Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কাশ্মীরে সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত ৭ নিরীহ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:৫৭ পিএম

অভিযান শুরু হয়েছিল জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। তার জেরে শেষ পর্যন্ত নিহত হলেন সাত জন স্থানীয় বাসিন্দা। ইন্দোনেশিয়া থেকে এমবিএ ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফেরা এক যুবক-সহ এই সাত জনের মৃত্যু নিয়ে কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছে রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের প্রশাসন।

পুলিশ জানিয়েছে, আজ ভোরে পুলওয়ামার সিরনু গ্রামে জঙ্গিদের উপস্থিতির খবর পেয়ে অভিযানে নামে যৌথ বাহিনী। ওই এলাকায় আত্মগোপনকারী জঙ্গিদের মধ্যে প্রাক্তন সেনা জাহুর আহমেদ ঠোকরও রয়েছে বলে জানতে পেরেছিলেন গোয়েন্দারা। গত বছরের জুলাই মাসে ঠোকর বারামুলার সেনা ছাউনি থেকে রাইফেল চুরি করে পালায়। তার পরে জঙ্গি দলে যোগ দেয় সে।

পুলিশ জানিয়েছে, তল্লাশির সময়ে জঙ্গিরা জওয়ানদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে সংঘর্ষ শুরু হয়। তাতে নিহত হন সাবর কিষণ সিংহ রাজপুত নামে এক সেনা। নিহত হয় তিন জঙ্গিও। ঠোকর ছা়ড়া নিহত অন্য দুই জঙ্গির পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

পুলিশ জানিয়েছে, জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষ মিনিট পঁচিশের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। কিন্তু তার পরেই বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করে এক দল বিক্ষোভকারী। সেনার গাড়িতে উঠে পড়ার চেষ্টা করে অনেকে। পুলিশের দাবি, প্রথমে সতর্ক করার জন্য শূন্যে গুলি ছোড়া হয়। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি সামলাতে না পেরে গুলি ছো়ড়ে বাহিনী।

নিহতদের মধ্যে রয়েছেন পুলওয়ামার বাসিন্দা আবিদ হুসেন। ইন্দোনেশিয়া থেকে এমবিএ ডিগ্রি শেষ করে দেশে ফিরেছিলেন তিনি। তাঁর স্ত্রী ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক। ওই তরুণ দম্পতির একটি তিন মাসের শিশুও রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত শাহবাজ আলি, সুহেল আহমেদ, লিয়াকত আহমেদ, আমির আহমেদ পাল্লা, আবিদ হুসেন লোন ও মুর্তাজাও পুলওয়ামারই বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে মুর্তাজার বয়স চোদ্দো। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সাত জনেরই মাথা ও বুকে গুলি করা হয়েছে। কাশ্মীরের ডিভিশনাল কমিশনারকে পুলওয়ামার ঘটনা নিয়ে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল। সেইসঙ্গে সংঘর্ষস্থলে না আসতে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুরোধ করেছেন তিনি।

আহত ৭০ জনের মধ্যে ছ’জনকে আনা হয়েছে শ্রীনগরের হাসপাতালে। তাঁদের অস্ত্রোপচার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।


সাত জনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই অঘোষিত হরতাল শুরু হয় দক্ষিণ কাশ্মীর, শ্রীনগর ও বাদগামে। শ্রীনগরের কিছু অংশেও বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছো়ড়া হয়। পান্থা চক এলাকায় ব্যারিকেড বসিয়েছে সেনা ও পুলিশ। আপাতত সং‌বাদমাধ্যমেরও ওই ব্যারিকেড পেরিয়ে পুলওয়ামায় যাওয়ার অধিকার নেই।

উপত্যকায় চার দিনের হরতাল ডেকেছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। রাজ্যপালের প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে সরব মূলস্রোতের দলগুলিও। পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির বক্তব্য, ‘‘কোনও দেশ তার নাগরিকদের হত্যা করে লড়াইয়ে জিততে পারে না। রাজ্যপালের প্রশাসন সাধারণ মানুষের প্রাণরক্ষা করতে পুরোপুরি ব্যর্থ।’’ ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লার কথায়, ‘‘এটাকে গণহত্যা ছাড়া কিছু বলা যায় না।’’



 

Show all comments
  • Shahinur islam ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৪:০০ পিএম says : 0
    Jara manos hotta kore tara manosik rogi.je marlo she papi.hindo boddo sik Kristen moslim.jekono dormer lok hok na keno.indin armi manosik rogi je kono karone hoice.
    Total Reply(0) Reply
  • Hasan ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৭:০৫ পিএম says : 0
    কাশ্মিরে, ফিলিস্তিনে যখন নিরীহ মুসলিমদের গুলি করে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয় তখন বিশ্বের তথাকথিত মানবাধিকার কর্মীরা যেন মূক ও বধির হয়ে যায় আর অন্য সময় তাদের আস্ফালনের সীমা থাকে না।
    Total Reply(0) Reply
  • রিপন ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১১:৫৫ পিএম says : 0
    আজকের হিন্দুস্তানী সৈন্যরা অস্ত্র ধারণ ও বহন উভয়টিরই অযোগ্য। নইলে নিরীহ সিভিলিয়ানদের গুলি করে কেন মারতে হবে তাদের? অন্যায় অপকর্ম করলে মানুষ তো খেপবেই। জালিম সেনাদেরও ছেড়ে কথা কইবে না সংক্ষুব্ধ জনরোষ - এটিই স্বাভাবিক। বোন ফেলানির ঘটনায় আমরা কি ক্ষেপে নেই? হাতের কাছে জুতমতো পেলে, এক ফেলানির বদলে ক'টা বিএসএফ যে সাবড়ে দেবে সংক্ষুব্ধ জনরোষ সে বিষয়ে হাতেকলমে প্রমাণ মিলে যাবে সময় সুযোগ মিললে। আমার বোন ফেলানির করুণ স্মৃতি চিরজাগরুক হয়ে আছে, থাকবে, - বাংলাদেশের হৃদয়ে!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কাশ্মীর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ