নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
একটা সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটাররা বিশ্ব ক্রিকেটকে শাসন করেছেন। বোর্ড এবং ক্রিকেটারদের মধ্যকার অভ্যন্তরীণ দ্ব›েদ্বর কারণে দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্ব শাসন করা ক্রিকেট দলটি হারিয়েই যাচ্ছে। তার উপর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ধ্বংস করে দিচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটকে। কথাটি কতটুকু যুক্তিযুক্ত সেটা জানেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক তারকা ক্রিকেটার কার্ল হুপার। ভারতীয় গনমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, আইপিএল ক্যারিবীয়ান ক্রিকেটে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে, ক্রিকেটারদের ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে।
দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে ইনিংস ও ২৭২ রানে হেরেছে কোর্টনি ওয়ালশ, কার্টলি অ্যামব্রোস, কার্ল হুপার, ভিভ রিচার্ডস, ব্রায়ান লারা, জোয়েল গার্নারদের উত্তরসূরিরা। ম্যাচে খেলেননি ক্রিস গেইল, ডোয়াইন ব্রাভো, মারলন স্যামুয়েলস, সুনীল নারাইন, কাইরন পোলার্ডদের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা। অথচ তারা প্রত্যেকেই আইপিএলের আসরে খেলতে ভারতে আসেন।
১০২ টেস্ট আর ১০ হাজার আন্তর্জাতিক রানের মালিক কার্ল হুপার ভারতে এসেছেন ১৬ বছর পর। দুই টেস্টের ধারাভাষ্যকারের দায়িত্ব পাওয়ায় সেখানে যাওয়া তার। ভারতীয় এক গণমাধ্যমে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানালেন, ‘আমরা অপেক্ষায় আছি আগামী আইপিএল আসরের। যেখানে টি-টোয়েন্টির জমজমাট আসর বসে। আমাদের ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটাররা এই আসরের জন্য অপেক্ষায় থাকে। বিশেষ করে আমাদের তরুণ ক্রিকেটাররা। ওরা এমনভাবে টি-টোয়েন্টির দিকে ঝুঁকছে যে টেস্টের মতো ফরম্যাটে তারা খেলতে চাইছে না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের জন্য এটা বড় হুমকি।’
কার্ল হুপার আরও জানান, ‘আইপিএলসহ বিভিন্ন দেশের টি-টোয়েন্টি ফ্রাঞ্চাইজি লিগে খেলতে আমাদের ক্রিকেটাররা মুখিয়ে থাকে। অথচ দেশের ক্রিকেটের বাজে অবস্থা। আইপিএল উইন্ডিজ ক্রিকেটের ক্ষতি করছে। আমাদের তরুণ ক্রিকেটারদের এখন লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে যে কোনো মূল্যে আইপিএলের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজিতে যোগ দেয়া। ক্রিস গেইল, ডোয়াইন ব্রাভো, মারলন স্যামুয়েলস, সুনীল নারাইন, কাইরন পোলার্ডদের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা টেস্ট ক্রিকেট থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে। এভিন লুইসও বোর্ডের চুক্তিতে সই করেনি।’
আইপিএল মাত্র ছয় সপ্তাহের একটি টুর্নামেন্ট। সেখানে দারুণ খেলে নারাইন, গেইল, পোলার্ডরা। অথচ নারাইন তার সবশেষ খেলা টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে (২০১৩ সাল) প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট তুলে নিয়েছিল। গেইল-পোলার্ডরাও দারুণ ফর্মে থাকা অবস্থায় টেস্ট খেলা ছেড়ে দিয়েছে। এগুলোকে দেশের ক্ষতি উল্লেখ করে হুপার যোগ করেন, ‘আমি বলছি না তাদের সাদা পোশাকে দেওয়ার মতো কিছু নেই। ২৬-২৭ বছর বয়সে তারা আরও দুর্দান্ত টেস্ট ক্রিকেটার হতে পারতো। যদি পোলার্ড তার টেস্ট ক্যারিয়ার চালিয়ে যেতো তাহলে কে জানে এই মুহূর্তে সে বিশ্বসেরা টেস্ট ক্রিকেটার হয়ে থাকতো। কিন্তু অন্যদের মতো সে ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি নিয়েই ব্যস্ত। আমরা আরও ভালোমানের কিছু ক্রিকেটারকে হারিয়েছি। এভিন লুইস তো টেস্ট খেলবে না জন্য কেন্দ্রীয় চুক্তিতেই সই করেনি। অথচ সে একজন বিশ্বমানের টেস্ট ক্রিকেটার হতে পারতো।’
এতোসব অভিযোগ করা ৫১ বছর বয়সী হুপার অবশ্য পুরোপুরি ক্রিকেটারদের দোষ না দিয়ে বোর্ডের দিকেও তুললেন অভিযোগের তীর, ‘এমন পরিস্থিতির জন্য ক্রিকেটারদের পাশাপাশি দেশের ক্রিকেট বোর্ডও দোষী। তারা আর্থিকভাবে ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়াতে পারছে না। আজকের দিনে কোন ক্রিকেটার আইপিএলে খেলে বেশি টাকা কামাতে না চায়? শিমরন হেটমেয়ার টেস্ট খেলছে, হয়তো এখানে পারফর্ম করেই সে পরের আইপিএলে সুযোগ করে নেবে। কিন্তু আইপিএলের চাকচিক্যে মজে যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজ তার মতো দুর্দান্ত ক্রিকেটারকে হারায়, তাহলে আমি এটাকে ঘৃনাই করবো। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের স্বার্থে সাবেক ক্রিকেটারদের এগিয়ে আসা উচিত। বোর্ডে এখন এতোটাই দূষণ বেড়ে গেছে যে কেউ এগিয়ে আসে না। ব্রায়ান লারা, অ্যামব্রোসরা জুনিয়র দলের সঙ্গে কাজ করতে পারেন। ভারতে যেমন রাহুল দ্রাবিড়ের মতো তারকারা জুনিয়র দলকে নিয়ে কাজ করছেন। আমিও জুনিয়র লেভেলে কাজ করতে আগ্রহী। তবে এর জন্য বোর্ডের পাশাপাশি আমাদের প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।