নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
যে কোন মুহূর্তে ঘোষণা আসতে পারে ‘হুলেন লোপেতেগি এখন থেকে আর রিয়াল মাদ্রিদের কোচ নন’। পরশু ন্যু ক্যাম্পে এল ক্ল্যাসিকো ম্যাচে বার্সেলোনার কাছে রিয়াল মাদ্রিদ ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে এই সংবাদ নিয়েই সরগম ইউরোপিয়ান ফুটবলের গণমাধ্যম। বার্নাব্যুতে সম্ভব্য নতুন কোচের নাম হিসেবেও শোনা যাচ্ছে সাবেক ইতালি, জুভেন্টাস ও চেলসি কোচ আঁতোয়ান অঁতের কথা।
রোনালদো-জিদান পরবর্তি সময়টা কেমন কাটাচ্ছে রিয়াল এটি বোঝার জন্য পরশু এল ক্ল্যাসিকোর দিকে না তাকলেও চলবে। পয়েন্ট তালিকাটা দেখুন। নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে। দশম রাউন্ড শেষে শীর্ষ আটেও যে নেই রিয়ালের নাম! অপরদিকে চিরপ্রতিদ্ব›দ্বীদের চেয়ে সাত পয়েন্ট এগিয়ে তালিকার শীর্ষে বার্সেলোনা।
উত্তাপের এল ক্ল্যাসিকোয় পরশু লুইস সুয়ারেজের হ্যাটট্রিকের ম্যাচে রিয়াল আরো বড় ব্যবধানে হারলেও অবাক হওয়ার ছিল না। গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়া ওমন দুর্দান্ত কিছু সেভ না দিলে এবং সুয়ারেজ সুযোগগুলো অন্তঃত ৯০ ভাগ কাজে লাগাতে পারলেও হয়ত আরো বড় পরাজয়ের লজ্জায় পড়তে হত সফরকারীদের। উরুগুয়ান স্ট্রাইকারের হ্যাটট্রিকের আগে-পরে অন্য গোল দুটি করেন ফিলিপ কুতিনহো ও অ্যালেক্স ভিদাল। এমন হারের পর কোচ হুলেন লোপেতেগির বরখাস্ত হওয়াটা শ্রেফ রিয়াল কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা বলে মনে করছে ইউরোপের গণমাধ্যম।
রোনালদো চলে যাওয়ায় যারা রিয়াল ডুবল বলে রব তুলেছিলেন তাদের জন্য এটাও জেনে রাখতে হবে যে ন্যু ক্যাম্পের ম্যাচে এদিন ছিলেন লিওনেল মেসিও। লড়াইটা সেক্ষেত্রে সমানে সমানে হওয়ার কথা। কিন্তু তা তো হয়-ই নি, উল্টো আর্নেস্তো ভালভার্দের রণকৌশলের কাছে করুণভাবে ধরাশায়ী হন লোপেতেগি। লিগে শেষ পাঁচ ম্যাচে এটি তার তৃতীয় হার। সব মিলে শেষ সাত ম্যাচে জয় মাত্র একটি। সাড়ে চার মাস রিয়ালের দায়িত্বে এসে ১৪ ম্যাচে দলকে জেতাতে পেরেছেন মাত্র ছয়বার, ছয়টিতেই হার। লা লিগার পয়েন্ট তালিকাতে তাদের অবস্থান নয় নম্বরে! বিশ্বের সবচেয়ে সফল ক্লাবের কোচের নামের পাশে অন্তঃত এই পরিসংখ্যান বেমানান।
এরপরও লোপেতেগির আশা, দলকে টেনে তুলবেন তিনি। চোখে-মুখে রাজ্যের হতাশা নিয়ে ম্যাচ শেষে স্প্যাানিশ কোচ বলেন, ‘আমরা সবাই জানি বিশ্ব ফুটবল কিভাবে কাজ করে, এবং এর শেষ দায়ীত্ব বর্তায় কোচের উপর। আমি অবুঝ নই।’ ‘এখানে আমরা সবাই মিলেই জিতি এবং হারি। আমরা এখনো মৌসুমের শুরুতে আছি এবং আমি এখনো বিশ্বাস করি মাদ্রিদ এখনো উদযাপন করতে পারে।’ লোপেতেগির এই কথা যে শ্রেফ ভদ্রতাবসত বলা তাও বুঝে গেছে গণমাধ্যম। দ্য সান বলছে, বিদায় নিশ্চিত জেনে ম্যাচ শেষে নাকি এদিন শিষ্যদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিয়েছেন লোপেতেগি।
লোপেতেগি অবশ্য এমন দুঃসময়ে পাশে পাচ্ছেন শিষ্য এমনকি প্রতিপক্ষ কোচকেও। সবার ক্যারিয়ারেই এমন কঠিন সময় আসতে পারে উল্লেখ করে বার্সা কোচ বলেন, ‘লোপেতেগির সঙ্গে যা হচ্ছে তেমনটা তিন সপ্তহের মধ্যে আমার সঙ্গেও হতে পারে। আমি তার মঙ্গল কামনা করি।’ ভালভার্দে আরো বলেন, ‘বরখঅস্ত হওয়াটা তার প্রাপ্য কিনা তা আলোচনা করব না। কোন কোচ চাকরি হারাক আমি তা চাই না। সেটা লোপেতেগি নয়, হুয়েস্কার কোচ নয়, গ্রানাদার কোচ নয় এভং অবশ্যই বার্সার কোচ নয়।’ ম্যাচ পরবর্তি সময়ে ক্ল্যাসিকোর নায়ক সুয়ারেজকে নিয়ে প্রসংসার করেন ভালভার্দে।
ন্যু ক্যাম্পে সর্বশেষ চার ম্যাচের একটিতেও না হারা রিয়ালকে নিয়ে যে বার্সা এদিন এভাবে খেলবে তা হয়ত কেউ কল্পনাও করেনি। জর্ডি আলবার দুর্দান্ত পাস থেকে দলকে এগিয়ে নেন কুতিনহো। ভিডিও রেফারির সহায়তায় পাওয়া সুয়ারেজের পেনাল্টি গোলে প্রথমার্ধে ব্যবধান দ্বিগুণ করে মাঠ ছাড়ে বার্সা। তবে এসময় স্কোরলাইন ৪-০ থাকাটাও অস্বাভাবীক ছিল না। রিয়াল ম্যাচে ছিল দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দশ মিনিট মত। এই সময়েই মার্সেলোর গোল লড়াইয়ে ফেরার ইঙ্গিত দেয় লস ব্ল্যাঙ্কোকাসরা। এসময় লুকা মড্রিচের একটি শট বারে লেগে ফিরেও আসে। তিন মিনিট পর একই দুর্ভাগ্যের শিকার হয় বার্সাও। বাকি সময়ে সুয়ারেজের দুর্দান্ত এক হেড ও একটি চিপ শটে পরাজয় নিশ্চিত হয় রিয়ালের। আর শেষ সময়ে ভিদালের করা গোলটা ছিল বিধ্বস্ত বন্দী সেনার পিঠে চপেটাঘাতের মত।
# গত ২৪ বছরে লিওনেল মেসির পর দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে এল ক্ল্যাসিকোয় হ্যাটট্রিক করলেন লুইস সুয়ারেজ।
# ২০১০ সালে বার্সেলোনার কাছে ৫-০ গোলে হারের পর এই প্রথম লা লিগায় আবার ৫ গোল খেল রিয়াল।
# ঘরের মাঠে লিগ ম্যাচে এ নিয়ে টানা ৪২ ম্যাচ অপরাজিত বার্সা। ১৯৭৭ সালের পর যা সর্বোচ্চ। সেবার টানা ৬৭ ম্যাচ অপরাজিত ছিল কাতালান দলটি।
# স রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে এ নিয়ে ১২ ম্যাচে নয় গোল করলেন সুয়ারেজ।
# স ২০০৯ সালে হুয়ান্দে রামোসের পর এই প্রথম লিগে টানা পাঁচ ম্যাচ জয়হীন রিয়াল মাদ্রিদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।