Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উপকূলীয় তিন বিভাগে সড়ক যোগাযোগ সহজতর হচ্ছে না

ফেরি পারাপার নির্বিঘ্ন নয়

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১৮ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

ফেরি চলাচল নির্বিঘ্ন না হওয়ায় উপকূলীয় ৩টি বিভাগ এবং সবগুলো সমুদ্র বন্দর ছাড়াও প্রধান দুটি স্থল বন্দরের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ সহজতর হচ্ছে না। চট্টগ্রাম-বরিশাল-মোংলা-খুলনা মহাসড়কের ভোলা-লক্ষীপুর, ভোলা-বরিশাল এবং বরিশাল-পিরোজপুরের মধ্যে ফেরি পারাপার এখনো ঝঞ্ঝাটপূর্ণ। অথচ এ মহাসড়কটির মাধ্যমেই চট্টগ্রামের সাথে ভোলা-বরিশাল হয়ে মোংলা এবং খুলনা ছাড়াও বেনাপোল ও ভোমরা স্থল বন্দরেরও সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিদ্যমান। সড়কপথেই খুলনা, মোংলা, বরিশাল, বেনাপোল ও ভোমরা বন্দরের সাথে চট্টগ্রাম বন্দরসহ সমগ্র বিভাগের দূরত্ব প্রায় অর্ধেক হ্রাস করা সম্ভব। অন্যদিকে এ সড়ক পথটি নির্বিঘ্ন হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর চাপ অনেকটা হ্রাস করা সম্ভব বলে মনে করেন ওয়াকিবহাল মহল।
মহাসড়কের ভোলা ও লক্ষীপুরের মধ্যবর্তী ইলিশা-মজু চৌধুরীর হাট ফেরি সেক্টরে আজো যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করার যথাযথ উদ্যোগ নেই। ২৮ কিলোমিটারে এতদিন মাত্র দুটি ফেরি ছিল। বর্তমানে ৪টি কে-টাইপ ফেরি মোতায়েন করেছে বিআইডব্লিউটিসি। কিন্তু একটি বিকল থাকছে।
ফেরি পথের মেঘনার পূর্ব তীরের ‘বুড়ির খাল’ এলাকায় গভীরতা সঙ্কটের জন্য ভাটির সময় ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এদিকে অচল হয়ে পড়া ‘ক্যামেলিয়া’ ফেরিটি সচল করার পরেই আবার ফেরি ‘কিষাণী’ মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বসিয়ে দেয়ার কথা জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি’র কারিগরি পরিদপ্তরের দায়িত্বশীল মহল।
অপরদিকে মহাসড়কের ভোলা-বরিশালের মধ্যবর্তী ভেদুরিয়া-লাহারহাটে ৩টি ‘ইউটিলিটি টাইপ-১’ ফেরি থাকলেও একটি বন্ধ থাকছে। সুইডেনের ‘ভলভো পেন্টা’ ইঞ্জিন বিশিষ্ট দুটি ফেরির একটি পর্যায়ক্রমে কারিগরি ত্রু টির কারণে বন্ধ থাকছে। এভাবে ভোলা-লক্ষীপুর পথে কখনোই ফেরি পারাপার নির্বিঘ্ন হচ্ছে না। এতে মেঘনার দুই তীরেই প্রতিনিয়ত বিপুল সংখ্যায় যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় থাকছে। চট্টগ্রাম থেকে লক্ষীপুর-ভোলা হয়ে বরিশাল পর্যন্ত একটি ট্রাক পৌছতে ৩ থেকে ৪ দিন পর্যন্ত সময় লাগছে। লাহারহাট-ভেদুরিয়ায়ও যানবাহন পারাপারে দীর্ঘ সময় ঘাটে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
এই মহাসড়কের পিরোজপুরের কাছে কঁচা নদীতে বেকুটিয়ায় ফেরিতে যানবাহনের চালকসহ যাত্রীদের নানা বিড়ম্বনার সম্মুখীন হতে হয়। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর দীর্ঘদিনের পুরনো ‘ইউটিলিটি টাইপ-১’ ফেরির সাহায্যে এ ঘাটে যানবাহন পারপার করছে। কিন্তু ৩টি ফেরির মধ্যে মাত্র একটিতে সম্প্রতি নতুন ইঞ্জিন সংযোজন করা হয়েছে। অপর দুটির ইঞ্জিন দুই দশকেরও বেশি পুরনো। ফলে মাত্র একটি ফেরি এ ঘাটে এক ঘণ্টা অন্তর যানবাহন পারাপার করছে। প্রায় প্রতিটি যানবাহনকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
অথচ এ মহাসড়কে ফেরি পারপার নির্বিঘ্ন করতে খুব বেশি সমস্যা নেই বলে অভিমত যানবাহন চালক ও যাত্রীদের। তাদের মতে, ভোলা-লক্ষীপুর পথে ৪টি কে-টাইপ এবং ভোলা-বরিশালে ৩টি ইউটিলিটি ছাড়াও বেকুটিয়া ঘাটে সার্বক্ষণিকভাবে দুটি করে ফেরি চলাচল নিশ্চিত করলে চট্টগ্রারে সাথে বরিশাল হয়ে মোংলা-খুলনা-বেনাপোল এবং ভোমরা স্থল বন্দরের সংক্ষিপ্ত ও দ্রুত সড়ক যোগাযোগ নির্বিঘ্ন করা সম্ভব হত।
কিন্তু এ দুটি পথে আজ পর্যন্ত টেকসই ও দ্রুতগতি ফেরি পারাপার নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হয়নি নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়। সড়ক অধিদপ্তরও বেকুটিয়াতে টেকসই ফেরি পারাপার নিশ্চিত করতে পারেনি।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটসি’র বাণিজ্য ও কারিগরি পরিদপ্তরের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সাথে আলাপ করা হলে সকলেই ফেরির স্বল্পতার কথা জানান। তবে পদ্মা সেতু চালু হলে ফেরি সঙ্কট থাকবে না বলেও তারা আশ্বস্ত করেন। বেকুটিয়াতে আগামী ১০ বছরের মধ্যে সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হবে। ফলে এখানেও কোন সঙ্কট থাকবে না বলে জানান সড়ক অধিদপ্তরের উর্ধতন প্রকৌশলীরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উপকূলীয়

৩১ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ