পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক জোট এবং দলের সংলাপ চলমান থাকায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। এদিকে আগামী কাল রোববার তফসিলের ঘোষনার সিদ্ধান্ত থাকলেও ওইদিন তা ঘোষণা না করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আগামী সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা হতে পারে বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে।
রাজনীতিবিদরা মনে করছেন,গতকাল শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিকল্পধারার সংলাপ হয়েছে। আগামী ৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপ হতে যাচ্ছে। এছাড়া বাম গণতান্ত্রিক জোটও সংলাপের আমন্ত্রণ পেয়েছে। সিপিবি বলেছে ডাক পেলে তারাও সংলাপে যাবে। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণায় নির্বাচন কমিশন এই পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখতে পারে। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, সংলাপ ফলপ্রসূ হয়নি। ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফার কোনোটিই মেনে নেয়নি সরকার। আমরা বলেছি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দিতে হবে। যে সময় আছে এতে নির্বাচন করার যাবে না। আমরা নির্বাচনের তফসিল পেছানোর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি। তারা আবারো আলোচনার কথা বলেছে।
আজ ও কাল পরপর দু’দিন কমিশন সভা করবে ইসি। কাল রোববার তফসিল ঘোষনার সিদ্ধান্ত থাকলেও ওইদিন তা ঘোষণা না করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আগামী সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। আগামী ডিসেম্বর মাসের শেষের সপ্তাহে ভোট গ্রহণ হতে পারে। গত বহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত সাড়ে তিন ঘণ্টার ওপরে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে ড. কামাল হোসেন ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগী নেতৃত্ব দেন। ২০ সদস্যের প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিলেন। তবে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় যাননি। সংসদ ভেঙ্গে, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একাদশ সংসদ নির্বাচনের দাবি তোলা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংলাপের আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে চিঠি পাঠানোর পরিপ্রেক্ষিতে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হলো।
সংলাপ শেষে রাতে সাংবাদিকদের আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ঐক্যফ্রন্টের নেতারা যে যা বলতে চেয়েছেন ড. কামালসহ, আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা অখন্ড মনোযোগের সঙ্গে সবার বক্তব্য শুনেছেন। একেকজন দুবার, তিনবার, চারবারও কথা বলেছেন। তিনি কিন্তু একটুও ধৈর্য্য হারাননি, যেটা উনার স্বভাবসুলভ। উনাদের কিছু অভিযোগ ছিল। আমাদের দিক থেকে সুন্দর ও শালীনভাবে জবাব দেওয়া হয়েছে। এখানে একটা সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।
অন্যদিকে অবশ্য সংলাপ শেষে নিজ বাসায় ড. কামাল হোসেন ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংলাপে বিশেষ কোনো সমাধান তাঁরা পাননি। আর ঐক্যফ্রন্টের শরিক বিএনপি বলছে, তারা সন্তুষ্ট হতে পারেনি। পরে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেয় ঐক্যফ্রন্ট। নতুন করে আর আলোচনার দরকার আছে।
৩০ অক্টোবর থেকে নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। রেওয়াজ অনুযায়ী প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে নির্বাচনের ইসির সার্বিক প্রস্ততির বিষয়ে অবহিত করা হয়।
এদিকে বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সাক্ষাৎ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাসহ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদও উপস্থিত ছিলেন। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেন, সংলাপের বিষয়টি আমাদের পর্যালোচনায় রয়েছে। আমরা এখনো তফসিলের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তই নিইনি। ডিসেম্বর না জানুয়ারিতে ভোট হবে, সে বিষয়ে এখনই বলা যাবে না। সিইসি আরো বলেন, ৪ নভেম্বর তফসিল নিয়ে কমিশনের সভা অনুষ্ঠিত হবে। কবে তফসিল ঘোষণা করা হবে এ প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি যখন জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেব, তখনই তফসিল ঘোষণা করা হবে।
সব দল নির্বাচনে আসবে কি না প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমাদের আস্থা আছে। সব দল নির্বাচনে অংশ নেবে।সব দল নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা আমি জানি না। সংলাপের পর তফসিল ঘোষণা করবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, আগামী কাল রোববার তফসিল নির্ধারণ নিয়ে সভা করার পর ওই দিনই সিইসির ভাষণ রেকর্ডিং প্রায় অসম্ভব। সেই জন্য তফসিল ঘোষণা ৪ নভেম্বর নাও হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে, ডিসেম্বরের শেষে প্রচন্ড শীত থাকবে। আর জানুয়ারির প্রথম ১০ দিন প্রচন্ড শীতের সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে কমিশনের কর্মকর্তারা মনে করছেন, ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে শেষ সপ্তাহেই ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হতে পারে।
একাদশ নির্বাচন উপলক্ষে ইসি কর্মকর্তাদের সব ছুটি বাতিল
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া সাপ্তাহিক ও দিন অফিস করতে বলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ সকল কর্মকর্তা অফিস করছেন বলে জানা গেছে।
ইসির সহকারী সচিব মুহাম্মদ শহীদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বৃহস্পতিবার এ ছুটি বাতিল করা হয়। আগামী সপ্তাহেই একাদশ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। আর ডিসেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে নির্বাচনের ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা নিয়েছে ইসির।
অফিস আদেশে বলা হয়েছে, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী কার্য সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে ইসি সচিবালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনের সুবিধার্থে এবং সাংগঠনিক কাঠামো বহির্ভূত নির্বাচন কমিশনের অধিনস্ত আইডিয়া প্রকল্প ও হিসাব রক্ষণ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রকল্প ও সরকারি পরিবহন পুলের গাড়ি চালক, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত স্টাফকে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ পর্যন্ত সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন এবং অফিস সময়ের পর অফিসে উপস্থিত থেকে নির্ধারিত দায়িত্ব পালনের জন্য অনুরোধ করা হলো।
ইসি সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার অফিস করলেও সবাইকে জুমার নামাজের বিরতি দেয়া হয়। ইসি সচিব সকালে গেলেও নামাজের বিরতির সময় তার বাস ভবনে যান। সংবিধান অনুযায়ী আগামি ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। গত ৩০ অক্টোবর থেকে নির্বাচনকালীন ক্ষণ-গণনা শুরু হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর নির্বাচন কমিশন। এ জন্য ১ নভেম্বর প্রেসিযেন্ট আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নির্বাচনের সার্বিক প্রস্ততি জানিয়েছে ইসি।
ইসির যুগ্ম-সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান ইনকিলাবকে বলেন, অফিস আদেশটি গতকাল শুক্রবার থেকেই কার্যকর হয়েছে। এ আদেশ ভোটের ফল প্রকাশ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।