পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে স্কুলছাত্রী তৃপ্তি হত্যার পরে দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ঘাতক আলম বিশ্বাসকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এতদিনেও খুনিকে গ্রেফতার করতে না পারায় পুলিশের দায়িত্ব অবহেলাসহ তৃপ্তি হত্যার বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন স্বজনরা। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের কাছে ঘাতক আলমের পালিয়ে যাওয়ার সিসি টিভি ফুটেজসহ বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। অথচ ঘটনার পর দুই মাস পার হয়ে গেলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার তো দূরে থাক এতদিনে আলমের অবস্থানও জানতে পারেনি। পুলিশের দাবি, আলম বিশ্বাসের গ্রামের বাড়িসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় অভিযান চালানো হলেও তার অবস্থান শনাক্ত করা যায়নি। দ্রুততর সময়ে খুনিকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়রা।
গত ৪ আগস্ট রাজধানীর তেজগাঁওয়ের উত্তর বেগুনবাড়ীর সিদ্দিক মাস্টার ঢালের ৪৭ নম্বর বাসার ২য় তলা থেকে সাগরিকা তৃপ্তির (১২) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ও স্বজনদের ধারণা-ধর্ষণ শেষে তৃপ্তিকে হত্যা করে থাকতে পারে আলম বিশ্বাস (২৫)। তৃপ্তি পরিবারের সঙ্গে ওই বাসায় থাকতো এবং তেজগাঁও বিজি প্রেস প্রাইমারি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত। এ ঘটনায় নিহত তৃপ্তির বড় বোন কুলসুম বাদী হয়ে পাশের বাসার মেস ভাড়াটিয়া আলম বিশ্বাসকে আসামী করে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাশেদুজ্জামান দৈনিক ইনকিলাকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে তৃপ্তিকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করার বিষয়টি স্পষ্ট হওয়া গেছে।
এই তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, হত্যাকান্ডের পরে আলমের পালিয়ে যাওয়ার সিসি টিভি ফুটেজ, তার ভোটর আইডি কার্ড ও গ্রামের বাড়ির তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। পরবর্তীতে বেশ কয়েকবার ঢাকা ছাড়াও গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ধোবাউড়ার ডুঙ্গিয়াজুরিসহ বেশ কিছু এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু কোথাও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। এসআই রাশেদ বলেন, ঘটনার পর আলম মোবাইল ফোন ফেলে পালিয়ে গেছে। পুলিশ ফোনটি জব্দ করেছে। এদিকে আলম বর্তমানে কোনো ফোন ব্যবহার না করায় তার অবস্থান শনাক্ত করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, গতকালও আলমকে ধরতে তার গ্রামের বাড়িসহ অন্যান্য স্বজনদের বাসায় অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু তার অবস্থান শনাক্ত না হওয়ায় পুলিশকে মারাত্মক বেগ পেতে হচ্ছে। তিনি বলেন, অভিযান অব্যাহত আছে খুব শীঘ্রই তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
এদিকে তৃপ্তিকে হত্যার পূর্বে ধর্ষণ করা হয়েছিল কিনা সে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কয়েকবার যোগাযোগ করা হয়েছে। দ্রুততর সময়ে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কাল (আজ) সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকসহ অন্যদের সাথে কথা বলা হবে। প্রতিবেদন পাওয়া গেলে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে তিনি জানান।
তৃপ্তির বাবা হাসান আলী ও মা রওশন আরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দুই মাস পার হলেও পুলিশ একমাত্র খুনিকে গ্রেফতার তো দূরে থাক কোথায় আছে সেই অবস্থানও জানতে পারেনি। তারা বলেন, আমরা কোন কিছু চাই না। আমার মেয়েকে যে খুন করেছে সেই খুনিকেও ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করার দাবি জানান তারা।
মামলার বাদী কুলসুম ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট ভোরে তাদের বাবা হাসান আলী মসজিদে যান ও মা কাজের উদ্দেশে বাইরে যান। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তৃপ্তির ঘর থেকে ‘ও মা’ চিৎকার শুনে পাশের ঘরের ভাড়াটিয়ারা ছুটে এসে দরজা ভেতর থেকে বন্ধ দেখতে পান। এ সময় দরজার নিচ দিয়ে তাকিয়ে তৃপ্তিকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে বাড়ির লোকজনদের নিয়ে ভেনটিলেটর ও ঘরের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তৃপ্তিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় শমরিতা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
কুলসুম আরও জানান, সকাল ৯টার কিছু পর তিনি (কুলসুম) ও তার আরেক বোন মুন্নিসহ কয়েকজন নারী যখন দরজার তালা খুলে ভেতরে ঢোকেন, তখন খুনি আলম বিশ্বাস সানশেডের ওপর থেকে হুড়মুড়িয়ে লাফিয়ে পড়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর আলমের মেসের ভাড়াটিয়া বিশু, মোবারক (১) শরিফুল ও মোবারক (২) এবং আলমের ভাই মোজাম্মেল বিশ্বাসকে পুলিশ আটক করলেও পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।