পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অনেক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার পর অবশেষে অবরুদ্ধ মনের দুয়ার খুলে দেওয়ার সোনালী সুযোগ-সম্ভাবনার আলো ফুটে উঠেছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ আর বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষ তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জাতীয় পর্যায়ের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মধ্যকার আগামী বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিতব্য বহুল প্রত্যাশিত সংলাপের আয়োজন চলছে। এই রাজনৈতিক সংলাপকে ঘিরে আশার দিশা দেখতে পাচ্ছেন রাজনীতি সচেতন সাধারণ মানুষ। বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মী, সমর্থকদের মাঝে সংলাপ নিয়ে যেমন আছে আশাবাদ তেমনি রয়েছে সীমাহীন কৌত‚হল। সবার চোখ এখন রাজধানী ঢাকার দিকে।
হযরত শাহজালাল (রহ.) শাহ পরান (রহ.) সমেত ৩৬০ আউলিয়ার পূণ্যভূমি আধ্যাত্মিক নগরী সিলেটে গত ২৪ অক্টোবর বুধবার এবং বারো আউলিয়ার পূণ্যভূমি শতবছরের আন্দোলন সংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের ধারক বীর চট্টলায় গত ২৭ অক্টোবর শনিবার অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের উদ্যোগে দুই দুটি বিভাগীয় জনসভা। রাজধানী ঢাকার বাইরে আয়োজিত উভয় জনসভায় শত বাধা-প্রতিবন্ধকতার পাহাড় ঠেলে আজগুবী অভিযোগে শত গায়েবি মামলা-হুলিয়া ধর-পাকড় সত্ত্বেও সর্বস্তরের গণতন্ত্রকামী জনতার ঢল নামে। শনিবার চট্টগ্রাম নগরীর নূর আহম্মদ সড়কের নাসিমন ভবন চত্বরের জনসভা থেকে ড. কামাল হোসেন, মির্জা ফখরুল, আ স ম রব, ডা. জাফরুল্লাহ, মান্নাসহ শীর্ষ নেতারা সরকারের প্রতি স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেন, দেশের জনগণ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবি এবং লক্ষ্যগুলো পূরণ করতে হবে। তা উপেক্ষা বা লঙ্ঘন করা হলে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। এমন শাস্তি হবে যা কল্পনা করাও কঠিন। নেতৃবৃন্দ সরকারকে অবিলম্বে সংলাপে বসার আহ্বান জানান। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় গিয়ে এর পরদিনই (২৮ অক্টোবর) ড. কামাল হোসেন প্রধানমন্ত্রী বরাবর দেওয়া পত্রে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বসার আহ্বান জানান। আর পরের দিনই ২৯ অক্টোবর সরকারের পক্ষ থেকে সংলাপের সিদ্ধান্ত এবং গতকাল প্রধানমন্ত্রীর তরফে আমন্ত্রণলিপি এসে পৌঁছায়। চট্টগ্রামের সফল জনসভার পর একদিকে তৃণমূল নেতা-কর্মী, সমর্থকগণ উজ্জীবিত। অন্যদিকে সরকারী দল আওয়ামী লীগ কর্তৃক সংলাপের আমন্ত্রণকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আন্দোলনের প্রাথমিক বিজয়ের সূচনা হিসেবে দেখছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। গতকাল বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের আলাপচারিতা থেকে একথা জানা গেছে।
কম-বেশী সংশয় কিছু প্রশ্ন আর চাপা উৎকণ্ঠা থাকলেও শহর-নগর গ্রাম-জনপদে এই সংলাপকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখতে চান রাজনীতি সচেতন মানুষজন। তবে গতকালও (মঙ্গলবার) তাদের কথাবার্তায় ফুটে উঠছে এক ধরনের সতর্ক আশাবাদের সুর। সরবে-নীরবে জনসাধারণের মাঝে এখানে সেখানে যে প্রশ্ন ঘুরেফিরে আলোচিত হচ্ছে, সরকারী দল আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ সফল সার্থক হবে তো? আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার পথ সুগম হবে কী?
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি ও এগারো দফা লক্ষ্যের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের তরফ থেকে দলের সভাপতি, দেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও উদার-ইতিবাচক ঘোষণা দেবেন এবং দেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট থেকে মুক্তির শান্তিপূর্ণ উপায় বেরিয়ে আসবে এই আকুতি ও প্রত্যাশাগুলো এ মুহূর্তে গণমানুষের ভাষায় রূপায়িত হয়েছে। চাটগাঁবাসীর ভাবনা জনগণ এবার নিরাশ হবেনা। বরং দেশে গণতন্ত্র তথা নাগরিকের মৌলিক ভোটাধিকার সুনিশ্চিত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং অপরদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ গণফোরাম সভাপতি বাংলাদেশ সংবিধান-এর প্রণেতা ড. কামাল হোসেন, বিএনপির মহাসচিব পরিচ্ছন্ন রুচিবান রাজনীতিবিদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ শীর্ষ জাতীয় নেতৃবৃন্দ দেশে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার ইতিহাসের সাথে নিজেদের স্মরণীয় করে রাখার একটি মহাসুযোগ তৈরি হয়েছে বলে বীর চট্টলাবাসী মতামত ব্যক্ত করেছেন।
প্রফেসর মুহাম্মদ সিকান্দার খান
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের তরফ থেকে সরকারকে সংলাপের আহ্বান এবং এতে সাড়া দিয়ে সরকারী দল আওয়ামী লীগ কর্তৃক আগামী বৃহস্পতিবার গণভবনে সংলাপের আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে অভিমত জানতে চাওয়া হয় ইস্ট-ডেল্টা ইউনিভিার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রবীণ শিক্ষা ও সমাজ চিন্তাবিদ প্রফেসর মুহাম্মদ সিকান্দার খান-এর নিকট। তিনি গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেছেন, ‘সরকারী মহল আগে তো বারবার বলেছিল সংলাপ হবে না, করবো না, সংলাপ করে কী হবে ইত্যাদি। এখন তো জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বানে দ্রুত সাড়া দিয়েছে। এর সম্ভাব্য কারণ হতে পারে দুইটি। এক. হয়তো আল্লাহতায়ালার ইচ্ছায় তাদের মন-মর্জির পরিবর্তন এসেছে। দ্বিতীয় সম্ভাব্য কারণ হতে পারে বাহ্যিক বিশেষ করে বৈদেশিক কোনো চাপ। তবে দৃশ্যত তা (চাপ) মনে হয় না’।
তিনি বলেন, ‘পরস্পর সমালোচনা আর কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি কম হয়নি। দুই পক্ষের তহবিলে তো অনেক জমা আছে। এর কোনো শেষ হবে না। অনেক হয়েছে এবার অন্তত সেগুলোর পুনরাবৃত্তি না করে ইতিবাচক মনোভাব ও খোলা মন নিয়ে সংলাপকে উদারভাবে সাফল্যের দিকে এগিয়ে নেয়াই উভয়পক্ষের জন্য উচিৎ হবে। কেননা জনগণ এই সংলাপের উদ্যোগকে অন্ধকারের মাঝে একটি আশাবাদ হিসেবে দেখতে চায়। তাই দেশের স্বার্থে দেশের জনগণ সফল একটি সংলাপ দেখতে উদগ্রীব। আর তাহলেই দেশ ও জাতির জন্য আগামীতে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং একই সাথে রাজনৈতিক স্থিতিশীল পরিবেশের প্রত্যাশা পূরণ হবে’।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।