Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

তুরস্কে নিয়ন্ত্রণহীন শিশু গর্ভধারণ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০১৮, ৯:০৬ পিএম

নতুন এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত দেড় বছরে ২২ হাজার অন্তঃসত্ত্বা শিশু ভর্তি হয়েছে তুরস্কের বিভিন্ন হাসপাতালে৷ তবে এ সংখ্যাও বাস্তবের চেয়ে অনেক কম বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অন্তঃসত্ত্বা শিশুর সংখ্যা ২১,৯৫৭৷ তুরস্কের প্রেসিডেন্সি ডিরেক্টরেট অফ কমিউনিকেশন এ তথ্য জানিয়েছে৷
দেশটির প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির আইনপ্রণেতা ও চিকিৎসক আলী সেকের ডিরেক্টরেটের কাছে এ বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়েছিলেন৷ তিনি বলেন, ‘এই তথ্যে এটাই প্রমাণিত হয়, প্রতিদিন তুরস্কে ৪০ জনেরও বেশি শিশুকে গর্ভধারণে বাধ্য করা হচ্ছে৷ তাঁরা নিজেরাই শিশু, এবং তাঁদের এখন স্কুলে যাওয়ার বয়স৷’
তুরস্কে শিশু গর্ভধারণের সঠিক অবস্থা জানতে এটিই সেকেরের প্রথম প্রচেষ্টা নয়৷ এ বছরের শুরুতে পার্লামেন্টেও এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি৷ দু'টি হাসপাতালে নিবন্ধন ছাড়াই অন্তঃসত্ত্বা শিশুদের ভর্তি করার সংবাদ তখন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়৷ ১১৫ অন্তঃসত্ত্বা শিশুর মধ্যে ৩৮ জনের বয়স ছিল ১৫ বছরের কম৷ সে সংবাদের ভিত্তিতে সেকের এক লিখিত প্রশ্নে জানতে চেয়েছিলেন, স্বাস্থ্যকর্মীরা কেনো এ বিষয়ে পুলিশকে জানায়নি৷ তবে তথ্য জানতে চেয়ে করা তাঁর এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দেয়নি পার্লামেন্ট৷
আঙ্কারা বার অ্যাসোসিয়েশনের সেন্টার ফর চিলড্রেনস রাইটস-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এমরাহ সাহিন প্রশ্ন তুলেছেন, ‘এই ২১,৯৫৭টি ঘটনা কি পুলিশকে জানানো হয়েছে?’ তুরস্কের পেনাল কোডের বরাত দিয়ে সাহিন জানান, অপ্রাপ্তবয়স্ক গর্ভধারণের তথ্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বাধ্য৷
পুলিশকে সব ঘটনা না জানানোয় এ ধরনের ঘটনা আসলে কী পরিমাণ ঘটেছে, তা জানাও কষ্টসাধ্য বলে মনে করেন সাহিন৷ তিনি বলেন, ‘এই সংখ্যা কেবল নিবন্ধিতদের৷ অনিবন্ধিত গর্ভধারণের তো কোনো হিসেবই নেই৷’ আসল সংখ্যা ৪০ থেকে ৪৫ হাজারের মধ্যে হবে বলেও আশংকা তাঁর৷
তুরস্কের বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যে এই ১৮ মাসে শিশু গর্ভধারণ ও শিশু যৌন নির্যাতনে দায়ের মামলার হিসেবে কিছুটা গরমিল দেখা দিয়েছে৷
আট কোটি মানুষের দেশটিতে ২০১৭ সালে শিশু যৌন নির্যাতনের মামলা হয়েছে ৩৫,৮৯৬টি৷ ফলে শিশু গর্ভধারণের ঘটনাগুলোর কয়টি আসলেই পুলিশকে জানানো হয়েছে, এ নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই৷
তুরস্কে যৌন সম্পর্কে সম্মতির বয়স ১৮৷ ১৭ বছর বা তার কম বয়সের কেউ সম্মতি দিলেও আইন অনুযায়ী তা ধর্ষণ বলে গণ্য হবে৷ দেশটিতে বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ হলেও ১৭ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে বাবা-মা বা অভিভাবকের সম্মতিতে অনানুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করতে পারেন৷
তুরস্কে, বিশেষ করে গ্রাম এলাকায়, এ ধরনের ঘটনা অহরহই ঘটে থাকে৷ এ ধরনের ঘটনার সঠিক পরিসংখ্যান বের করা অবশ্য খুব কঠিন৷ সম্মতি থাক বা না থাক, কেবল গর্ভধারণের পর হাসপাতালে ভর্তি হলেই এসব অপ্রাপ্তবয়স্ক বিয়ের খবর জানা যায়৷
জাতীয় পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী ২০১৬ সালে ১৫ বছরের কম বয়সি মেয়ের সন্তান জন্মদানের ঘটনা ঘটেছে ২৩৪টি৷ ১৫ থেকে ১৭ বছরের মেয়ের ক্ষেত্রে এ সংখ্যা ১৬,৩৯৬টি৷ সূত্র: ডয়েশ্চ ভ্যালে।

 



 

Show all comments
  • মোঃ আব্দুল কাদির ২৩ নভেম্বর, ২০১৮, ১০:০৫ পিএম says : 0
    দুঃখজনক
    Total Reply(1) Reply
    • Md ২৪ নভেম্বর, ২০১৮, ৯:১০ এএম says : 4
      আসলেই কি ১৮ পর্জন্ত অপেক্ষা করা করো পক্ষে সম্ভব?
  • Hasan ২৪ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:১১ পিএম says : 0
    মেয়েরা সাধারনত ১৮ বৎসরের বেশ আগেই সাবালিকা হয়। আর ইসলামে বিয়ের অন্যতম তাৎপর্য হল নিজের নৈতিক শুদ্ধতা । কাজেই অনৈতিক পথে অগ্রসর হওয়ার পূর্বেই সাবালক ও সাবালিকার বিয়ের মাধ্যমে যদি সুন্দর, নৈতিকতা পূর্ণ একটি পরিবার তথা সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ে তোলা যায় তাহলে ১৮ পর্যন্ত অপেক্ষা করে অবাধ যৌনতার পথে অগ্রসর হওয়ার কি অর্থ ? আর স্বাস্থ্য নিরাপত্তার ব্যাপারে কথা হল; ইসলামের সকল হুকুম আহকাম এর উৎস- সমস্ত মানব-দানব ও বিশ্ব জাহানের সৃষ্টি ও পালনকারী, মহাজ্ঞানী, আল্লাহ তা'য়ালা ; যিনি সকলের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে পূর্ণ অবগত। কাজেই ১৮ এর পূর্বে বিয়ে যদি তাঁর বান্দা-বান্দিদের জন্য ক্ষতির কারণ হতো তাহলে ইসলামে এর অনুমোদনও থাকতো না ।
    Total Reply(0) Reply
  • Hasan ২৪ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:২৬ পিএম says : 0
    ১৭ বছর বয়সে যদি শিশু থাকে তাহলে কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পদার্পণ করবে কত বছর বয়সে ?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তুরস্ক

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ