মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
গো-হত্যার গুজবে ভারতের উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহর জেলায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে এক পুলিশ ইন্সপেক্টরসহ ২ জন নিহত হয়েছেন। অবরোধ-বিক্ষোভ-প্রতিবাদ, পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর-গুলি, পুলিশের পাল্টা গুলি, থানা ভাঙচুর, পুলিশ-ফাঁড়ি ও গাড়িতে আগুন ধরানোসহ নানা অরাজকতা চলে সেখানে। এসময় গুরুতর আহত হন আরও দুই পুলিশ সদস্য। এ ঘটনায় পুলিশের এফআইআরে প্রধান অভিযুক্ত হিসাবে উঠে এসেছে বজরং দলের নেতা যোগেশ রাজের নাম।
সেখানকার ডিস্ট্রিক ম্যাজিস্ট্রেট অনুজ কুমার ঝা জানিয়েছেন, বিক্ষোভ থামাতে গিয়ে পুলিশের সাথে জনতার সংঘর্ষ হলে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে স্থানীয় সায়না থানা কর্মকর্তা সুবোধ কুমার সিং নিহত হন।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে যোগেশ ছাড়া আরও চার জনকে গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে রয়েছেন ভিএইচপি নেতা উপেন্দ্র রাঘব, বিজেপি যুবমোর্চা দলের শিখর আগরওয়ালও। ২৭ জন ছাড়া আরও ৬০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধেও এফআইআর করা হয়েছে। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গোটা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, সোমবার বুলন্দশহরের সায়ানা মহকুমা এলাকার একটি মাঠে প্রায় ২৫টি গরুর মাংস পড়ে থাকতে দেখা যায় বলে গুজব ছড়ায়। গো-হত্যার প্রতিবাদে সকালে ওই এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। ট্র্যাক্টর ও ট্রলি ভরে ওই মাংস নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ জানায় এলাকার প্রায় ৪শ’ মানুষ। পুলিশ অবরোধ সরাতে গেলে বিক্ষোভকারীদের গুলি ও ছোঁড়া পাথরে গুরুতর আহত হন ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমার সিংহ। পরে হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান। এ ছাড়া পুলিশের গুলিতে সুমিত (১৮) নামে স্থানীয় এক যুবক নিহত হয়েছেন।
নিহত সুবোধ ২০১৫ সালে গো-রক্ষকদের হাতে দাদরির মুহাম্মদ আকলাখের খুনের ঘটনার তদন্তকারী অফিসার ছিলেন।
এই ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রাজ্য সরকার। সহিংসতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, এই ঘটনা তদন্ত করে দুই দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে এডিজি (কারিগরি) এসবি সিরোদকারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। অন্য পুলিশকর্মীরা সুবোধকে কেন উন্মত্ত জনতার সামনে একা ছেড়ে দিয়েছিলেন, তা-ও তদন্ত করবে একটি বিশেষ দল (এসআইটি)। এছাড়া, সুবোধের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ৪০ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে যোগী সরকার। এছাড়া, তার মা-বাবাকে ১০ লাখ টাকা দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে সুবোধের পরিবারের এক সদস্যকে সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে।
নিহত সুবোধের ছেলে অভিষেক সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাবা আমাকে ধর্মীয়ভাবে উদার হতে শিখিয়েছেন। আজ আমার বাবা হিন্দু-মুসলিম দ্ব›েদ্ব প্রাণ দিয়েছেন, আগামীকাল কার বাবা প্রাণ দিবেন?’
এদিকে, এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) প্রধান মায়াবতী এজন্য যোগী সরকারকে দায়ী করে বলেছেন, ‘যোগীর ভুল এবং ত্রুটিপূর্ণ সিন্ধান্তের কারণে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থির অবনতি হচ্ছে।’ কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশেই এমনটা হচ্ছে কেন? সরকার তো পুলিশকর্মীদেরই সুরক্ষা দিতে পারছে না।’ জেডিইউ নেতা পবন বর্মার দাবি, ‘হিংসা ও ঘৃণার ভিত্তিতে রাজনীতি এবং ধর্মকে মেলানো হচ্ছে। এমনটা হলে এই পরিণতিই হবে।’ বিজেপি নেতা মুখতার আব্বাস নকভি অবশ্য জানিয়েছেন, ‘বুলন্দশহরের ঘটনা মানবিকতার পক্ষে লজ্জাজনক।’ সূত্র : এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।