Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ইইউর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে মিয়ানমার

ভারত ফেরত ৭ রোহিঙ্গাকে প্রত্যয়নপত্র দেয়া হচ্ছে, নাগরিকত্ব নয়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এতে দেশটির তৈরি পোশাক খাতের হাজার হাজার লোভনীয় চাকরি ঝুঁকিতে পড়তে পারে। দোহাভিত্তিক আল-জাজিরার এক খবরে এ তথ্য জানা গেছে। ইউরোপীয় কর্মকর্তারা বুধবার মিয়ানমারে তাদের চারদিনের তথ্য অনুসন্ধানী মিশন শেষ করেছেন। সে অনুসারে রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সেনাবাহিনীর নিপীড়ন ও মিয়ানমারে অন্যত্র যে সহিংসতা চলছে, তার জবাবে কঠোর পদক্ষেপ নিতে চায় ইইউ। মিয়ানমার সফর শেষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য বিষয়ক কমিশনার সিসিলি ম্যালমস্ট্রোম বলেন, ভালো কোনো কিছু নিয়ে আসতে বাণিজ্য একটি শক্তিশালী মাধ্যম। মিয়ানমারের বেশ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও সম্পদ জব্দ তালিকায় অন্তভুক্ত রয়েছেন। অস্ত্র কর্মসূচি ছাড়া বাকি সবকিছুতে ইউরোপীয় বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে মিয়ানমার। ইইউ এখন সেই সুবিধা বাতিলে কথা ভাবছে। ম্যালমস্ট্রোম বলেন, শ্রম অধিকার ও মৌলিক মানবাধিকারকে এগিয়ে নিতে ইউরোপীয় বাজারে বাণিজ্য অগ্রাধিকার ও শুল্কমুক্ত প্রবেশ সুবিধা এক ধরনের উৎসাহ হিসেবে কাজ করে। এ বিষয়টি নিশ্চিত করতেই আমরা কাজ করছি। ‘আমরা মিয়ানমারের কাছে আশা করছি, পর্যবেক্ষণ মিশন চলার সময় আমরা যেসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা তুলে ধরেছি, তারা দ্রæতই সেসব সমাধান করবে।’ তিনি বলেন, দেশটি যদি সে অনুসারে কাজ না করে, তবে ইউরোপীয় বাজারে মিয়ানমারের শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা হুমকিতে পড়বে। এদিকে, গত ৪ অক্টোবর ভারত থেকে ফিরে যাওয়া সাত রোহিঙ্গা ব্যক্তির জন্য জাতীয় প্রত্যয়নপত্র ইস্যু করেছে মিয়ানমার। তবে এটি পাওয়া মানে তাদের নাগরিকত্ব পাওয়া নয়। ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করলেই কেবল তারা নাগরিকত্ব পেতে পারে। এসব নাগরিক প্রায় ছয় বছর আগে ভারতে পালিয়ে এসেছিলেন। ভারত থেকে তারাই প্রথম দল হিসেবে মিয়ানমারে ফিরে গেলেন। সাত রোহিঙ্গা হলেন মোহাম্মদ জামাল, মকবুল খান, জামাল হোসেন, মোহাম্মদ ইনাস, সাবিক আহমেদ, মোহাম্মদ রহিমুদ্দিন ও মোহাম্মদ সালাম। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে অস্বীকার করে। কারণ হিসেবে উল্লেখ করে, মিয়ানমার এসব উদ্বাস্তুকে নাগরিক মনে করে ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়েছে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মুসলিম সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের সদস্য। প্রায় চার দশক ধরে তারা বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠদের হাতে নির্যাতিত হচ্ছে। ভারতের প্রধান বিচারপতি ৪ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দেয়া প্রশ্নে দ্রæত শুনানির আবেদনের জবাবে বলেন, এই সাত রোহিঙ্গাকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে পাওয়া গেছে। তাদের মূল দেশ হলো মিয়ানমার। মিয়ানমার তাদেরকে নাগরিক হিসেবে স্বীকার করেছে। তবে ক্রল.ইনের হাতে আসা নথিপত্রে দেখা যাচ্ছে, এসব লোককে মিয়ানমার তাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করেনি। বর্মি সরকার তাদের জন্য নাগরিক সনদ নয়, বরং জাতীয় প্রত্যয়নপত্র ইস্যু করেছে। মিয়ানমার সরকার বলছে, নাগরিকত্ব লাভের জন্য এটি হলো প্রথম ধাপ। বলা হচ্ছে, রোহিঙ্গা স¤প্রদায়কে দেশের নাগরিকত্ব আইনে ‘জাতীয় বর্ণ’ হিসেবে স্বীকার করা হয়নি। ১৯৮২ সালের আইন অনুযায়ী নাগরিকত্ব পেতে হলে জাতীয় বর্ণের অধিকারী হতেই হবে। এর ফলে ভারত সরকার আরো ২৩ জন রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে দেয়ার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, তা নিয়ে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। এসব রোহিঙ্গা আসামের সিলচর, গোয়ালপারা ও তেজপুরের আটককেন্দ্রে রয়েছে। এসব লোক মিয়ানমার পৌঁছার ১০ দিন পর মিয়ানমার সরকার তাদের জন্য জাতীয় প্রত্যয়নপত্র ইস্যু করে। গার্ডিয়ান, সাউথ এশিয়ান মনিটর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ