমতি ছাড়াই দেশটির উত্তরাঞ্চলে প্রায় দুই হাজার সেনা মোতায়েন করেছিল আমেরিকা। সেনা পাঠানোর পর মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করেছিলেন, দেশটি থেকে আইএস জঙ্গিগোষ্ঠীকে উৎখাতে কয়েক দশক পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। সূত্র : রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিরিয়া

১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ