বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন জীবন বাঁচাতে। আর হাসপাতালেরই ছাদের পলেস্তরা ভেঙ্গে পড়ছে রোগী ও স্বজনের উপরে। যে কোন মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে ছাদ। তাই ঝুঁকিতে তটস্থ রোগী ও স্বজন। তারপরও বাধ্য হয়েই চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করছেন সাধারণ মানুষ। এ অবস্থা বিরাজ করছে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
হাসপাতাল ভবনের দ্বিতীয় তলায় মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ডের প্রবেশ দ্বারে হাসপতাল কর্তৃপক্ষ নোটিশ টাঙ্গিয়ে দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে এ ওয়ার্ডের ছাদ ভেঙ্গে পড়ছে, এখানে থাকলে নিজ দায়িত্বে থাকতে হবে। রোগীরা তাই জীবনের ঝুঁকি নিজ দায়িত্বে রেখে নিচ্ছেন চিকিৎসা। চিকিৎসক ও নার্সরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন হাসপাতালে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানাগেছে, কোটালীপাড়া উপজেলার সাড়ে ৩ লাখ মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে ৪০ বছর আগে ৩০ বেডের এ হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করা হয়। হাসপাতাল ভবনটি এখন জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। দ্বিতীয় তলা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সেখানে ছাদের পলেস্তারা, ঢালাই, বিমের ঢালাই খসে পড়ছে। বেড়িয়ে গেছে ছাদের রড। অনেক সময় পলেস্তারা খসে পড়ে রোগী, নার্স ও চিকিৎসকরা আহত হচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র আরো জানিয়েছে, ৩০ বেডের এ হাসপাতালকে ৫০ বেডে উন্নীত করা হয়েছে। কিন্তু এখানে জনবল রয়েছে ৩০ বেডের। ২২ জন চিকিসকের স্থলে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৯ জন। গত ৭ মাস ধরে গাইনী ও এ্যনেসথিশিয়া বিশেষজ্ঞ নেই । এ কারণে অপারেশন বন্ধ হয়ে গেছে।
কোটালীপাড়া উপজেলার লাখিরপাড় গ্রামের বিল্লাল খন্দকার (২৬) বলেন, হাসপাতাল জরাজীর্ণ। ছাদ ভেঙ্গে পড়লে মারা যাব। টাইফয়েডে ভুগছি। নিরুপায় হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েই ভর্তি হয়েছি। চিকিৎসকরা ভর্তি করাতে চাননি। বাইরে ভালো চিকিৎসা পাবোনা। তাই হাসপাতালেই চিকিৎসা নিচ্ছি।
কোটালীপাড়া উপজেলার চিত্রাপাড়া গ্রামের নাসরিন বেগম (৩২) বলেন, আগে এখানে সিজারিয়ান অপারেশন সহ ছোট-খাটো অপারেশন করা হতো। কিন্তু গত ৭ মাস ধরে এখানে অপারেশন বন্ধ রয়েছে। এতে আমাদের মতো প্রসূতিরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স জ্যকলিন রুনু বৈদ্য বলেন, কর্তব্যরত অবস্থায় ছাদের পলেস্তারা খসে পায়ে পড়ে আহত হয়েছি। ঝুঁকির মধ্যে দায়িত্ব পালন করে যেতে হচ্ছে। কখনো কখনো ছাদের পলেস্তারা খসে চিকিৎসক ও রোগীরা আহত হচ্ছেন।
কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রেমানন্দ মন্ডল বলেন, প্রকৌশল বিভাগ অনেক আগেই এ ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। আমার এখানে রোগী রাখতে চাইনা। রোগীরা জোর করে এখানে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা সেবা নেন। তাই আমরাও সতর্ক নোটিশ টাঙ্গিয়ে দিয়েছি। ৩ মাসের মধ্যে হাসপাতালের এ ভবন ভেঙ্গে নতুন আধুনিক ভবন নির্মাণ কাজ শুরুর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এখানে চিকিৎসক সঙ্কট প্রকট। ৭ মাস ধরে হাসপাতালে গাইনী ও এ্যনেসথিশিয়া বিশেষজ্ঞ নেই। তাই অপারেশন বন্ধ রয়েছে। সঙ্কটের মধ্যেও প্রতিদিন ৩/৪ শ’ রোগীকে আমরা চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।