পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ ভুমিকম্প ও সুনামির আঘাতে নিহতদের গণকবরে দাফন করা শুরু করেছে স্বেচ্ছাসেবীরা। শুক্রবারের এই দুর্যোগে এখন পর্যন্ত দেশটিতে কমপক্ষে ৮৪৪ জন নিহত হয়েছে।
দ্বীপরাষ্ট্রটির দ‚রবর্তী এলাকাগুলোর সঙ্গে এখনও যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। এজন্য নিহতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিধ্বস্ত ভবনের নিচে চাপা অনেকেই এখনও জীবিু রয়েছেন বলে ধারণা করছেন উদ্ধারকারীরা। তবে ভারী যন্ত্রপাতির অভাবে দুর্যোগের পর উদ্ধার তৎপরতার তেমন অগ্রগতি হচ্ছে না। পালু শহরের রোয়া রোয়া রিসোর্টের একটি হোটেলেই অনেক মানুষ ধ্বংসস্ত‚পের নিচে চাপা পড়ে আছে বলে জানিয়েছে উদ্ধারকারীরা।
ইন্দোনেশিয়া রেড ক্রসের মুখপাত্র আউলিয়া আরিয়ানির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, পালুর দক্ষিণাঞ্চলের সিগি এলাকায় একটি গির্জায় ৩৪টি শিশুর লাশ পাওয়া গেছে। গির্জাটি কাদা ও আবর্জনায় ডুবে গিয়েছিল। তিনি বলেন, শিশুরা একটি ‘বাইবেল ক্যাম্পে’ ছিল।
ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ প্রশমন সংস্থা বিবিসি’কে নিশ্চিত করেছে যে, সুলাবেসিতে সুনামি আঘাত হানার আগে তাদের সুনামি শনাক্তকরণ যন্ত্রগুলোর কোনওটাই কাজ করছিল না। সংস্থার মুখপাত্র সুপুতো পুরবো নুগরোহো বলেন, ২১টি ভাসমান শনাক্তকরণ যন্ত্র নষ্ট করে ফেলা হয়েছে নয়তো চুরি করা হয়েছে। এসব যন্ত্রের সঙ্গে গভীর সমুদ্রের সেন্সরের সংযোগ ছিল। তারপরও একটি সুনামি সতর্কতা পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু একে তেমন পাত্তা দেওয়া হয়নি। আর ঢেউয়ের মাত্রা সম্পর্কেও সেখানে সঠিক তথ্য ছিল না। এছাড়া লোডশেডিংয়ের কারণে অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় বাসিন্দারা ওই সতর্কতা শুনতে পায়নি। এমনকি উপক‚লীয় এলাকায় কোনও সাইরেনও বাজানো হয়নি। সুপুতো পুরবো নুগরোহো বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা সীমিত, ভারী যন্ত্রপাতিও সীমিত। যে পরিমাণ ভবন ধসে গেছে তার জন্য এই যন্ত্রপাতি যথেষ্ট নয়।
ক্যাথোলিক রিলিফ সার্ভিসের ইয়েননি সুরিয়ানি বলেন, আক্রান্ত এলাকাগুলোতে সাহায্য সংস্থাকে পৌঁছাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কারণ পালুর প্রধান বিমানবন্দর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, স্থলপথের সড়কগুলোর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে আর সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই বললেই চলে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই খাবার, পানি ও জ্বালানির জন্য বিভিন্ন দোকানে লুটপাট চালাচ্ছে। তারা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, খাবার ফুরিয়ে যাওয়ায় তারা এমন কাজ করছেন। রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, সাহায্য সংস্থাগুলোর ত্রাণ যাতে চুরি হয়ে না যায় সেজন্য তা পুলিশ পাহারায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, ভুমিকম্পের আঘাতের পর ওই এলাকা থেকে কমপক্ষে ১২০০ আসামি পালিয়ে গেছে।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন করে আটকে পড়াদের উদ্ধারে দিন-রাত কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। সুনামি আক্রান্ত পালু শহরের পাশের একটি পাহাড়ের ওপর একটি গণকবর খোঁড়া হয়েছে। সেখানে সব মিলিয়ে ১৩০০ মানুষকে কবর দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। স্বেচ্ছাসেবীরা কবর খোঁড়ার পাশাপাশি লাশ কবরও দিচ্ছেন। সেখানে বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রাকে করে কমলা, হলুদ বা কালো ব্যাগে মোড়ানো লাশ নিয়ে আসা হচ্ছে। তারপর সেগুলো কবরের মধ্যে নামিয়ে মেশিন দিয়ে মাটি চাপা দেওয়া হচ্ছে। তবে অনেকেই এখনও নিখোঁজ প্রিয়জনদের খুঁজে বেড়াচ্ছেন।
আদি নামের একজন এএফপি’কে জানান, সুনামি আঘাত হানার সময় তিনি তার স্ত্রীকে পালু সৈকতে জড়িয়ে ধরে ছিলেন। তবে তারপর থেকে তিনি তার স্ত্রীকে খুঁজে পাননি। তিনি বলেন, ‘ঢেউ আসলে আমি তাকে হারিয়ে ফেলি। ঢেউ আমাকে প্রায় ৫০ মিটার দূরে ফেলে দেয়। আমি কিছুই ধরে রাখতে পারিনি।’ সূত্র: বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।