Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

দুই আয়োজনে অযোধ্যায় উত্তেজনা

প্রয়োজনে সেনা মোতায়েনের আহবান মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

রাম মন্দির স্থাপনে চাপ তৈরিতে চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে ভারতের অযোধ্যায় দেবতা রামের জন্মস্থানে দুটি অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে দুই কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠন। ওই অনুষ্ঠান ঘিরে অযোধ্যায় চলছে উত্তেজনা। এরই মধ্যে প্রয়োজনে সেখানে সেনা মোতায়েনে সুপ্রিম কোর্টের প্রতি আহবান রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। আর উত্তেজনার মধ্যে নিজেদের নিরাপত্তা জোরদারের দাবি তুলেছে রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা। তবে সেনাবাহিনী পাঠানো না হলেও শীর্ষ থেকে মধ্যম সারির বেশ কিছু পুলিশ কর্মকর্তাকে সেখানে পাঠিয়েছে সরকার। বিরোধপূর্ণ এলাকা ঘিরে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছে সরকার। বাবরি মসজিদের অবস্থান উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একাংশের দাবি, যেখানে মসজিদ গড়ে তোলা হয়েছে সেই জায়গাটি ছিল দেবতা রামের জন্মভূমি, তা ভেঙে মসজিদ বানানো হয়। ১৯৯২ সালে বিজেপি সরকার ক্ষমতাসীন থাকার সময়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বাবরি মসজিদ। দাঙ্গায় প্রাণ হারায় ২ হাজার মানুষ। এলাহাবাদ হাই কোর্টে একবার রায় ঘোষণার পরেও তার চূড়ান্ত মীমাংসা হয়নি। ওই রায়ে বিতর্কিত জমিকে বিবদমান তিন পক্ষের মধ্যে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়। তখন অযোধ্যার বিতর্কিত জমির মামলা চলে যায় শীর্ষ আদালতে। আগামী বছর ওই মামলায় চূড়ান্ত রায় আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগেই সেখানে রাম মন্দির তৈরিতে চাপ জোরালো করতে চাইছে ভারতের কট্টরপন্থী হিন্দুরা। আজ রবিবার রাজ জন্মভূমিতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে শিব সেনা। এরইমধ্যে দুই দিনের সফরে অযোধ্যায় পৌঁছেছেন কট্টরপন্থী সংগঠনটির প্রধান উদব ঠাকরে। রবিবার তিনি রাম জন্মভূমিতে এক প্রার্থনায় অংশ নেবেন। এছাড়া সারায়ু নদীর তীরে আরোতিতে অংশ নিয়ে সেখানে সমবেত ভক্তদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন তিনি। পুনের শিবনেরি দুর্গ থেকে আনা মাটি ভর্তি পাত্র তিনি রাম জন্মভূমির পুজারকের কাছে হস্তান্তর করবেন। এছাড়া অযোধ্যায় আরও বড় সমাবেশের পরিকল্পনা করেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। ‘ধর্ম সংসদ’ নামের ওই আয়োজনও হবে রবিবার। সংগঠনটি বলছে, ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর রাম মন্দির সমর্থক ও পুজারিদের এটাই হবে সবচেয়ে বড় জমায়েত। এর আলোচ্যসূচি হবে রাম মন্দির তৈরির কাজ এগিয়ে নেওয়ার উপায়। ওই আয়োজনকে সামনে রেখে গত কয়েক দিনে উত্তর প্রদেশ জুড়ে মোটর সাইকেল র‌্যালি ও মিছিল আয়োজন করছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। এ ধরনের একটি আয়োজন থেকে পূর্বাঞ্চলীয় উত্তর প্রদেশের মির্জাপুরে ছোটখাট সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। অযোধ্যার ভূমি বিরোধ মামলার অন্যতম মামলাকারী ইকবাল আনসারি বলেছেন, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকার মধ্য দিয়ে রাম জনকির বাইক যাত্রার সময়ে ও কানপুরে ছোট সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দুটি ঘটনার কোনটিতেই প্রাণহানি বা বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। কিন্তু এই ধরণের অনুষ্ঠান আয়োজন মুসলিম মামলাকারীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। ১৯৯২ সালে আমাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, এখানে যদি ১৯৯২ সালের মতো জমায়েত হয় তাহলে অযোধ্যার মুসলমান আর আমার নিরাপত্তার দরকার। যদি আমার নিরাপত্তা জোরদার না করা হয় তাহলে আমি ২৫ নভেম্বরের আগেই শহর ছেড়ে চলে যাবো। তবে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ দাবি করেছে রাম ভক্তরা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ‘এরা সবাই সুশৃঙ্খল মানুষ। সবসময়ই নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাদের শুধু নির্দেশনা দরকার আর আমাদের পুজারিরা তা দেবেন। এটা একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান,’ বলেন পরিষদের মুখপাত্র শারদ শর্মা। তবে প্রয়োজন পড়লে সেনা পাঠাতে সুপ্রিম কোর্টের প্রতি আহŸান জানিয়েছে উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। সমাজবাদী পার্টির প্রধান বলেন, বিজেপি না সুপ্রিম কোর্ট, না সংবিধানে করে। দলটি যেকোনও কিছু ঘটাতে পারে। উত্তর প্রদেশ, বিশেষ করে অযোধ্যায় যে ধরণের পরিস্থিতি চলছে তাতে সুপ্রিম কোর্টের এতে নজর দেওয়া দরকার। প্রয়োজন পড়লে সেনা পাঠানো প্রয়োজন। এনডিটিভি, পিটিআই।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ