Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘মিয়ানমারের বর্বরতাকে গণহত্যা ঘোষণা দেয়া উচিত ট্রাম্পের’

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

মিয়ানমারে সঙ্ঘটিত বর্বরতা নিয়ে ২০১৮ সালের আগস্টে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের এক রিপোর্টে বলা হয়: “উত্তর রাখাইন রাজ্যে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিককালের সহিংসতা ছিল চরম পর্যায়ের, ব্যাপক মাত্রার, এবং সেখানে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে তাদেরকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে বলে মনে হয়। যে মাত্রায় সামরিক বাহিনী অভিযান চালিয়েছে, তাতে বোঝা যায় সেটা ছিল পরিকল্পিত ও সমন্বিত। কিছু এলাকাতে এমন কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে, যেখানে হতাহতের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। যেমন ঘরবাড়ির মধ্যে মানুষকে তালাবদ্ধ করে সে সব ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়েছে এবং রোহিঙ্গারা যখন নৌকা ভর্তি করে পালাচ্ছিল, তখন নৌকা ডুবিয়ে দেয়া হয়েছে”।
যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এখন সময় এসেছে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের বর্বরতাকে গণহত্যা আখ্যা দেয়া। এটা শুধু নৈতিক অবস্থান থেকে নয়, বরং ওই দেশের বিরুদ্ধে এটা কৌশলগত অবস্থান যে দেশের পররাষ্ট্র নীতি প্রায়ই প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। ২০১৭ সালে বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার পর, বিশ্বের মানুষ দেখেছে সেখানে সাত লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী জড়ো হয়েছে। বিশ্বের মানুষ মিয়ানমারের সামরিক অভিযানের নিন্দা জানিয়েছে এবং শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের অস্বীকৃতির নিন্দা জানিয়েছে। জাতিসংঘের সা¤প্রতিক একটি রিপোর্টেও বলা হয়েছে, ‘গণহত্যার উদ্দেশ্য’ নিয়েই এখানে অভিযান চালানো হয়েছিল। রিপোর্টে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সংশ্লিষ্ট জেনারেলদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
কয়েক সপ্তাহ আগে, জাতিসংঘে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিক্কি হ্যালি ঘোষণা দেন যে, জাতিসংঘের সাম্প্রতিক রিপোর্টের ব্যাপারে তদন্তকারীদের তিনি তাগাদা দিয়েছিলেন যাতে তারা বিষয়টি জাতিসংঘ সিকিউরিটি কাউন্সিলের (ইউএনএসসি) কাছে পেশ করে। তথ্য অনুসন্ধানকারীরা পরিষ্কার তথ্য দিয়েছেন যে সেখানে কী ঘটেছে। এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত পদক্ষেপ নেয়া। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি পদক্ষেপ নিতে চায় তাহলে তাদের একজন নেতার প্রয়োজন হবে এবং যুক্তরাষ্ট্র এখানে সে ভূমিকা রাখতে পারে। সেটা হলো আসন্ন ইউএনএসসি বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে এটাকে গণহত্যা ঘোষণা দেয়া। তবে এই পদক্ষেপ যেন বিচ্ছিন্ন না হয়। বরং মিয়ানমারের উপর মার্কিন নীতি আরও কঠোর করার প্রথম ধাপ হতে পারে এটা। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও এরই মধ্যে বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র দায়িদেরকে বিচারের মুখোমুখি করবে এবং মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে অবশ্যই মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে।
কিন্তু মিয়ানমার সরকার কিছুই করেনি এবং বেপরোয়া হয়ে আছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনেও সেটা দেখা গেছে। মিয়ানমার কোন ‘বৈশ্বিক নজরদারি’ এবং মার্কিন পদক্ষেপকে ভয় পায় না। মিয়ানমারের হত্যাকাণ্ডকে গণহত্যা আখ্যা দেয়ার মাধ্যমে তাদের উপর নীতি কঠোর করার প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত ট্রাম্প প্রশাসনের।
বসনিয়ার কথা স্মরণ করে প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন বলেন, “বলকান থেকে আমরা শিখেছি যে, বর্বরতার জবাবে চুপ করে থাকলে শুধু বর্বরতা বাড়েই। কিন্তু শক্ত পদক্ষেপ নিলে সেনাবাহিনীকে থামানো যায় এবং জীবন রক্ষা করা যায়”। আর এই শক্ত পদক্ষেপের শুরুটা একটা শব্দের মাধ্যমে শুরু হতে পারে: গণহত্যা। সূত্র : এসএএম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ