মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
১৯৯২-এর সেই দিনের ভয়ঙ্কর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা কেউ চোখের সামনে দেখেছিলেন, কেউ মুখে মুখে শুনেছেন। যে দিন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পক্ষ থেকে ‘ধর্ম সংসদ’-এর ঘোষণা করা হয়েছিল সেদিন থেকেই সেই আতঙ্ক আবার তাড়া করে ফিরছে অযোধ্যার মুসলিমদের। গতকাল রোববার রাম মন্দির নিমার্ণের দাবিতে অযোধ্যায় জমায়েত হয়েছিল লক্ষাধিক হিন্দু কট্টরপন্থী। আতঙ্কে এই জমায়েতের অনেক আগেই আযোধ্যা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ মানুষ জন।
হাজার হাজার নিরাপত্তারক্ষীর বলয়ের মধ্যে বিভিন্ন উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন গতকাল রোববার বাবরি মসজিদ চত্বরে দ্রুত রামমন্দির নির্মাণের দাবিতে বিশাল জনসমাবেশ করে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ‘ধর্ম সংসদ’ নামের সমাবেশ থেকে তাদের নেতা ও সাধুসন্তরা দাবি তুলেছেন, আদালতের অপেক্ষায় না থেকে সরকারকে অর্ডিন্যান্স বা নির্বাহী আদেশ জারি করে হলেও মন্দির নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। অযোধ্যায় কাউকে ‘নামায’ পড়তে দেবেন না জানিয়ে তাদের নেতা চম্পত রায় বলেন, ‘আমরা এখানে জমির অংশ চাই না। আমরা পুরো জায়গাই চাই। সরকারকে অবশ্যই তাদের দেয়া কথা রাখতে হবে।’
অযোধ্যাতেই হিন্দু পরিষদের সমান্তরাল আরও একটি সমাবেশ করেছে ক্ষমতাসীন বিজেপির শরিক ও মহারাষ্ট্রের হিন্দুত্ববাদী দল শিবসেনা। ওই সভা থেকে শিবসেনার নেতা উদ্ধব ঠাকরে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, মন্দির বানানো না-হলে বিজেপি কিছুতেই ক্ষমতায় ফিরতে পারবে না। তিনি স্লোগান দিয়েছেন, ‘আগে মন্দির, তারপর সরকার!’
এদিকে, চলমান রামমন্দির বিতর্ক রোববার আরও উস্কে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজস্থানের আলোয়াড়ে এক নির্বাচনী জনসভায় তিনি বলেছেন, ‘কংগ্রেস এই ইস্যুতে বিচারবিভাগকে পর্যন্ত ভয় দেখাতে চেয়েছে। অযোধ্যা শুনানি যাতে ২০১৯ নির্বাচন পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়, তারা সুপ্রিম কোর্টকে সেই দাবিও জানিয়েছে।’ ক্ষমতাসীন বিজেপির ইশতেহারেও বলা হয়েছে, তারা রামমন্দির-বাবরি মসজিদ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ই মেনে নেবে।
এই কর্মসূচি নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরেই চরম উত্তেজনা অযোধ্যায়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অযোধ্যায় মোতায়েন করা হয়েছে ৪২ কোম্পানি প্রভিন্সিয়াল আর্মড কনস্ট্যাবুলারি (পিএসি), ৫ কোম্পানি র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (র্যাফ), ৭০০ কনস্টেবল ও ১৬০ জন পুলিশ ইনস্পেক্টর। সঙ্গে মোতায়েন করা হয়েছে অ্যান্টি-টেররিজম স্কোয়্যাড (এটিএস)-এর কম্যান্ডো বাহিনী। নজরদারির জন্য রাখা হয়েছে প্রচুর ড্রোন ক্যামেরাও।
এই হিন্দু সমাবেশ আবার ৯২’র মতো আতঙ্কের পরিবশে সৃষ্টি করেছে সেখানকার সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে। তাদরে বেশিরভাগই ঘড় ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। যারা নিজেরা যেতে পারননি, তারা অন্তত ছোটদের নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এ বিষয়ে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের এক সদস্য জয়াফারয়াব জিলানির বলেন, ‘ভিএইচপি-এর ধর্ম সংসদ নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কে ভুগছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। সে জন্যই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন তাদের পরিবারের ছোটদের এবং বয়স্কদের অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘গোটা পরিস্থিতির দিকে আমরা নজর রাখছি। কোর্টের রায়ের পাশাপাশি এখানে কী ঘটে সে দিকে নজর রাখছি আমরা। আতঙ্কে আযোধ্যা ছেড়ে অনেকে লখনৌ চলে গেছেন।’ বিশ্লেষকরা বলছেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে ধর্মের জিগির তুলে নিজেদের অবস্থান আরও পোক্ত করতেই এক হয়েছে শিবসেনা ও ভিএইচপি। এমনিতেই নানা বিষয়ে মতবিরোধ থাকলেও রামমন্দির নিয়ে তাদের এ ঐক্য বিজেপির ওপরও তুমুল চাপ সৃষ্টি করবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে, বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।