রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সরকারি দলের পাশাপাশি বাধা-বিপত্তির মুখেও অগ্রসর হচ্ছে বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা। নির্বাচনকে সামনে রেখে উখিয়া-টেকনাফ আসনে বিএনপির একক প্রার্থী, আ.লীগ, জামায়াত ও জাপার একাধিক প্রার্থী মাঠে সক্রিয়। এখানে বদলে যেতে পারে নৌকার মাঝি। এমন ধারণা করছেন আওয়ামী ঘরানার অনেকেই।
কক্সবাজার-৪ উখিয়া-টেকনাফ আসন নিয়ে কক্সবাজারবাসীর আগ্রহ ও উৎসুক্য বাড়ছে দিন দিন। এই আসনটি ভাগ্য নির্ধারণী আসন বলেই মনে করা হয়। কারণ অতীতে দেখা গেছে, এই আসনে যে দলের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন, সে দলই সরকার গঠন করেছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনেও তাই মনে করছেন এই অঞ্চলের মানুষ। তাই এই আসনে জেতার জন্য সরকারি-বিরোধী দল এখন মরিয়া।
এদিকে বর্তমান এমপি আব্দুর রহমান বদি ইয়াবা কানেকশনসহ নানা কারণে দলের ভেতরে-বাইরে সমালোচিত হওয়ায় নৌকার ভোটারসহ দলের নেতাকর্মীরা খুবই বিব্রত। বদির মনোনয়ন ঠেকাতে জোট বেঁধে মাঠে নেমেছেন উখিয়া-টেকনাফের আ.লীগ নেতারা। এই প্রেক্ষাপটে নৌকার মনোনয় পেতে দৌড়ে রয়েছেন অর্ধডজন নেতা। এর মধ্যে ব্যাপক আলোচনায় আছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) মুহাম্মদ আবু তাহের। ২০০৮ সালেও তাকে নৌকার মনোনয়ন দিয়ে শেষ মুহূর্তে পরিবর্তন করা হয়। বর্তমানে বদি বিতর্ক এবং বিএনপির প্রার্থীর মোকাবেলায় তিনিই এখন নৌকার মাঝি হতে যোগ্য বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু সেনা কল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য সাবেক সেনা কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর আবু তাহের ইতোমধ্যে আ.লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে উখিয়া-টেকনাফে বেশ আলোচনায় এসেছেন। নৌকার মনোনয়ন-প্রত্যাশী মেজর তাহের উখিয়া টেকনাফ থেকে ইয়াবার বদনাম ঘুটাতে দৃঢ প্রতিজ্ঞ বলেও জানা যায়। তিনি শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের ধরাবাহিকতা রক্ষায় আবারো নৌকায় ভোট দেয়ার জন্য উখিয়া-টেকনাফবাসীকে আহ্বান জানান।
তবে আব্দুর রহমান বদি জানান, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অবান্তর, তিনি উখিয়া-টেকনাফে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন, শেষ মুহূর্তে তিনিই মনোনয়ন পাবেন।
নৌকার মাঝি হতে আরো যারা দৌড়ে রয়েছেন, সাবেক এমপি ও টেকনাফ উপজেলা আ.লীগের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ আলী, উখিয়া আ.লীগের সভাপতি প্রিন্সিপ্যাল হামিদুল হক চৌধুরী, উখিয়া আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর ও মহিলা নেত্রী সাধনা দাশ গুপ্তা।
এদিকে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী ঠিক করাই আছে। তিনি চার বারের এমপি কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক হুইফ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। বিরোধী জোটের নেতাকর্মীরা মনে করেন, জেলার রাজনৈতিক নেতাদের মাঝে ক্লিন ইমেজের নেতা বলেই পরিচিত তিনি। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনিই হবেন উখিয়া-টেকনাফের এমপি।
উখিয়া-টেকনাফ আসনেও জামায়াতে ইসলামী তৃতীয় শক্তশালী দল হিসেবে বিবেচিত। এখানে মাঠে আছেন জামায়াতের একাধিক যোগ্য নেতা। তারা হলেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি বর্তমান চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমীর মুহাম্মদ শাহজাহান, কক্সবাজার জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি ও সাবেক উখিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. শাহজালাল চৌধুরী ও জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর হোয়াইক্যং ইউপি চেয়ারম্যান প্রিন্সিপ্যাল মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারী।
জামায়াত সূত্র মতে, কোনো কারণে ২০ দলের সাথে বনিবনা না হলে তিনজনের যে কোনো একজন এখানে জামায়াতের প্রার্থী হতে পারেন। জানা যায়, আ.লীগের সাথে জোটভুক্ত জাতীয় পার্টিও এই আসনটি পেতে চায়। আসনটি জাপা পেলে মনোনয়ন পেতে পারেন শিল্পপতি মোহাম্মদ ইয়াহিয়া অথবা অধ্যাপক নূরুল আমিন ভুট্টো।
তবে সব দলের নেতাদের কাছে উখিয়া-টেকনাফের মানুষের দাবি হলো- উখিয়া-টেকনাফের সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি দ্রুত রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভ‚মিকা রাখা এবং উখিয়া-টেকনাফ থেকে ইয়াবার বদনাম ঘুচানো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।