Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কংগ্রেসের পেছনে লাইন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পাঁচটি রাজ্যসভা নির্বাচনের তিনটিতে বিজয়ী হয়েছে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস। এইসব রাজ্যে তারা ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিরুদ্ধে দ্বিমুখী লড়াইয়ে নেমেছিল। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দলের বিপরীতে নিজেদের প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে কংগ্রেস।
এই নির্বাচন ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে কংগ্রেস-বিজেপির দ্বিমুখী লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি করেছে। আঞ্চলিক দলগুলোকে এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন দলের পক্ষে যাবে তারা। বিজেপির বিরোধী দলগুলোকে এখন জোট গড়তে কংগ্রেসকে নেতা হিসেবে মেনে নিতে হবে।
বিগত কয়েক মাস ধরে দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু নেতা হিসেবে আঞ্চলিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করছেন এবং নিজেকে বিজেপি-বিরোধী জোট গড়ার মতো রাজনীতিবিদ হিসেবে তুলে ধরেছেন। যদিও কংগ্রেসের সাথে জোটে থেকেই প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন নাইডু, তবে মনে হচ্ছিল যেন আঞ্চলিক দলগুলোই এখানে নেতৃত্ব দেবে এবং তাদেরকে সমপর্যায়ের দল হিসেবে কংগ্রেসকে মেনে নিতে হবে। প্রথমত, কংগ্রেস জোটের ব্যাপারে আগ্রহী আঞ্চলিক দলগুলো প্রাচীন এই দলটির সাথে শক্ত দরকষাকষি করতে চেয়েছিল। দ্বিতীয়ত, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, বিজেপির বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রসের আছে কি-না, সেটা নিয়েও সন্দেহ ছিল।
বাস্তবে নাইডু বেশ কয়েকটি উপলক্ষ্যে এ কথা জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, বিজেপি-বিরোধী জোটের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীর পদটি উন্মুক্ত রাখা হয়েছে এবং আপাতত তাদের মনোযোগ মোদিকে মোকাবেলার জন্য শক্তি সঞ্চয়। এটা থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, আঞ্চলিক খেলোয়াড়গুলো কংগ্রেসকে শর্তহীন নেতা হিসেবে মেনে নিতে তৈরি ছিল না। তবে ক্ষমতাসীন দলের দুর্গ ছত্তিশগড়, রাজস্থান এবং মধ্য প্রদেশে বিজেপির বিরুদ্ধে জয়লাভের পর এই সন্দেহের জায়গায় একটা আত্মবিশ্বাস ও স্বচ্ছতা তৈরি হয়েছে এবং আগামী ২০১৯ সালের নির্বাচনও যে দুই মেরুর নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সেটা নিশ্চিত করেছে।
এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, এই তিনটি রাজ্যে কংগ্রেস বিজেপির বিরুদ্ধে একা একাই জয়লাভ করেছে। ছোটখাটো উপ-আঞ্চলিক দলগুলোর সাথে তাদের জোট ছিল কিন্তু এখানে তারা বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) মতো আঞ্চলিক বড় দলগুলোর সাথে জোট গড়ার চেষ্টা করেনি তারা।
অন্যদিকে, কংগ্রেসের জন্য সবচেয়ে খারাপ ফল নিয়ে এসেছে ভারতের নবীনতম রাজ্য তেলেঙ্গানা। কংগ্রেস এখানে নাইডুর তেলুগু দেশম পার্টির সাথে জোট করেছিল, কিন্তু বাস্তবে কংগ্রেস টিডিপির কাছে আসনের একটা বড় অংশ ছেড়ে দিয়েছিল। এই জোটকে হারিয়ে দিয়েছে ক্ষমতাসীন মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও ও তার দল তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি (টিআরএস)। ১১৯টি আসনের মধ্যে ৮৮টি আসন পেয়ে ভূমিধস বিজয় পেয়েছে তারা।
যারা সুস্পষ্ট বিজেপি-বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেছে, তাদেরকে এখন কংগ্রসের জাতীয় নেতৃত্বকে মেনে নিতে হবে। অন্ধ্র প্রদেশের টিডিপি, তামিল নাড়ুর দ্রাবিড় মুন্নেতরা কাজাগাম (ডিএমকে) এবং উত্তর প্রদেশের সমাজবাদী পার্টির মতো তারা হয়তো নিজেদের এলাকায় প্রধান ভূমিকা পালন করবে, কিন্তু তাদেরকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোটের অংশ হিসেবেই নির্বাচনে যেতে হবে। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ