Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এবার কারাগারে সউদী সাংবাদিকের মৃত্যু

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ নভেম্বর, ২০১৮, ১১:০৪ পিএম | আপডেট : ১২:১৪ এএম, ৭ নভেম্বর, ২০১৮

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সউদী কনস্যুলেট ভবনে ভেতরে সাংবাদিক খাশোগি হত্যার রেশ কাটতে না কাটতে কারাগারে আটক অবস্থায় নির্যাতনের শিকার হয়ে এবার মারা গেছেন সউদী সাংবাদিক ও লেখক তুর্কি বিন আবদুল আজিজ আল-জাসর।

আরবি ভাষার গণমাধ্যম দ্য নিউ খালিজের এক প্রতিবেদনের বরাতে দিয়ে মিডল ইস্ট মনিটর এ খবর জানিয়েছে।

তারা জানায়, গত মার্চে সউদী কর্তৃপক্ষ ও রাজপরিবারে সংঘটিত নানা ঘটনার তথ্য ফাঁসের অভিযোগে সাংবাদিক ও লেখক তুর্কি বিন আবদুল আজিজকে দুবাই থেকে গ্রেফতার করে সউদী পুলিশ। গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে আটক অবস্থায়ই দিনের পর দিন নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে সংবাদ মাধ্যমটি।

এর আগে গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সউদী কনস্যুলেট ভবনে ব্যক্তিগত কাগজপত্র আনার প্রয়োজনে ঢোকার পর থেকেই নিখোঁজ সউদীর খ্যাতনামা সাংবাদিক খাশোগি। এরপর জানা যায় খাশোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভেতর সউদী ঘাতক টিমের সদস্যরা হত্যা করেছে এবং তার লাশ টুকরো টুকরো করে কোথাও ফেলে দিয়েছে।

এ বিষয়ে তুরস্ক দাবি করেছে, সউদী কনস্যুলেট ভবনে ব্যক্তিগত কাগজপত্র আনার প্রয়োজনে ঢোকার পর জামাল খাশোগিকে হত্যার পর তার লাশ টুকরো টুকরো করে কোথাও ফেলে দিয়েছে। এমনকি খাশোগির হত্যার প্রমাণও মুছে ফেলছে সউদী তদন্তকারীরা।

নিউ ইয়র্ক টাইমস তাদের এক খবরে জানিয়েছে, সম্প্রতি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে খাশোগিকে খুনের ঘটনায় হত্যার তদন্ত করতে তুরস্কে এসেছে সউদী তদন্তকারীরা। কিন্তু তারা সুষ্ঠু তদন্ত না করে এই হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ মুছে ফেলছে বলে অভিযোগ করেছে তুরস্ক।

এ বিষয়ে তুর্কি এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, খাশোগি হত্যার নয় দিন পর তদন্তে সহযোগিতা করতে সউদীর ১১ সদস্যের একটি তদন্তকারী দল তুরস্কে আসে। তারা যৌথ তদন্তের নাম করে উল্টো হত্যার প্রমাণ ধ্বংস করছে।

তিনি আরও জানান, সউদীর ওই তদন্তকারী দলে দুজন কেমিস্ট ও টক্সিওলোজি বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। তারাই হত্যার প্রমাণ মুছে ফেলার কাজটি করছেন।

এদিকে, কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলে হয়েছে, খাশোগির কাটা আঙুল সউদী যুবরাজ সালমানের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছিল।

রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, ‘যুবরাজ সালমান সব সময়ই বলে থাকেন, যেসব লেখক তাঁর সমালোচনা করবেন, তাঁদের আঙুল তিনি কেটে ফেলবেন। সাংবাদিক জামাল খাশোগির সঙ্গে এমনটাই ঘটেছে বলে ধারণা করা যায়।’

তবে খাশোগির কাটা আঙুল সালমানের কাছে উপস্থাপনের পর তা কোথায় রাখা হয়েছে, তা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়নি।

সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সউদী কর্তৃপক্ষ ১৯ অক্টোবর স্বীকারোক্তি দেয়। তারা দাবি করে, গোয়েন্দা স্কোয়াডের সদস্যদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তিনি নিহত হন। সউদী আরব বলছে, কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা ছাড়াই ১৫ সদস্যের গোয়েন্দা স্কোয়াড নীতিবর্জিত অবস্থান থেকে খাশোগিকে খুন করেছেন।

ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সউদী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবেইর দাবি করেছেন, ওই গোয়েন্দা সদস্যরা ‘ভুলবশত’ খাশোগিকে খুন করার পাশাপাশি ঘটনাটি আড়াল করতে চেয়েছেন।

হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সউদী যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ নাকচ করে দেন তিনি।

খাশোগিকে হত্যার ঘটনায় দেশটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে জার্মানি। জামাল খাশোগি হত্যাকার বিষয়টি পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত সউদীকে আর কোনো অস্ত্র দেবে না দেশটি। ২১ অক্টোবর এ ঘোষণা দিয়েছে দেশটির চ্যান্সেলর।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সউদী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ