পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আগামীকাল গণভবনে সংলাপে বসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ঐক্যফ্রন্টের ১৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল সংলাপে অংশ নেবেন। গতকাল মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। রাতেই প্রতিনিধিদের তালিকা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। সকালে সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া চিঠি ড. কামাল হোসেনের বাসায় পৌঁছে দেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। এর আগে সংলাপের আহবান জানিয়ে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ড. কামাল হোসেন প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন। সে চিঠির প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী ঐক্যফ্রন্টের সাথে সংলাপে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সংলাপকে ঘিরে দেশের রাজনীতিতে ইতোমধ্যে মৃদু সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা প্রধানমন্ত্রীর সংলাপে বসার সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকের পর অনির্ধারিত আলোচনায় সংলাপের সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংবাদিক সম্মেলনে তা ঘোষনা করেন। মুহূর্তের মধ্যে এ সংবাদ অনলাইন, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং স্যোসাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। সংলাপের বিষয়টি তখন থেকে দেশ-বিদেশে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। রাজধানীসহ সারাদেশের হাটে-বাজারে, গ্রামে-গঞ্জে, লঞ্চে-ট্রেনে, রিকশা-বাস, চায়ের স্টল, রাস্তার মোড়ে বন্ধুদের আড্ডায় সবখানেই চলে সংলাপ নিয়ে আলোচনা। এক কথায় ‘সংলাপ’ এখন টক অব দ্যা কান্ট্রি। এ সংলাপের দিকে তাকিয়ে আছে গোটা জাতি। এ সংলাপের মাধ্যমে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির ইতিবাচক পরির্বতন হবে এমনটা সবার প্রত্যাশা। সংলাপে আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুলকাদেরসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত থাকবেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের কতজন এবং কোন কোন নেতা অংশ নেবেন তা জানা যায়নি। ড.কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ১৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেবেন। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও মির্জা আব্বাস। নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না ও এসএম আকরাম। গণফোরাম থেকে মোস্তফা মহসিন মন্টু ও সুব্রত চৌধুরী। জেএসডি থেকে আ স ম আব্দুর রব, আব্দুল মালেক রতন ও তানিয়া রব। জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, আ ব ম মোস্তফা আমিন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে থাকবেন ডা. জাফরুল্লহ চৌধুরী।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন সংলাপের সফলতার ব্যাপারে আশাবাদী। খোলা মন নিয়ে আলোচনা করলে একটি সমাধান বের হবে বলে তিনি মনে করেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে থেকে সংলাপের আমন্ত্রণের চিঠি পাওয়ার পর বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. কামাল হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তিনি বলবেন তারা খোলা মন নিয়ে কথা বলতে এসেছেন, কোনো দলীয় স্বার্থ সিদ্ধির জন্য নয়। জাতীয় স্বার্থে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আমরা যেমন চাই, আপনিও চান। আমরা উভয়ে সেটাই চাই। তাহলে কেনো উপায় বের করা যাবেনা। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য তো একটা যে সবার অংশগ্রহণে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন। সংবিধান এবং আইনের পরিবর্তন তো কোনা ব্যাপারই না, এক মিনিটেই তা হতে পারে।
সংলাপ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সম্পূর্ণ আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতেই সংলাপে বসতে যাচ্ছি আমরা। সংলাপে খোলা মেলা আলোচনা হবে। এই সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্য নিয়েও আলোচনা হবে। সংলাপে সংকটের বরফ গলবে। যারা সংশয় প্রকাশ করেছিল, সংলাপের মধ্য দিয়ে তাদের সংশয় কেটে যাবে।
সংলাপে বসার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তাদের আশা একটি অর্থবহ সংলাপের মাধ্যমে দেশে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সংলাপে বসার সিদ্ধান্ত নেয়ায় সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। আমরা আশা করবো এ নিয়ে কোন তালবাহানা হবে না। সংলাপকে অর্থবহ করতে সরকার আন্তরিক হবে।
শিক্ষাবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ আহ্বানে সাড়া দিয়ে কোনো প্রকার পূর্বশর্ত ছাড়াই ক্ষমতাসীন দলের আলোচনায় বসার সিদ্ধান্তকে স্বাগত। সংলাপ হোক, বাংলাদেশের জন্য। গণতন্ত্র ও গণমানুষের জন্য। উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার জন্য। তিনি বলেন, নির্বাচন আসন্ন। খুব বেশিদিন নেই। সুষ্ঠু একটা নির্বাচনের প্রত্যাশা সব দলই করছে। সব মানুষ করছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপরিচালিত হলে জনগণ অনেক বেশি উপকৃত হবে। সব দলের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক থাকলে দেশ লাভবান হবে। সংলাপ একটা সুযোগ হয়ে এসেছে। সুযোগটি কাজে লাগাতে হবে। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।