Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

কুমিল্লায় বাড়ছে মাদকসেবীর সংখ্যা

মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল, চান্দিনা (কুমিল্লা) থেকে : | প্রকাশের সময় : ১১ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে মাদকসেবীর সংখ্যা। মাদকে ছেয়ে গেছে কুমিল্লার অলিগলি। প্রকাশ্যেই বসছে মাদকের হাট। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে বানের মতো আসা মাদকদ্রব্য ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। শহর থেকে গ্রাম, হাত বাড়ালেই মরণ নেশা ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজাসহ সবধরনের মাদক। সহজলভ্যতার কারণে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে মাদকসেবীর সংখ্যাও। যাদের সিংহভাগই যুবক-তরুণ। রয়েছে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও। এসব মানুষকে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুমিল্লা সীমান্তের ওপার থেকে শতাধিক স্থান দিয়ে প্রতিদিন প্রবেশ করছে মাদক। প্রতিদিনই পুলিশ-বিজিবিসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটকও হচ্ছে। দিনদিন দীর্ঘ হচ্ছে মাদকসেবীর তালিকাটাও।
অপরদিকে, মাদকসেবীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও কুমিল্লায় প্রকৃত মাদকাসক্তের সংখ্যাটা জানেন না সংশ্লিষ্ট কেউ। এমনকি জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়েও এ সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। তবে কুমিল্লার মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলোর কর্মকর্তাদের ধারণা, কুমিল্লায় সরাসরি মাদকাসক্ত লক্ষাধিক। সৌখিন ও কৌতুহলি মাদকাসক্ত রয়েছে অন্তত ২০ হাজার। কুমিল্লার সাতটি রিহ্যাব সেন্টার ঘুরে জানা গেছে, এর প্রতিটিতেই আসন সংখ্যার দ্বিগুণেরও বেশি আসক্ত চিকিৎসা নিচ্ছে। যাদের বেশিরভাগই তরুণ। এর মধ্যে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও রয়েছেন। এই সাতটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে ১৪০টি আসন থাকলেও বর্তমানে চিকিৎসাধীন প্রায় ৩০০ জন। আর গত এক বছরে প্রতিটি রিহ্যাব সেন্টার থেকে গড়ে ২০০ জন করে মাদকাসক্ত ব্যক্তি চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ছাড়া জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের তথ্যমতে, এই সময় কুমিল্লা কারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন এক হাজার ৪২৯ জন মাদকাসক্ত।
চিকিৎসা নিতে আসা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর বলেন, বন্ধুদের পাল্লায় পড়েই নেশায় জড়িয়েছি। তাদের সঙ্গে চলতে গিয়ে প্রথমে গাঁজা এবং পরে ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়ি। পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি টের পেয়ে আমাকে এখানে রেখে গেছেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হৃদয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শহীদুল ইসলাম আরজু বলেন, একজন মাদকাসক্তের যথাযথ চিকিৎসা রিহ্যাব সেন্টার ছাড়া সম্ভব নয়। কারণ তারা অনেক সময় অনেক জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ ছাড়া তাদের মধ্যে মানসিক যন্ত্রণাটাও বেশি লক্ষ্য করা যায়। সে বিবেচনায় সেন্টারগুলোতে খুবই দক্ষতা ও গুরুত্বের সঙ্গে তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। রিহ্যাব অ্যাসোসিয়েশন কুমিল্লার সভাপতি ও আদর মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম সেলিম বলেন, জীবনের সবকিছু হারানোর পরই একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসা নিতে আসেন। নিয়মিত ক্লাস ও ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে তাদের পুরনো জীবনে ফিরিয়ে নেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য।
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়, কুমিল্লার উপ-পরিচালক মো. মানজুরুল ইসলাম বলেন, কুমিল্লা সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় এবং কুমিল্লাকে মাদক পাচারের ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করায় এখানে মাদকের আগ্রাসন বেশি। এর প্রভাবেই যুব সমাজের একটি অংশ মাদকে জড়িয়ে পড়ছে। সন্তান কখন কোথায় যাচ্ছে, কী করছে খেয়াল রাখতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাদক

২২ অক্টোবর, ২০২২
২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ