বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
গ্রামীণ উন্নয়ন সমবায় সমিতির আড়ালে দিব্যস্থ্যলী গ্রামে সুদের রমরমা ব্যবসা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। চলতি বছরের ২৪ অক্টোবর সমবায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিভাগীয় জেলা কর্মকর্তা ও উপজেলা নিবার্হী অফিসারের কাছে সংস্থাটির বিরুদ্ধে দিব্যস্থলী গ্রামের হাবিবুর রহমান নামের এক ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ইউসুফ আলী পেশায় একজন সহকারি শিক্ষক। তার বাড়ি উপজেলা কলমা ইউনিয়নের দিবস্থ্যলী গ্রামে। সে ইউনুছ আলীর ছেলে। তার এলাকায় সমবায় সমিতির ১১৫৪ নং রেজি: ব্যবহার করে ২০১৩ সাল হতে সুদের ব্যবসা করে আসছে। সুদের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়ছেন অনেকেই। অভিযোগ রয়েছে জেলা সমবায় কর্মকর্তা হাসিবুর রহমান তাকে প্রকাশ্যে ইন্ধন দিচ্ছেন।
অভিযোগ ও এলাকাবাসি সূত্রে জানাযায়, সরকারের কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে সমবায় সমিতির রেজি: ব্যবহার করে সুদের ব্যবসা করে চলেছেন। হাজারে সপ্তাহে ৫০ টাকা করে সুদ দিতে গিয়ে নি:স্ব হয়ে পড়েছেন সমিতি হতে টাকা গ্রহণকারী সদস্যরা। অনেকেই আবার লোনের টাকার সুদ পরিশোধ করতে না পেরে আত্মগোপনে রয়েছেন।
অভিযোগে আরো উল্লেখ রয়েছে, গ্রাম উন্নয়ন ও দু:স্থ ব্যক্তিদের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সহযোগিতা ও দারিদ্র বিমোচনের লক্ষ্যে উপজেলায় দিব্যস্থলী গ্রামে গ্রাম উন্নয়ন সংস্থাটি স্থানীয় হামেসা নামের এক নারীর বাড়িতে ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর হতে সংস্থাটির অন্তর্ভুক্ত হতদরিদ্রদের উন্নয়নের জন্য তাদের মধ্যে লোনের টাকা আদান প্রদান করে আসছে। তবে জীবনমান উন্নয়নের বিপরীতে সুদের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে নি:স্ব হয়ে অনেকেই পথে বসেছেন। অপরদিকে হতদরিদ্রদের জীবনমানের উন্নয়ন না হলেও, সংস্থাটির পরিচালক শিক্ষক থেকে হয়ে গেছেন কোটিপতি।
অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, হাবিবুর রহমান ছাড়াও চলতি বছরের ২৩ জুলাই উজ্জল হোসেন নামের রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় পড়–য়া একজন ছাত্র ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে সমবায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এর প্রেক্ষিতে মহাপরিচালক কার্যালয় হতে অভিযোগ তদন্তের জন্য জেলা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
বিভাগীয় জেলা কর্মকর্তা হাসিবুল ইসলাম এর সত্যতা পান। তিনি গ্রাম উন্নয়ন সংস্থাটি বন্ধ করে দেন। এ ভাবে এক মাস এর সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকে। কিন্তু সেই সংস্থাটির পরিচালক ইউসুফ জেলা কর্মকর্তাকে পুনরায় ম্যানেজ করে সংস্থাটি আবারো চালু করে।
ভুক্তভোগী তুজ্জাম্মেল হক ও নাসির উদ্দিনসহ একাধিক জানান, আমরা বিপদে পরে এ সমবায় সমিতি থেকে টাকা নিয়েছি। ঠিক সময়মত মাসের পর মাস সুদের টাকা দিয়ে আসছি। এ ভাবে যারা ৪০ হাজার টাকা নিয়েছি। তারা চার বছরে ধরে সুদের টাকা ৯৬ হাজার টাকা দিয়েছি। সংসারের অভাবের কারণে সুদের টাকা দিতে একটু দেরি হলে তারা বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদানসহ আমাদেরকে আটকে রেখে টাকা আদায় করেন। তাঁদের এই আচরণের জন্য প্রতিবাদ করতে এলে হুমকি প্রদান করে সমিতির লোকজনেরা।
এ বিষয়ে গ্রাম উন্নয়ন সমিতির পরিচালক ইউসুফ আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অতিরিক্ত সুদের টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা কিছু বেশি লাভের আশায় এসব টাকা দিয়ে থাকি। সুদের ব্যবসা করার দায়ে যদি আপনাদের রেজি: বাতিল করে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন টাকা দিলে বাংলাদেশে সব হয়। রেজিস্ট্রেশনও করা যাবে বলে হেসে জানান তিনি।
উপজেলা সমবায় অফিসার আকতার হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি শুনেছি ঐ ইউনিয়নের দিব্যস্থ্যলী গ্রামে সমবায় সমিতি আড়ালে সুদের ব্যবসা করছে। জানাসত্তে¡ও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি কেন? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলার বিভাগীয় সমবায় অফিসার গোলাম সারওয়ার বলেন, আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া উজ্জল হোসেন নামের এক ছাত্রের অভিযোগ পেয়েছি। তার অভিযোগের আলোকে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বলা যাবে আসল ঘটনাটি কি। সত্যতা পাওয়া গেলে সংস্থাটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।