Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতে বিচারকের আসনে রূপান্তরকামী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৯:০৫ পিএম

অনাথ আশ্রম থেকে লড়াই শুরু। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মরিয়া তাগিদের সঙ্গে আরও একটা দুরূহ লক্ষ্য ছিল তার। নিজের রূপান্তরকামী সত্ত্বাকে শত বাধার মধ্যে সমাজে গ্রহণযোগ্য করা। শনিবারের দিনটি ছিল বছর তেইশের সুমনা প্রামাণিকের জিতে যাওয়ার দিন। জাতীয় লোক আদালতে এ দিন বিচারকের আসনে বসে উদাহারন তৈরি করলেন।
নদিয়া জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের মতে, রূপান্তরকামীরা সমাজেরই এক জন, এই ইতিবাচক বার্তা দিতেই এমন সিদ্ধান্ত। রূপান্তরকামীদের অধিকার অর্জনের লড়াইয়ে এই ঘটনাকে বড় পদক্ষেপ হিসাবে দেখা হচ্ছে।
জেলা আদালত চত্বরে রয়েছে ‘অল্টারনেটিভ ডিসপিউট রেজোলিউশন সেন্টার’। শনিবার সেখানেই বসে জাতীয় লোক আদালত। তিনটি বেঞ্চ ছিল। প্রতি বেঞ্চে তিন জন করে বিচারক। এর মধ্যে একটি বেঞ্চের অন্যতম বিচারকের আসনে বসেন সুমনা।
প্রায় এক হাজার মামলা বকেয়া ছিল আদালতে। তার মধ্যে এ দিন প্রায় সাড়ে চারশো মামলার নিষ্পত্তি হয়। জেলা লিগাল সার্ভিস অথরিটির সম্পাদক মদনলাল জানা বলেন, ‘সুমনা প্রামাণিক কল্যানী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন। সংবিধান অনুযায়ী সব বিষয়ে তার সমানাধিকার রয়েছে। আমরা সেই বার্তাই দিতে চেয়েছি সকলের কাছে।’ রূপান্তরকামীদের প্রতি মানুষের অযথা বিদ্বেষ, ভূল ধারণা যাতে কেটে যায়, সমাজে তারা যেন সুস্থভাবে থাকতে পারেন, তার জন্যই এমন পরিকল্পনা বলে জানানো হয়েছে।
মাত্র ছয় বছর বয়সে তার নিজের পরিবার ত্যাগ করেছিল সুমনাকে। ছেলে ‘অন্যরকম’ বুঝে অভিভাবকেরা মানতে পারেননি। রেখে এসেছিলেন করিমপুরে একটি অনাথ আশ্রমে। সেখান থেকেই করিমপুর জগন্নাথ হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন। কৃষ্ণনগরের বিজয়লাল ইন্সটিটিউট থেকে পাশ করেন উচ্চ মাধ্যমিক। তার পর বগুলা শ্রীকৃষ্ণ কলেজ থেকে গনিতে অনার্স নিয়ে স্নাতক হওয়ার পর কল্যানী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বর্ণপদক নিয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। প্রাইভেট টিউশনি করে পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন। এখন কৃষ্ণনগরে ঘর ভাড়া নিয়ে একাই থাকেন।
সুমনা বলেন, ‘রূপান্তরকামী হিসাবে প্রতিদিন অত্যাচারিত হই আমরা। প্রতিদিন যুদ্ধ চালাতে হয় আমাদের। আজ এই জায়গা পেয়ে সত্যিই খুব ভাল লাগছে। সকলের থেকে খুব ভাল ব্যবহার ও সম্মান পেয়েছি। লড়াইয়ে অনেক এগিয়ে গেলাম।’ সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ