নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
মাঠের লড়াইয়ে হাসতে শেখা বাংলাদেশ বেশ কিছুদিন থেকেই লড়ছে চোটের সঙ্গে। প্রায় সবক’জন সিনিয়র ক্রিকেটারই পড়েছেন চোটের কবলে। কিছুতেই যেন কাটছিলো না সেই কালো মেঘ। চোট জর্জর শিবিরে অবশেষে হাসলো আলোর সূর্য। দলের সবচেয়ে বড় শঙ্কায় পড়া সাকিব আল হাসানের আঙুলের চোট নিয়ে উড়ে এলো সুখবর। মেলবোর্নের হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গ্রেগ হয়ের তত্ত¡াবধানে চলছে তার হাতের চিকিৎসা, সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফল পাওয়া গেছে গতকাল। বাংলাদেশ টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক নিজেই জানালেন, রিপোর্ট ভালো এসেছে। আপাতত দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
জানুয়ারিতে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে পাওয়া আঙুলের চোটটা সাকিবকে ভালোই ভুগিয়েছে। চোটটা মারাত্মক আকার ধারণ করে দুবাইয়ে এশিয়া কাপ খেলতে গিয়ে। আঙুলের সংক্রমণ বিরাট ঝুঁকির মধ্যেই ফেলে দেয় সাকিবকে। দেশে সংক্রমণের আপৎকালীন সমাধান করে মেলবোর্নে চিকিৎসক গ্রেগ হয়ের কাছে যেতে হয়েছে দেশসেরা অলরাউন্ডারকে। সেখানে চলছে তার চিকিৎসা। ৪৮ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণ শেষে গতকাল হাতে পেয়েছেন চিকিৎসকদের রিপোর্ট। নিজের উন্নতি দেখে খুশি হয়েছেন নিজেই, আশ্বস্ত করেছেন দশেরে ক্রিকেটকে, ‘রিপোর্ট সব ভালো। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে পুরো সেরে উঠতে সময় লাগবে।’
সাকিবের সবচেয়ে বড় স্বস্তি, আঙুলে চামড়া উঠতে শুরু করেছে, উন্নতিও চোখে পড়ার মতো। তবে চিকিৎসকের কড়া নির্দেশ তিন মাসের আগে ব্যাট ধরা যাবে না। এই তিন মাসে যদি ব্যথা পুরোপুরি চলে যায়, সাকিবের অস্ত্রোপচার নাও লাগতে পারে। যদি ব্যথাটা থেকে যায়, তাহলে হয়তো অস্ত্রোপচারের বিকল্প থাকবে না। মেলবোর্ন থেকে ফেরার পর ধীরে ধীরে পুনর্বাসনপ্রক্রিয়া শুরু করবেন সাকিব।
কত সময় লাগবে, সেটি অবশ্য এখনই বলা কঠিন। তবে মেলবোর্নে আরও ছয় দিন থাকতে হবে তাকে। এই ক’দিন ধরে তাকে দেওয়া হবে অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন। এই প্রক্রিয়া শেষ হলে চিকিৎসক আরেকবার দেখে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবেন।
সাকিব ভেবেছিলেন, চিকিৎসকের প্রতিবেদন ভালো হলে তার বিকেএসপির কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের বোনের বাসায় উঠবেন এবং শুক্রবার দেশে ফিরে আসবেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এখনই তাকে ছাড়তে রাজি নয়। সাকিবকে রোববার পর্যন্ত থাকতে হচ্ছে হাসপাতালে। সব ঠিক থাকলে ওই রাতেই দেশে ফিরবেন।
আঙুলের সংক্রমণে যে দুশ্চিন্তার মেঘ ধরেছিল সাকিবকে ঘিরে, সেটি ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে- বাংলাদেশ ক্রিকেটের আপাতত এটাই বড় সুসংবাদ। ক্রিকেট বোর্ডেও ফিরেছে স্বস্তি। সাকিব যখন সুস্থতার পথে ঠিক তখনই ঢাকার ক্রিকেট পাড়ায় ফিরে এসেছে পুরোনো বিতর্ক, কেন তাকে খেলতে পাঠানো হলো এশিয়া কাপে! বিসিবি সভাপতি কিংবা বোর্ডের প্রচ্ছন্ন কিংবা প্রকাশ্য চাপ ছিল, এ রকম অভিযোগ উঠছে। তবে সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন নাজমুল হাসান পাপন। গতকালই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিসিবি প্রধান জানালেন, হজের সময় সাকিবের সঙ্গে যখন তার কথা হয়েছিল, সাকিব নিজেই খেলার আগ্রহের কথা বলেছিলেন, ‘মক্কা ও মদিনা, দুই জায়গাতেই আমার সঙ্গে ও দেখা করল। মক্কায় জিজ্ঞেস করল যে কি করবে। আমি বললাম, ‘এটা তোমাদের সিদ্ধান্ত।’ মদিনায় এসে শেষ আমি ওকে বললাম, ‘দেখো, তুমি এরকম ঝুঁকি নিও না, ডাক্তার-ফিজিওর সঙ্গে কথা বলো। সেরা কোনো ডাক্তারকে দেখিয়ে তার পর সিদ্ধান্ত নাও।’ ও আমাকে বলল, ‘ফিজিও বলে দিয়েছে কোনো সমস্যা নেই। আমি আবার ওকে বললাম, ‘খেললে কি এটা খারাপ হতে পারে নাকি?’ ও বলল, ‘না।’ এরপরও আমি ওকে বলিনি খেলতে। আমি ওকে বলেছি, ‘একজন ভালো ডাক্তার দেখাও। তার পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করো।’ এটাই ছিল ওর সঙ্গে আমার শেষ কথা। আমি ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলেছি। ওর (সাকিবের) চোট এত গুরুতর কি করে হলো সেটি আমরাও জানার চেষ্টা করছি।’
একটু অবহেলার কারণে ক্যারিয়ারতো বটেই হাতটিও হারাতে পারতেন দেশসেরা এই অলরাউন্ডার। গুরুতর চোটের পরও উচ্চতর চিকিৎসা নেবার আগে বিসিবি ফিজিও দেবাশিষ চৌধুরীকেও দায়মুক্তি দিয়ে গিয়েছিলেন সাকিব নিজে। পাপনও নিজের দায় এড়ালেন। তবে সাকিবের এই অবস্থার জন্য আসল অপরাধী কে?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।