মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আফগানিস্তানের হেরাত প্রদেশের ঘুরিয়ান লৌহ খনি হলো ইউএস ওভারসিস প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন (ওপিআইসি) আন্ডাররিটেনের প্রস্তাবিত যুক্তরাষ্ট্র/উজবেকিস্তান খনি প্রকল্পের নিখুঁত পাইলট বিনিয়োগ টার্গেট। এ কথা বলেছেন আফগান প্রেসিডেন্টের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কায়ুমি। গত মে মাসে ওয়াশিংটন ডিসিতে ট্রান্স-ক্যাসপিয়ান ফোরামে ক্যাপিটল ইন্টেলিজেন্সে বক্তৃতাকালে কায়ুমি বলেন, ইরান সীমান্তে থাকা ঘুরিয়ান খনিটি আফগানিস্তানের উত্তর ও দক্ষিণে এং এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতে লোহার আকরিক সরবরাহ করতে পারে। আফগানিস্তানের নতুন খনি খাতটি যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকারীদের জন্য খুলে দেয়াটা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য প্রস্তুত করা মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মূল্যায়ন প্রতিবেদনের সাথে সাংঘর্ষিক। তাতে বলা হয়েছিল, আফগানিস্তানে বেসরকারি খাতের খনি বিনিয়োগের মতো পরিকাঠামো, পরিবহন, নিয়মকানুন বা পরিবেশ নেই।
চলতি মাসের শেষ দিকে উজবিকস্তান ও কাজাখস্তানে মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রসের বাণিজ্য মিশনের সময় যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপিত হবে তার অন্যতম হবে উজবেক ও কাজাখ কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে মার্কিন বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ।
এর আগে ১৬ মে উজবেক প্রেসিডেন্ট শাভকাত মিরজিয়োয়েভ ও ১৮ জানুয়ারি কাজাখ প্রেসিডেন্ট নুরসুলতান নাজারবায়েভ যুক্তরাষ্ট্র সফর করে ট্রাম্পের সাথে আলোচনা করেছিলেন।
১৬ মে ওভাল অফিসে উজবেক প্রেসিডেন্টের সাথে ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্র/উজবেক উদ্যাগ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। বিপুল মার্কিন বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ নিয়ে মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সাথে আলোচনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। উজবেক ও কাজাখ প্রেসিডেন্টরা এর জের ধরেই ঘোষণা করতে সক্ষম হয়েছেন যে ট্রাম্পের সাথে বৈঠক করে তারা ১৫ বিলিয়ন ডলার বেসরকারি খাতের বিনিয়োগের চুক্তিতে পৌঁছতে পেরেছেন।
আফগান অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হলো একে ঢেলে সাজানো। এর মাধ্যমে দেশটির প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি হবে। আর এ দিক থেকে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাত হতে পারে খনি। দেশটি লোহা, কপার, লিথিয়াম এমনকি সোনার খনিতেও সমৃদ্ধ। নোভা স্কটিয়া ব্যাংকের এক খনি ব্যাংকার বলেন, আফগানিস্তান হলো খনি বিনিয়োগকারীদের জন্য এল ডোরাডো। কিন্তু সেখানে নিরাপত্তা সমস্যার কারণে পাশ্চাত্যের খনি বিনিয়োগকারীরা আগ্রহী হচ্ছে না। এটি চীন ও রাশিয়ার জন্য বিশেষ ক্ষেত্র।
যুক্তরাষ্ট্র-উজবেক সরকারের মধ্যকার সম্পর্ক বেশ শক্তিশালী। তবে মধ্য এশিয়ার দেশ উজবেকিস্তানে গতিশীল ব্যবসায়িক নেতৃত্ব নেই। তবে ব্যতিক্রমী হলেন উজবেক-রুশ স্টিল ও মিডিয়া মোগল আলিশার উসমানভ। রাশিয়ান/ইউক্রেনিয়ান স্টিল গ্রুপ মেটালোনভেস্টের মালিক ও মার্ক জাকারবার্গের ফেসবুকের প্রথম দিকের বিনিয়োগকারী (ডিজিটাল স্কাই টেকনোলজি গ্রুপের মাধ্যমে) উসমানভ এখনো সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্যতম শক্তিশালী ব্যবসায়ী নেতা। তিনি বিশ্বের ৩৭তম ধনী লোক। তার একটি সুবিধা হলো, রেনোভাব গ্রুপের মালিক ভিক্টর ভেকসেলবার্গ বা সাবেক রুসাল প্রধান ওলেগ ডেরিপাস্কার মতো মার্কিন অবরোধে পড়েননি তিনি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, উসমানভ এমন এক ব্যক্তি কেবল যিনি উজবেক খনি কোম্পানিগুলোকে আফগানিস্তানে নিয়ে যেতে সক্ষম। আর এটি এমন সময়ে তিনি করতে পারছেন যখন পাশ্চাত্য ব্যাংক ও বিনিয়োগ আফগানিস্তানে যেতে আগ্রহী। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত উজবেক রাষ্ট্রদূত জ্যাভলন ভাকাভব বলেন, উসমানভ সামাজিক দায়িত্বশীল বিনিয়োগ করেন। তিনি তাসখন্দে একটি মসজিদ নির্মাণে তহবিল দিয়েছেন, এছাড়া বোখারা নগরীর পুনঃগঠনে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজকে অর্থ দিয়েছেন। আফগানিস্তানে মার্কিন সামরিক বাহিনীর অগ্রগতির অভাবে হতাশ হয়ে ট্রাম্প তার প্রশাসনকে দেশটির খনি শিল্পে বেসরকারি মার্কিন বিনিয়োগ বাড়ানোর নির্দেশ দেন। বব উডওয়ার্ডের বেস্ট সেলিং হোয়াইট হাউস এক্সপোস ফেয়ারে বলা হয় যে অব্যাহতভাবে হতাশ হয়ে ট্রাম্প গত সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ ও তার স্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করেন। এ সময় আজারবাইজানি নেতা তাকে বলেন, যে চীনারা আফগানিস্তানে কপার খনিতে বিনিয়াগ করছে।
বইতে বলা হয়, এতে ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করছে, অথচ চীন কপার নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে বিশেষ সুযোগ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার দায়িত্ব আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির। বইতে বলা হয়, আফগানিস্তানের পাহাড়গুলোতে বিপুল পরিমাণে খনিজ সম্পদ রয়ে গেছে। এখান থেকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। এখানে লিথিয়ামের মতো দুর্লভ অনেক খনিজ সম্পদ রয়েছে। এগুলোর মূল্য কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার। ওই সময়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন ও হোয়াইট হাউজ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেনারেল এইচ আর ম্যাকমাস্টারকে আফগানিস্তানে খনি খাতে মার্কিন বিনিয়োগ নিয়ে প্রতিবেদন প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে পররাষ্ট্র দফতর তাদের প্রতিবেদনে নেতিবাচক কথা বলেছিল। তাছাড়া তারা এও বলেছিল, চীনারা আফগানিস্তান থেকে কিছু নিচ্ছে না।
তবে এই প্রতিবেদন সবাই মেনে নেয়নি। এক কানাডিয়ান খনি ব্যাংকার বলেছিলেন, চীন, রাশিয়া, তাজিক আর উজবেকরা আফগানিস্তানে খনি কার্যক্রম চালাচ্ছে। সূত্র : এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।