২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
আমাদের দেহের কোষসমূহ ও আন্তকোষীয় পদার্থের অতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল বিভিন্ন রকম লিপিড। নিদিষ্ট পরিমান লিপিড (কোলেস্টেরল) যেমন জীবনকে বাঁচিয়ে রাখে, তেমনি লিপিডের কোন এক বা একাধিক উপদানের মাত্রা কম বেশি হলে তা অসুখের ঝুঁকি বাড়ায়। এখন এটা প্রতিষ্ঠিত যে, রক্তে অস্বাভাবিক মাত্রায় লিপিডের উপস্থিতি হৃদরোগ ও রক্তনালির অসুখের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এটি যাদের ডায়াবেটিস নেই তাদের জন্য যেমন সত্য, তেমনি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও তীব্রভাবে সত্য । রক্তের অস্বাভাবিক লিপিড টাইপ২ ডায়াবেটিস রোগীদের হৃদরোগ ও রক্তনালির অসুখ ২ থেকে ৪ গুন বৃদ্ধি করে।
রক্তের লিপিডের পাঁচটি উপদানের মধ্যে টাইপ২ ডায়াবেটিসে ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমান বেড়ে যায়, এইচডিএল (উপকারি কোলেস্টেরল)-এর পরিমান কমে যায়। তবে এলডিএল (অপকারি কোলেস্টেরল)-এর পরিমান প্রায় স্বাভাবিক থাকে। যাদের ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ নেই তাদের জন্য রক্তে এলডিএল-এর নিরাপদ মাত্রা ১৩০ মিলিগ্রাম / ডিএল-এর কম এবং এইচডিএল ৪০ মিলিগ্রাম / ডিএল-এর উপরে। আর যাদের ডায়াবেটিস আছে (অথবা কোন রকম হৃদরোগ আছে) তাদের রক্তে এলডিএল ৭০ মিলিগ্রাম / ডিএল-এর কম ও এইচডিএল-এর পরিমান ৪০ মিলিগ্রাম/ ডিএল-এর বেশি।
ডায়াবেটিস রোগীর রক্তের অতিরিক্ত ট্রাইপ্লিসায়াইড একটি বড় ঝুঁকি। এজন্য এটিকে সহনীয় বা নিরাপদ মাত্রায় রাখার জন্য প্রায়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে গুরুত্ব সহকারে। রক্তের লিপিড সঠিক মাত্রায় রাখার প্রাথমিক পদক্ষেপ হল জীবন-যাপন পরিশুদ্ধিকরণ। এর মাধ্যে আছে দৈহিক ওজন কমানো, শারীরিক শ্রম বৃদ্ধিকরণ, সমসত্ত¡ চর্বি গ্রহন কমানো ও একই সাথে অসমসত্ত¡ চর্বি গ্রহন বৃদ্ধিকরণ, শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়া কমানো এবং মদ্য পান কমানো । আর রক্ত গ্লুকোজের মাত্রা সঠিক পর্যায়ে রাখতে পারলে কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হবে। এক্ষেত্রে ইনসুলিন ইনজেক্শন গ্রহন যথেষ্ট সহায়ক হয়।
যারা এসব পদ্ধতি অবলম্বন করেও রক্তের কোলেস্টেরল নিরাপদ মাত্রার আনতে ব্যর্থ হচ্ছেন, তাদের কোলেস্টেরল কমাবার জন্য খাবার ওষুধ প্রয়োজন হয়। তবে বর্তমান ধারনা মতে চলিশোর্ধ ডায়াবেটিস রোগীদের প্রত্যেককেই লিপিড কমাবার ওষুধ সেবন করতে দেয়া উচিত। তীব্রভাবে লিপিড কমানোর ওষুধ ব্যবহার করে ডায়াবেটিস রোগীদের হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো যায়। রক্তের লিপিড (কোলেস্টেরল) কমাতে যে সব ওষুধ ব্যবহার করা হয় তার নাম নিচে দেওয়া হলঃ
১। ফাইব্রেট্স - বেনাজিফাইব্র্ট্সে, ফেনোফাইব্রেট্স, জেমফিব্রোজিল
২। নিকোটিনিক অ্যাসিড
৩। স্ট্যাটিন্স: অ্যাটোরভাস্ট্যাটিন, ফ্লুভ্যাস্টিন, লোভ্যাস্টাটিন, প্র্যাভ্যাস্ট্যাটিন, রসুভ্যাস্ট্যাটিন, সিম্ভ্যাস্ট্যাটিন
ডাঃ শাহজাদা সেলিম
সহকারী অধ্যাপক
এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ
মোবাঃ ০১৭৩১৯৫৬০৩৩, ০১৫৫২৪৬৮৩৭৭, ০১৯১৯০০০০২২
Email: [email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।