মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সউদী আরব মঙ্গলবার পাকিস্তানকে নগদ অর্থ সহায়তা ও তেলসহ পাকিস্তানকে ৬শ’ কোটি ডলার দিয়েছে। এ অর্থ পাকিস্তানের প্রতি লাইফ লাইন যা প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকারকে ভীষণ প্রয়োজনীয় শ্বাস ফেলার অবকাশ দিয়েছে। গত চার বছরে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার সউদী আরব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে এগিয়ে এল।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, সউদী অর্থ সাহায্য পাকিস্তানের দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক প্রয়োজন পূরণ করবে না। তাই পাকিস্তান সরকারকে আইএমএফের ঋণ কর্মসূচিতে প্রবেশ করতে হবে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দু’দিনের সউদী আরব সফর শেষে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়এ চুক্তির বিশদ বিবরণ প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, সউদী আরব ব্যালেন্স অব পেমেন্ট-এর জন্য পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এক বছরের জন্য ৩শ’ কোটি ডলার আমানত রাখবে।
পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী আসাদ উমর ও সউদী অথমন্ত্রী মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল-জাদান সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) স্বাক্ষর করেন। সউদী অর্থ অবিলম্বে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভকে ডবল ডিজিটে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে, সে সাথে বৈদেশিক খাতের উপর চাপ হ্রাস করবে। পররাষ্ট্র দফতর জানায়, সউদী আরব ৩শ’ কোটি ডলার পাকিস্তান স্টেট ব্যাংকে (এসবিপি) নগদ আমানত রাখবে এবং বাকি ৩শ’ কোটি ডলার দিয়ে এক বছরের বিলম্বিত পরিশোধ সুবিধাসহ তেল সরবরাহ করা হবে। সউদী আরব পাকিস্তানিদের ভিসা ফি কমাতেও রাজি হয়েছে। নগদ অর্থ লাভ তাৎক্ষণিকভাবে সরকারের চাপ কমাবে এবং আগামী ৭ নভেম্বর থেকে শুরু আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাথে ঋণ আলোচনা কর্মসূচিতে পাকিস্তানের অবস্থান উন্নত করবে। আমানত শর্তাবলী পরিষ্কার নয়। মাত্র ১ শতাঙ্ক নামমাত্র সুদে চীন স্টেট ব্যাঙ্ক অব পাকিস্তানে গত জুলাইতে ২শ’ কোটি ডলার আমানত রাখে বলে এসবিপি সূত্রে বলা হয়। পাকিস্তান পররাষ্ট্র দফতর জানায়, উভয়পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছেছে যে, তেল আমদানির জন্য সউদী আরব এক বছরের বিলম্বিত সুবিধায় ৩শ’ কোটি ডলার পর্যন্ত দেবে। এ ব্যবস্থা ৩ বছরের জন্য, পরে তা পুনর্বিবেচনা করা হবে।
সউদী আরব ইমরান খানের দ্বিতীয় সফরের পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সমস্যা উত্তরণে সম্মত হয়। ইমরান খান যখন গত সেপ্টেম্বরে পাকিস্তান সফর করেন তখন এ ব্যাপারে ঐকমত্য হয়নি। ইমরান খান আইএমএফের বেইল আউট প্যাকেজ পরিহার করতে আগ্রহী। তিনি দেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ কৃত্রিমভাবে স্ফীত করতে আমানত সংস্থানের জন্য সউদী আরব, চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে (ইউএই) অনুরোধ করেছিলেন। এর আগে সউদী আরব পাকিস্তানের অর্থনীতি চাপের মুখে পড়লে ২০১৪ সালে ১৫০ কোটি ডলার দিয়েছিল।
১৯৯০-এর দশকেও সউদী আরব বিলম্বিত পরিশোধে পাকিস্তানকে তেল দিয়েছিল। তবে পাকিস্তান সে অর্থ পরিশোধ করেনি বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান। আন্তর্জাতিক ঋণ খেলাপি এড়াতে সাহায্যের জন্য পাকিস্তান ১২শ’ কোটি ডলার বৈদেশিক সাহায্যের সন্ধান করছে। অন্যদিকে বিভিন্ন দেশের ঋণ পরিশোধের জন্য পাকিস্তানের ১১৭০ কোটি ডলার প্রয়োজন। সউদী আরবের ৩ বিলিয়ন ডলার নগদ অর্থ সাহায্যে এসবিপির রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়ে ১১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। তেলের জন্য প্রয়োজনীয় ৩১ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ৩ বিলিয়ন ডলার পূরণ হলেও বাকি থাকবে আরো ২৭ বিলিয়ন ডলার।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এ নগদ অর্থ সহায়তা রুপির অবমূল্যায়ন প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করবে এবং সাময়িকভাবে ম্যাক্রোইকনোমিক প্রকল্পগুলোর উন্নয়ন ঘটবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশে পাকিস্তানি শ্রমিকদের ভিসা ফি হ্রাসে রাজি হয়েছেন। এটা সউদী আরবে পাকিস্তানি শ্রমিক সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এক জোরালো পদক্ষেপ। একই সাথে দু’দেশের মানুষের ভ্রমণ সুবিধাও বাড়বে। ধারণা করা হচ্ছে, সউদী আরব বালুচিস্তানে সম্পৃক্ত হতে চায়।
পররাষ্ট্র দফতর বলেছে, অক্টোবরে পাকিস্তান সফরের সময় একটি সউদী প্রতিনিধিদল পাকিস্তানে একটি পেট্রোলিয়াম শোধনাগার প্রতিষ্ঠায় বিনিয়োগের সম্ভাবনা মূল্যায়ন করে। সউদী আরব এ প্রকল্পে তার আগ্রহের কথা নিশ্চিত করেছে। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর এ ব্যাপারে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে। সউদী আরব গোয়াদর তেল শোধনাগারে বিনিয়োগেও আগ্রহ প্রদর্শন করেছে। এছাড়া তামা ও স্বর্ণখনিতেও বিনিয়োগে সউদী আরব আগ্রহী। সূত্র : এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।