Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সমাধানের পথ সন্ধানে

গণভবনে সংলাপে দুই জোটের ৪৩ নেতা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম | আপডেট : ১:৫৫ এএম, ২ নভেম্বর, ২০১৮

0 আমরা আমাদের দাবি তুলে ধরেছি : ড. কামাল হোসেন 0 আলোচনায় আমরা সন্তুষ্ট নই : মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর 0 ফলোপ্রসূ আলোচনা হয়েছে : ওবায়দুল কাদের 0 কর্মসূচি চলতেই থাকবে : রব

 

ইতিহাস ফিরে ফিরে আসে না। কিন্তু এবার এসেছে। জাতির সংকটময় মূহুর্তে রাজনৈতিক সংকট নিরসনে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে মাঠের বিরোধী দলের বহুল কাঙ্খিত সংলাপ হয়েছে। টানা সাড়ে ৩ ঘন্টা সংলাপ যা ছিল বহুল প্রত্যাশিত। গতকাল (বৃহস্পতিবার) দেশি-বিদেশী সবার চোখ ছিল গণভবনের দিকে। সেখানে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতের লক্ষ্যে সমাধানের পথ খুঁজতে সংলাপে বসেন দুই জোটের ৪৩ নেতা। একদিকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা; অন্যদিকে বিএনপির ছায়ায় গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা সংবিধান প্রণেতা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী ড. কামাল হোসেন। বৃহৎ টেবিলে মুখোমুখি বসেছিলেন তারা। বিএনপি মহাসচিব সংলাপের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবীনামা তুলে ধরেন। কিন্তু সংলাপে জানানো হয় শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের ব্যাপারে সংবিধানের বাইরে যাবে না। সংবিধান নির্দেশিত পথেই তিনি হাটবেন। তবে সভা সমাবেশে কোনো বাধা দেয়া হবে না।
সংলাপ থেকে বের হয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ফলোপ্রসু আলোচনা হয়েছে দাবী করে বলেন, সংবিধান সম্মত সব বিষয়েই আলোচনা হবে। তবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আলোচনায় সন্তুষ্ট নই। আলোচনা কর্মসূচি সবকিছু ধারাবাহিক ভাবে চলবে। তবে ড. কামাল হোসেন বলেছেন, আমরা আমাদের দাবি তুলে ধরেছি। তারা তাদের মনোভাব প্রকাশ করেছেন।
সংলাপ শুরু হয় সন্ধ্যা ৭টায়। সংলাপের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের সময়ে কেমন উন্নয়ন হয়েছে বিচারের ভার আপনাদের; সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে’। গণভবনের ভিতরে যখন সংলাপ চলছে বাইরে তখন শত শত দেশি-বিদেশী সাংবাদিকের ভীড়। সঙ্গে হাজারো উৎসুক মানুষ। তাদের প্রত্যাশা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলমান বিরোধ এই সংলাপের মাধ্যমে সুরাহা হবে। দেশের জনগণ ভোটের অধিকার ফিরে পাবে। সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে যে অনিশ্চয়তা, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থাহীনতা তা সংলাপের মাধ্যমে নিরসন হবে।
গণভবনের ভিতরে যখন সংলাপ চলছে; তখন রাস্তায় দেখা যায়, ‘সংবিধান জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাধা নয়’, ‘সংবিধান ওহি নয়, জনগণের জন্যই সংবিধান’, ‘জনগণ ভোট দিতে চায়, ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে ফলপ্রসূ সংলাপ চাই’, ইত্যাদি শ্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে কয়েকজন তরুণ-যুবক অবস্থান নিয়েছেন। তারা জানান সংলাপের সাফল্যের প্রত্যাশায় তারা মোমবাতি প্রজ্বলন করে। একজন বলেন, সংলাপ যদি সফল না হয়, তাহলে দেশ সংঘাতের পথে যাবে। জনগণ যেন ভোটের অধিকার ফিরে পায়, বিশৃংখলার বদলে শান্তির পথে দেশ যেন থাকে এ প্রত্যাশা নিয়ে আমরা মোমবাতি প্রজ্বলন করেছি।
প্রায় ৩ ঘন্টা ৪০ মিনিট সংলাপের পর রাত পৌনে ১১ টায় বের হয়ে ড.কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় সংবাদ সম্মেলনে আ স ম আবদুর রব বলেছেন, আমরা ৭ দফা দাবি দিয়েছি। কর্মসুচি চলবে। দাবি মানা না মানা তাদের ব্যাপার। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংলাপের বিষয়াদি তুলে ধরে বলেন, সববিষয় নিয়ে অনেকক্ষণ আলোচনা হয়েছে। ঐক্যফ্রন্টের সবকথাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুনেছেন। তারা কিছু কিছু অভিযোগ করেছেন; ওই সব বিষয়ে আমাদেরও বক্তব্য ছিল তা বলেছি। কিছু কিছু বিষয়ে একমত হয়েছি। শেখ হাসিনা স্পষ্ট ভাবে পরিস্কার বলে দিয়েছেন সভা সমাবেশ মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। তারা যেখানে চায় সভা সমাবেশ করতে পারবে। তবে রাস্তা বন্ধ করে নয়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তারা যে কোনো সময় সভা করতে পারবে তবে ভাড়া দিতে হবে। ঐক্যফ্রন্ট দাবি করেছেন নির্বাচনের সময় বিদেশী পর্যবেক্ষক মনিটর করবে। আমরা বলেছি এতে কোনো আপত্তি নেই। ইভিএম প্রসঙ্গে আপত্তি করলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন ইভিএম আধুনিক পদ্ধতি। এটা ইসি সীমিত ভঅবে ব্যবহার করবে। বেগম খালেদা জিয়ার মামলাকে রাজনৈতিক জানিয়ে তিনি বলেন, তার মামলা আইন ও আদালতের বিষয়। এই মামলাগুলো হয়েছে ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন সরকারের সময়। তারাই মামলাগুলো আদালতে উঠিয়েছে। আমরা করিনি। ওই সময় শেখ হাসিনার নামেও ১৬টি মামলা দায়ের করা হয়। সেগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করো কোনো কিছু না পেয়ে আদালত বাতিল করেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সংলাপে বলে দেয়া হয়েছে বিএনপির নেতাদের মামলার তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেন; পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা হবে। প্রথমেই জানিয়ে দেয়া হয়েছিল সংবিধান সম্মত সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। গণতন্ত্র অব্যাহত থাকবে; সংবিধানের বাইরে যাওয়া যাবে না। ভারতসহ পৃথিবীর গণতান্ত্রিক সব দেশে সংসদ রেখে নির্বাচন হয়। নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন। তফসিল ঘোষণার পর সবকিছুই তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। নির্বাচন নিয়ে বিএনপির ভয়ের কোনো কারণ নেই। নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিশ্রæতি দিচ্ছি। সরকার হস্তক্ষেপ করবে না, বিএনপির ভয়ের কোনো কারণ নেই। সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনকে বলেছেন আপনি ১৯৭৩ সাল থেকে সব নির্বাচনই দেখেছেন ২০০১ সাল ছাড়া আর কোন নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে মেজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে মোতায়েন করা হয়নি। সংলাপ ৮ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে জানিয়ে তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্ট যদি মনে করেন আরো আলোচনা দরকার রয়েছে তাহলে হবে। শেখ হাসিনার দরজা সবসময় খোলা।
সংলাপের বিষয়ে জানতে চাইলে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেন বলেন, আলোচনা ভালো হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আলোচনা হয়েছে। ওরা বেগম জিয়ার মামলা ও মুক্তির ব্যাপারে সুনিদৃষ্টভাবে কিছুই বলেননি। একদিনের সব কিছু অর্জন হয় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি চলতেই থাকবে। গণফোরামের নিবাহী সভপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের পুণরাবৃত্তি করে গণগ্রেফতার ও গায়েবীসহ রাজনৈতিক মামলাগুলোর তালিকা প্রধানমন্ত্রী চেয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন ক্রিমিনাল ছাড়া বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে আর কোনো রাজনৈতিক মামলা হবে না। বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, এ বিষয়ে ড. কামাল হোসেন ব্রিফ করবেন। বিএনপির নেতা ড. মঈন খান বলেছেন, সব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে মহাসচিব ব্রিফ করবেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমÐলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বলেন, আলোচনায় কিছু অগ্রগতি আছে। ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আলোচনা খুবই সুন্দর হয়েছে। তবে আলোচনার সফলতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বলতে পারবো না। জাসদ (আম্বিয়া-বাদল) এর নেতা মইনুদ্দিন খান বাদল বলেছেন, খুবই ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। ইটস অ্যা পলিটিক্যাল স্টার্ট। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন তার দরজা সব সময় খোলা থাকবে আলোচনার জন্য।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দল গণভবনে প্রবেশ করে। গণভবনের প্রবেশ পথে নিয়মিত নিরাপত্তা তল্লাশি শেষে ঐক্যফ্রন্টের গাড়িবহর গণভবনে প্রবেশ করে। এ সময় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের স্বাগত জানান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন ও বিশেষ সহকারী সাইফুজ্জামান শেখর।
ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ফ্রন্টের প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস ও ড. আবদুল মঈন খান, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না ও এসএম আকরাম, গণফোরামের মোস্তফা মোহসীন মন্টু, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দার আফ্রিক, আওম সফিক উল্লাহ, মোতাব্বের খান, জেএসডি’র আ স ম আব্দুর রব, আব্দুল মালেক রতন ও তানিয়া রব, ঐক্যপ্রক্রিয়ার সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, আ ব ম মোস্তফা আমিন, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষে সংলাপে নেতৃত্ব দেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের ২৩ সদস্যের প্রতিনিধির মধ্যে শরিক ১৪ দলীয় জোটের চার নেতা রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, মইন উদ্দীন খান বাদল ও দিলীপ বড়ুয়া ছিলেন। এ ছাড়াও ছিলেন আওয়ামী লীগের আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফরউল্লাহ, ওবায়দুল কাদের, আবদুল মতিন খসরু, ড. আব্দুর রাজ্জাক, রমেশ চন্দ্র সেন, আনিসুল হক, মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, ড. হাছান মাহমুদ, ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ ও শ. ম. রেজাউল করিম। প্রধানমন্ত্রীর সুচনা বক্তব্যের পরই রুদ্ধদার সংলাপ শুরু হয়।
এর আগে ৭ দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্যের ভিত্তিতে সংলাপের দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ড. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠি দেয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। পরদিন আওয়ামী লীগ সংলাপে সম্মতির কথা জানায়। একইসঙ্গে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সময় নির্ধারণ করে ২৯ অক্টোবর সকালে ঐক্যফ্রন্ট প্রধান ড. কামাল হোসেনের বাসায় চিঠি পৌঁছে দেয় আওয়ামী লীগ। আজ শুক্রবার বিকল্প ধারার সভাপতি বি চৌধুরী, ৫ নভেম্বর জাতীয় পার্টির এরশাদ ও পরে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সঙ্গে সংলাপ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সংলাপের শুরুতেই অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকে এই অনুষ্ঠানে আপনার এসেছেন। জনগণের এই গণভবনে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই। স্বাগত জানাই বাংলাদেশের জন্য যে আর্থসামাজিক উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছি এবং দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে গণতন্ত্রের অব্যাহত রেখেছে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের এই উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখবে বলে মনে করি। এছাড়া এই দেশটা আমাদের সকলের। মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং দেশের সার্বিক উন্নয়ন এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমি এটা বিচারের ভার আপনাদের উপর ছেড়ে দিব। দীর্ঘ নয় বছর ১০ মাস হতে চললো আমরা সরকারে। এই সময়ের মধ্যে দেশে কত উন্নয়ন করতে পেরেছি সেটা নিশ্চয়ই আপনারা বিবেচনা করে দেখবেন। এটুকু বলতে পারি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ভালো আছে। তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটছে। দিনবদলের যে সূচনা করেছিলাম সেই দিন বদল হচ্ছে। এটাকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়ন করে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা এনেছি। আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা এ স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আজকে এই স্বাধীনতার সুফল প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌছাতে পারি এটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।
যে ৭ দফা নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা গণভবনে যান এগুলো হলো- ১. অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার নিশ্চিত করতে হবে। ২. গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। ৩. বাক, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা এবং নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। ৪. কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সাংবাদিকদের আন্দোলন এবং সামাজিক গণমাধ্যমে স্বাধীন মত প্রকাশের অভিযোগে ছাত্রছাত্রী, সাংবাদিকসহ সবার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুক্তির নিশ্চয়তা দিতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব কালো আইন বাতিল করতে হবে। ৫. নির্বাচনের ১০ দিন আগে থেকে নির্বাচনের পর সরকার গঠন পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত করতে হবে। ৬. নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে ভোট কেন্দ্র, পোলিং বুথ, ভোট গণনাস্থল ও কন্ট্রোল রুমে তাদের প্রবেশে কোনো প্রকার বিধি-নিষেধ আরোপ না করা। নির্বাচনের সময়ে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর যেকোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করতে হবে। ৭. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফলাফল চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা ও কোনো ধরনের নতুন মামলা না দেওয়ার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সংলাপ

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১০ জুন, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ