পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রতিষ্ঠাকালীন লক্ষ্য ও আদর্শচ্যুত, স্বেচ্ছাচারিতা এবং দলকে পারিবারিক প্রাইভেট লিমিটেডে পরিণত করায় অব্যাহতি দেয়া হচ্ছে বিকল্পধারার বর্তমান নেতৃত্বকে। বর্তমান চেয়ারম্যান ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি. চৌধুরীকে বাদ দিয়ে বিকল্পধারায় আনা হচ্ছে নতুন নেতৃত্ব। বিকল্পধারার নতুন সভাপতি হচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ও দলটির সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল আমীন বেপারী। ৯০’র এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম অগ্রণী নেতা ও বিকল্পধারার সহ-সভাপতি শাহ আহমেদ বাদল হচ্ছেন মহাসচিব। আর যুগ্ম মহাসচিব হবেন কৃষি বিষয়ক সম্পাদক জানে আলম হাওলাদার। আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে বিকল্পধারার নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। সেখান থেকেই প্রতিষ্ঠাকালীন আদর্শ ও লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হওয়া, স্বেচ্ছাচারিতা, অসাংগঠনিক, কর্তৃত্ববাদী এবং দলকে পারিবারিক প্রাইভেট লিমিটেডে পরিণত করায় অব্যাহতি দেয়া হবে বি. চৌধুরী, আব্দুল মান্নান ও মাহি বি. চৌধুরীকে।
দলটির সূত্রে জানা যায়, জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়া নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন দলটির নেতারা। শীর্ষ নেতাদের চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে নেতাকর্মীরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ হওয়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে থাকতে চেয়েছিলেন দলটির বেশির ভাগ নেতা। কিন্তু বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যের নেতাদের ওপর অযথা চাপ প্রয়োগ ও শর্তজুড়ে দেয়ার মাধ্যমে ঐক্য প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করছিল দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। শেষ পর্যন্ত বিকল্পধারার শীর্ষ নেতৃত্ব জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যাপারে নেতিবাচক অবস্থান নেয়ায় প্রকাশ্যে এসেছে সে বিক্ষোভ, বিদ্রোহ।
বিকল্পধারার নেতারা জানান, ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটির মধ্যে বর্তমানে সক্রিয় রয়েছেন ২৬-২৭ জন। তাদের মধ্যে ১৭ জনই এখন নূরুল আমিন বেপারি ও আহমেদ বাদলের নেতৃত্বে রয়েছেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন- সমবায় সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাবুল, যোগাযোগ সম্পাদক খন্দকার জোবায়ের, কৃষকধারার আহবায়কক চাষী এনামুল, প্রচার সম্পাদক প্রকৌশলী জুনু প্রমূখ। ওদিকে বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট প্রফেসর বি. চৌধুরীর নিজ জেলা মুন্সিগঞ্জে তিনি এবং তার পুত্র মাহী বি. চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। ঐক্যফ্রন্টে না থাকায় খুশীও হয়েছেন সেখানকার নেতাকর্মীরা।
শাহ আহমেদ বাদল বলেন, বিগত ১৪ বছরে বিকল্পধারার শীর্ষ নেতারা দলটির কোনো সম্মেলন করেননি। বরং বিকল্পধারার কর্ণধার হিসেবে পরিচিত মাহী বি. চৌধুরীর অসাংগঠনিক সিদ্ধান্তে আগেও অনেক গুণীজন দলত্যাগ করেছেন। কাউকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে, কাউকে করা হয়েছে অকারণে বহিষ্কার। এভাবে রাজনীতি চলতে পারে না। তিনি বলেন, বি. চৌধুরী পুত্রস্নেহে অন্ধ। তাই বিকল্পধারা মানেই মাহী বি. চৌধুরীর স্বেচ্ছাচারিতা, একনায়কত্ব, কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরাচারী আচরণ। সবচেয়ে বড় কথা, মাহী বি. চৌধুরী বিকল্পধারাকে একটি বাণিজ্যিক সংস্থা, বার্গেনিং এজেন্সি এবং পারিবারিক প্রাইভেট লিমিটেডে পরিণত করেছেন।
বাদল জানান, প্রফেসর বি. চৌধুরী তার ছেলের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছেন। মহাসচিব আব্দুল মান্নান বেকায়দায় আছেন মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ভুমিকা ও ব্যাংকঋণের চাপে। আসলে উনাকে মাহী বি. চৌধুরীই চাপে রেখেছেন। মাহী একের পর এক গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজ করেছেন, দলের সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করতে চান- তাই তার বর্তমান নেতৃত্বকে অব্যাহতি দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, যে আশা নিয়ে আমরা দল গঠন করেছিলাম মাহি বি. চৌধুরীর একনায়কতন্ত্র ও কর্তৃত্ববাদী আচরণের কারণে সেটি হয়নি। মাহিই করতে দেয়নি। ঐক্য প্রক্রিয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা বেশিরভাগ নেতাই বলেছিলাম আমরা ছোট দল ঐক্য প্রক্রিয়ার সাথে থাকতে হবে। দেশের জনগণ এখন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পক্ষে জাতির এই দাবির বিপক্ষে গেলে কিংবা কোনরকম ছলচাতুরি করলে বেঈমান হিসেবে চিহ্নিত হবো। কিন্তু তার ছেলের কারণে সেটি আর সম্ভব হয়নি। এখন বিকল্পধারার নতুন নেতৃত্ব জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাথে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশ নেবে।
বিকল্পধারার একাধিক নেতা জানান, নতুন নেতৃত্বই বিকল্পধারার প্রতিনিধিত্ব করবে। কেননা কেন্দ্রীয় কমিটির সক্রিয় বেশিরভাগ নেতা তাদের সাথে থাকছেন। এছাড়া নাটোর, লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী জেলা কমিটি, কৃষক ধারাসহ অন্য অঙ্গসংগঠনগুলো, খোদ মুন্সিগঞ্জের কমিটিও নতুন নেতৃত্বের সাথে। কারণ জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে দেশে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিকল্প নেই। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণদাবি অনুযায়ী যে আন্দোলন শুরু হয়েছে সে আন্দোলনের বাইরে থাকলে কেউ সাথে থাকবে না। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যুক্ত হয়ে ৭ দফা ও ১১ লক্ষ্যকে সামনে রেখে দেশের কল্যাণে বিকল্পধারা ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করেন তারা। বিএনপি থেকে বের হয়ে ২০০৪ সালে মার্চ মাসে ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিকল্পধারা গঠন করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।